ঢাকা: বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের মূল হোতা প্রতিষ্ঠানের সহকারী হিসাব কর্মকর্তা আবদুস সালাম খানকে আটক করেছে র্যাব-১ এর একটি দল।
র্যাব-১ (অপস) কর্মকর্তা মো. আব্দুল বাতেন বাংলানিউজকে জানান, বিআইডব্লিউটিএর কোটি টাকা আত্মসাতকারী আব্দুল সালম খানকে র্যাব-১ এর একটি দল শুক্রবার রাতে তোপখানা রোডে তালাবদ্ধ একটি অফিসকক্ষ থেকে আটক করেছে।
এ ব্যাপারে র্যাব-১ কার্যালয়ে শনিাবর দুপুর সাড়ে ১২টায় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মো. সোহায়েল।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত বছর ডিসেম্বর মাসে বিআইডব্লিউটিএর ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মতিঝিল থানায় একটি প্রতারণা মামলা করা হয়। পরবর্তীতে মামলাটি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) স্থানান্তর করা হয়।
কমান্ডার সোহায়েল বলেন, এ ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য দুদক কর্তৃপক্ষ র্যাবের কাছে সহযোগিতা চায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে র্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইং টাকা আত্মসাৎকারীদের আটকের উদ্দেশ্যে মাঠে নামে।
এরই ধারাবাহিকতায় ইন্টেলিজেন্স উইং এর একটি বিশেষ দল র্যাব-১, র্যাব-৩ এবং দুদক’র সহায়তায় শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে রমনা থানাধীন তোপখানা রোড এলাকায় সালামের নিজস¦ অফিসে তালাবদ্ধ একটি কক্ষ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমএ সালাম স্বীকার করেছেন তিনি বিআইডব্লিউটিএ’র টাকা আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত।
কামান্ডার সোহায়েল জানান, বিআইডব্লিউটিএ এবং দুদকের সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে জানা গেছে যে, আসামি সালাম আত্মসাৎ করা টাকায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে এবং সম্পদ ক্রয় করেন। এছাড়া দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে তার বিপুল পরিমান টাকা জমা রয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী বর্তমানে তার সম্পদগুলোর মধ্যে রয়েছে, ৩৪ তোপখানা রোডে ‘এয়ার পাস ট্রাভেলস’ নামে একটি ট্রাভেল এজেন্সি, গুলশান-১ এ ২৫শ’ বর্গফুটের একটি ফ্যাট, খিলগাঁওয়ে ৬তলা একটি বাড়ি, উত্তরার আশুলিয়া এলাকায় ৬ কাঠা জায়গার ওপর ২০টি ঘর, সিরাজগঞ্জ জেলায় অন্তু অটো রাইস মিল নামে একটি চালের মিল, নিজ ও তার স্ত্রীর নামে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকার এফডিআর এবং নিজ নামে ২টি বিলাসবহুল গাড়ি।
উল্লেখ্য গত ২৩ ডিসেম্বর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিআইডব্লিউটিএ’র টাকা আত্মসাতের ঘটনাটি প্রকাশিত হয়। এর আগে থেকেই আব্দুল সালাম খান পলাতক ছিলেন।
এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের পাঁচ কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয় এবং আব্দুল সালাম খানের খোঁজ চেয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয়। অর্থ আত্মসাতের ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজনরা যেনো দেশত্যাগ করতে না পারেন সেজন্য ইমিগ্রেশন পুলিশকে চিঠি দেওয়া হয়। বিষয়টির তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১১