ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে দেশের সঠিক চিত্র উঠে আসেনি

মান্নান মারুফ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০১১

ঢাকা: জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিএনপি নেতারা। তারা মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে দেশের সঠিক চিত্র উঠে আসেনি।



তারা মনে করেন প্রধানমন্ত্রী প্রকৃত অর্থে দেশের আসল চিত্র জানেন না। তার অধস্তন কর্মকর্তারা তাকে সঠিক তথ্য দেয়নি বলে প্রধানমন্ত্রী জাতির সামনে বর্তমান চিত্রের বিপরীতমুখী বক্তব্য দিয়েছেন। তার বক্তব্য এ দেশের মানুষ প্রত্যাখান করেছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি নেতারা।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ১০ টাকা করে চাল খাওয়ানোর কথা বলে এই সরকার ক্ষমতায় এসে এখন চাল খাওয়াচ্ছে ৪৮ টাকায়। দ্রব্যমুল্যের অস্বাভাবিক দাম বাড়ায় দেশের সব শ্রেণীর মানুষ দিশেহারা।

তিনি বলেন, পত্রিকা খুললেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের মারামারি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি। প্রতিদিনই হত্যা, গুম এবং বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের উপর চলছে মিথ্যা মামলা ও জেল-জুলুম। সাধারণ মানুষ দেশের আইন-শৃংখলার অবনতির কারণে ঘর থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছেন।

তিনি বলেন, দুর্নীতির কথা টিআইবি কি বলেছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই শুনেছেন। দেশবাসীও শুনেছেন। তারপরও বিদ্যুতের ব্যাপারে বিএনপিকে না দুষে উনি ক্ষমতা গ্রহণের পর গত দুই বছরে কি করছেন এটা বললে দেশবাসি বেশি খুশি হতেন।

তিনি বলেন, প্রধান মন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন এ বক্তব্য দেশের মানুষ গ্রহণ করেনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সরকার দুই বছর পরও বিএনপিকে দায়ী করেন কীভাবে। বিএনপি ক্ষমতা ছাড়ার আগে ১২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ করেছে। আরো ১শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সংযোগ করার পথে ছিল। যা প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করছেন।

তিনি বলেন, দুই বছরে ব্যর্থতা স্বীকার করে ওনারা কি করছেন তা  জনগণকে জানালে দেশবাসি খুশি হতো।

আইন-শৃংখলা ও দ্রব্যমুল্যের উর্ধ্বগতির ব্যাপারে প্রধান মন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যে দেশবাসী হতাশ হয়েছেন বলে তিনি বলেন, “ঔষধের দাম ৪০% বাড়ছে। বিদ্যুতের দাম আর একদাপ বাড়ানো হচ্ছে। ”
তিনি বলেন, প্রধান মন্ত্রীর এ বক্তব্য মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। তিনি দেশের জনগণের কাছে সঠিক অবস্থা তুলে না ধরার তার অধীনস্ত কর্মকর্তাদের দায়ি করেছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল মাহবুব বাংলানিউজকে বলেন, দ্রব্যমুল্যের উর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতিতে হত্যা, গুম, অপহরন এখন নিত্যদিনের ঘটনা। মানুষ সকালে ঘর থেকে বের হলে সন্ধ্যায় ঘরে ফিরতে পারবে কিনা তার নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলানিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য মিথ্যাচারে ভরপুর। দেশের আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সমস্যায় শিল্প কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ক্ষমতায় আসার দুই বছরে বিদ্যুতের কোনো উন্নতি করতে পারে নি বর্তমান সরকার। বরং লুটপাট করার স্বার্থে ইনডেমনিটি আইন পাশ করে বিনা টেন্ডারে বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ করাছে সরকার।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। দেশের মানুষ এই সরকারের উপর অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে।

তিনি প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন রেখে বলেন, ১০ টাকা চাল খাওয়ানের কথা বলে ক্ষমতায় এসেছেন। এখন কত টাকা চালের দাম এটা উনি জানেন কিনা। আসলে প্রধানমন্ত্রী কষ্টে থাকা জাতির সামনে এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে জাতিকে হতাশ করেছেন।

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান বাংলানিউজকে বলেন, এই সরকার সামগ্রিক ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। সরকার প্রধানকে এই ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। কারণ গত দুই বছরের সাফল্যের যে খতিয়ান তিনি তুলে ধরেছেন তাতে মনে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক ও মানসিকভাবে পরাজিত।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আয়নার সামনে দাঁড়ালে উনার চেহারাই বলে দিবে  উনি কি ধরনের মিথ্যা তথ্য জাতির সামনে উত্থাপন করেছেন।

তিনি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের অগ্নিমূল্য, আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতির কথা উল্লেখ করে বলেন, এখন নিত্যদিনই খুন আর হত্যা উপহার দিচ্ছে। তাদের যাত্রাই শুরু হয়েছে পিলখানার হত্যাকা- দিয়ে।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ