ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধে সরকার ব্যর্থ: অধিকার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১১
বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধে সরকার ব্যর্থ: অধিকার

ঢাকা: বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধে সরকার তার অঙ্গীকার রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে বলে মত দিয়েছে মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অধিকার। শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসকাবে সংগঠনটির পক্ষ থেকে উপস্থাপিত ‘মানবাধিকার প্রতিবেদন ২০১০’-এ এ কথা বলা হয়।



রিপোর্টে বলা হয় ২০০৯ সালে ‘ইউনিভার্সাল পেরিওডিক রিভিও’ এর শুনানিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. দীপু মনি বিচার বর্হিভুত হত্যাকাণ্ডে শূন্য সহনশীলতা (জিরো টলারেন্স) দেখানোর কথা বললেও সরকার এ বিষয়ে অঙ্গীকার করলেও তা রক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১০ সালে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটেছে ১২৭টি, জেল ও বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারি সংস্থার হেফাজতে মৃত্যু ১১০ জন। এরসঙ্গে নতুন প্রবণতা যোগ হয়েছে গুম। ১৬ ব্যক্তিকে ২০১০ সালে গুম করা হয়েছে। রাজনৈতিক সহিসংতায় ২২০ জন নিহত এবং ১৩ হাজার ৯৯৯ জন আহত হয়েছেন। আর নির্বাচনী সহিংসতায় ২১৮ জন আহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালে হরতালে ৩৫৫ জন আহত হয়েছে। পুলিশ গ্রেফতার করেছে ১৬৭ জনকে। এসময় ৪ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, ১১৮ জন আহত হয়েছেন এবং ৪৩ জন লাঞ্ছিত হয়েছেন। তৈরি পোশাক শিল্পে সংঘর্ষে ৭ জন নিহত, ২ হাজার ৫৩৮ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। বিএসএফ ৭৪ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে।

অধিকারের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১০ সালে ৫৫৬ জন নারী ও মেয়ে শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ১৩৭ নারী এসিড সহিংসতার শিকার হয়েছেন। গণপিটুনিতে ১৭৪ ব্যক্তি মারা গেছেন। আর ধর্মীয় ও জাতিগত বৈষম্যের শিকার হয়ে অন্তত ২ জন নিহত হয়েছেন।  

রিপোর্টে বিরোধী দলের লাগাতার সংসদ বর্জনের সংস্কৃতি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য হুমকি বলে উল্লেখ করা হয়। এতে জানানো হয়, বিরোধী দলীয় সাংসদরা ২০১০ সালে ৩৯ কার্যদিবসের মধ্যে ২১ দিন সংসদে যোগ দেন।

দুটি প্রধান দলের জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে বিশেষ করে  মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ করতে দেখা গেছে বলেও রিপোর্টে মত দেয় অধিকার।

প্রধান বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা সংসদে অনুপস্থিত থেকেও রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন, যা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য হুমকি স্বরূপ উল্লেখ করে এসব আচরণ থেকে সরকার এবং বিরোধী দল কে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানায় মানবাধিকার সংগঠনটি।

প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করেন অধিকারের মহাসচিব আদিলুর রহমান খান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন অধিকারের উপদেষ্টা ফরহাদ মজহার, প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ড. সিআর আবরার, কলামিষ্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরী, সাংসদ আফিফা আশরাফি পাপিয়া, ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমূখ।

অধিকার মোট ১৫ টি ইস্যুতে তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে। ইস্যুগুলো হচ্ছে  বিচার বর্হিভুত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন, জেল ও বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে মৃত্যু, গুম, রাজনৈতিং সহিংসতা, হরতাল, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, তৈরি পোশাক শিল্প শ্রমিকদের অবস্থা, বিএসএফ কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘন, নারীর প্রতি সহিংসতা, সংখ্যালঘুর মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণপিটুনিতে মৃত্যু ও বিডিআর সদস্যদের বিচার।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১১১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।