ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাজনৈতিক হয়রানি বিবেচনায় প্রত্যাহারের শেষ বৈঠকে মামলা উঠছে ১৪৮১

আনোয়ারুল করিম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১১
রাজনৈতিক হয়রানি বিবেচনায় প্রত্যাহারের শেষ বৈঠকে মামলা উঠছে ১৪৮১

ঢাকা: রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার-সংক্রান্ত কমিটি’র শেষ (২৫তম) বৈঠকে ১ হাজার ৪৮১টি মামলা প্রত্যাহারের তালিকায় তোলা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মঙ্গলবার সকাল দশটায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।



কমিটির সভাপতি আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সোমবার বাংলানিউজকে বলেন, ‘মঙ্গলবারের বৈঠকটিই এ কমিটির শেষ বৈঠক হওয়ার কথা। তবে এতোগুলো মামলা যদি পর্যালোচনা করা একদিনে সম্ভব না হয়, তবে অন্য একদিন বৈঠক করতে পারি। তবে চেষ্টা করবো একদিনেই শেষ করতে। ’

প্রসঙ্গত, ঢাকা মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ‘রাজনৈতিক বিবেচনায়’ মামলা প্রত্যাহারের আবেদনগুলোর মধ্য থেকে বাছাই করে এসব মামলা প্রত্যাহারের তালিকায় তোলা হয়।

মঙ্গলবার অনুষ্ঠেয় বৈঠকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু ছাড়াও স্বরাষ্ট্র সচিব, সরকারের আইন কর্মকর্তারাসহ আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।  

রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা বিবেচনায় গত ২৮ ডিসেম্বর কমিটির ২৪তম সভা পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দণ্ডবিধি ও দুদকের মিলিয়ে ১০ হাজার ২৯৩টি মামলা প্রত্যাহারের জন্য উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে ৬ হাজার ৬৫৫টি মামলা প্রত্যাহারের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলা রয়েছে ৩১৪টি।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি সরকার গঠনের পর ফেব্রুয়ারি মাসে মামলা প্রত্যাহারের এই কমিটি গঠন করে। পরবর্তী বছরের ১০ জানুয়ারি এই কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, মঙ্গলবারের ২৫তম বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য নথিভুক্ত করা ১ হাজার ৪৮১টি মামলাই দণ্ডবিধির মামলা। দুদকের কোনো মামলা নেই। দুদকের মামলা বিবেচনা ২৪তম বৈঠকেই শেষ হয়েছে।  

আইন প্রতিমন্ত্রী সোমবার বাংলানিউজকে বলেন, ‘রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার সংক্রান্ত কমিটির কাছে দুদকের কোনো মামলা নেই। গত দুই বছরে দুদকের ৫১৮টি মামলা প্রত্যাহারের জন্য বৈঠকে তোলা হলেও এর মধ্যে ৩১৪টি প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। বাকি ২০৪টি সুপারিশ বাতিল করা হয়েছে। ’

দুদকের কাছে মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ পাঠালেও দুদক এখনো মামলাগুলো প্রত্যাহার করেনি বলে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আইন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটা দুদকের ব্যাপার। আমরা মনে করেছি, ওই মামলাগুলো রাজনৈতিক বিবেচনায় দায়ের করে হয়রানি করা হয়েছে। ’  

সূত্র জানায়, ২৫তম বৈঠকের উত্থাপনের জন্য প্রস্তুত করা দণ্ডবিধির মামলাগুলোর বেশিরভাগেরই প্রত্যাহারের জন্য জেলা কমিটির পক্ষ থেকে কোনো সুপারিশ নেই।

এ প্রসঙ্গে আইন মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, ফৌজদারি কার্যবিধি (১৮৯৮) এর ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী সরকারের সুপারিশ করা যে কোনো মামলার বিচারিক কাজ প্রত্যাহারের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করা যায়। তবে দণ্ডবিধি (সিআর) বা ব্যক্তির দায়ের করা কোনো মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করার এখতিয়ার সরকারের নেই।  

আবার দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলাও প্রত্যাহারের ক্ষমতা সরকারের নেই। এটিও কমিশনের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা। ১৯৫৮ সালের সংশোধিত ফৌজদারি কার্যবিধির ১০(৪) ধারাতেই দুদককে এ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

এসব ব্যাপারে আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘জামায়াত প্রভাবিত বিগত বিএনপির জোট সরকারের আমলে পাঁচ বছরে ওই দল দু’টির নেতাকর্মীরা তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের হয়রানি করার জন্য অনেকেই ব্যক্তিগত মামলা করেন। এ মামলাগুলো অবশ্যই রাজনৈতিক হয়রানির মামলা। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।