ঢাকা: দেশে ক্রসফায়ার বা বিচারবহিভূর্ত হত্যাকান্ড বন্ধ হয়নি। ববং এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নতুন প্রবণতা গুম বা মানুষকে নিখোঁজ করার প্রবণতা।
২০১০ সালে ১২৭ জন বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন। প্রতি তিন দিনে গড়ে ১ জন বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। প্রতি দুই দিনে ১ জন নিহত হয়েছেন গণপিটুনিতে।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ২০১০ সালে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তৈরি প্রতিবেদনে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার এইসব তথ্য তুলে ধরেছে।
বিচার বহির্ভূত হত্যা: প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালে বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার ১২৭ জনের ১০১ জনকে ক্রসফায়ারে, ২২ জনকে নির্যাতন করে এবং ২ জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এদের ৬৮জন র্যাবের হাতে, ৪৩ জন পুলিশের হাতে এবং ৯ জন নিহত হয়েছেন র্যাব-পুলিশের যৌথ অভিযানে ।
গুম: ক্রসফায়ারের পাশাপাশি যোগ হয়েছে গুম বা নিখোঁজ করে দেওয়ার এক নতুন প্রবণতা । এটা উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছে অধিকার। সংগঠনটির তথ্য মতে, ২০১০ সালে ১৬ ব্যক্তিকে গুম করা হয়েছে। এরা সবাই গুম হয়েছেন আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে । গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবার এমন দাবি করেছে। ২০০৯ সালে গুম করা হয়েছিল ২ ব্যক্তিকে।
জেল হেফাজতে মৃত্যু: ২০১০ সালে আইন প্রয়োগকারি সংস্থার হাতে ১১০ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৬ ব্যক্তি ক্রসফায়ারে, ২২ জন নির্যাতনে, ১ জন গুলিতে মারা গেছেন। এছাড়া ৬০ জন অসুস্থতাজনিত কারণে, ২জন আদালতে, ২ জন থানায় ও ১জন র্যাব হেফাজতে মারা গেছেন। ১৫ জন বিডিআর সদস্য মারা গেছেন জেল হেফাজতে।
গণপিটুনি: সারা দেশে ২০১০ সালে গণপিটুনির শিকার হয়ে মারা গেছেন ১৭৪ জন। সে হিসেবে গড়ে প্রতি দুই দিনে ১ জন গণপিটুনির শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। অধিকারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই নাজুক হয়ে ওঠায় জনগণের মধ্যে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।
রাজনৈতিক সহিংসতা: অধিকারের প্রতিবেদন মতে, ২০১০ সালে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে সহিংসতার মাত্রা ছিলো ব্যাপক। এবছর রাজনৈতিক সহিসংতায় ২২০ জন নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন ১৩,৯৯৯ জন।
বিএসএফ’র হাতে হত্যা: ২০১০ সালে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অব্যাহত থেকেছে। এসময় ৭৪ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিএসএফ। এদের ২৪ জনকে নির্যাতন করে, ৫০ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
অধিকারের প্রতিবেদনে বলছে, বিএসএফ কর্তৃক হত্যা বন্ধে বাংলাদেশ সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে তা সন্তোষক জনক নয়। ফলে উদ্বেগ বাড়ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, ৮ জানুয়ারি, ২০১১।