ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রক্ত দিয়ে হলেও আড়িয়াল বিলে বিমানবন্দর নির্মাণ করা হবে: আবদুল মান্নান খান

রিয়াজ রায়হান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১১
রক্ত দিয়ে হলেও আড়িয়াল বিলে বিমানবন্দর নির্মাণ করা হবে: আবদুল মান্নান খান

মুন্সীগঞ্জ থেকে: গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান বলেছেন, বুকের রক্ত দিয়ে হলেও আড়িয়াল বিলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর তৈরি করা হবে। এ বিমানবন্দরের মাধ্যমে এ এলাকার মাটিকে পরিণত করা হবে হীরকখণ্ডে।



মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে বিমানবন্দর নির্মাণের পক্ষে আয়োজিত মানববন্ধন শেষে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের চৌরাস্তায় এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। শ্রীনগর উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এ এলাকার একজন মানুষ জীবিত থাকতেও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণকাজে কেউ বাধা দিতে পারবে না। ’

তিনি বলেন, ‘এখানকার ৯৯ ভাগ মানুষ বিমানবন্দর নির্মাণের পক্ষে থাকলেও একটি স্বার্থান্বেষী মহল পরিকল্পিতভাবে এ বিমানবন্দর নির্মাণের বিরোধিতা করছে। যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন চায় না, বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চায় তারাই এ বিমানবন্দর নির্মাণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ’

আবদুল মান্নান খান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী রাজাকার-আলবদর ও এদের সহযোগিতাকারী বিএনপি আড়িয়াল বিলে কুণ্ড রাজার হাজার হাজার একর সম্পত্তি কাগজপত্র ছাড়া অবৈধভাবে দীর্ঘদিন থেকে ভোগ দখল করে আসছে। এখন সেই সম্পত্তি হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে এ মহলটি বিমানবন্দর নির্মাণে বিরোধিতা করছে। ’

প্রতিমন্ত্রী প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, ‘কিন্তু জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এ আড়িয়াল বিলেই নির্মিত হবে। ’

এ এলাকায় বিমানবন্দর নির্মাণের সুবিধাসমূহ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখানে বিমানবন্দর হলে গ্যাস বিদ্যুতের সুবিধা বাড়বে। বিমানবন্দরের পাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্যাটেলাইট সিটি গড়ে তোলা হবে। শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। আইটি ভিলেজ প্রতিষ্ঠা করা হবে, হবে পর্যটন কেন্দ্র। এগুলোর মাধ্যমে এ বিমানবন্দকে ঘিরে দেশের উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু হবে আড়িয়াল বিল। ’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে বিমানবন্দরের জন্য জমি নির্ধারণের কাজ শেষ পর্যায়ে। যতো দ্রুত সম্ভব এর নির্মাণকাজ শুরু করা হবে। ’

মানববন্ধন ও সমাবেশে জাতীয় সংসদের হুইপ সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য সুকুমার রঞ্জন ঘোষণ, সিরাজদিখান উপজেলা চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদসহ আওয়ালীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের দুপাশে প্রায় ১৫ কিলোমিটার জুড়ে হাজার হাজার মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেয়।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্থাপন সংক্রান্ত বিশষেজ্ঞ কমিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তাদের প্রতিবদেন উপস্থাপন করে। সে অনুযায়ী আড়িয়াল বিলে বিমানবন্দর ও সিটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

মানববন্ধনে হাজারো মানুষ

আড়িয়াল বিলে বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দর নির্মাণের  দাবীতে মঙ্গলবার ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে মানববন্ধন ও র‌্যালিতে যোগ দেয় হাজারো মানুষ। শ্রীনগরের পুরনো ফেরিঘাট থেকে কুচিয়ামোড়া পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিশাল এই কর্মসূচি পালিত হয়। এতে এই অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধা,নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও এলাকার হাজার হাজার নারী পুরুষ অংশ নেয়। বিমান বন্দরের পে বিভিন্ন স্লোগান লেখা ব্যাসার ফেস্টুন ও প্যাকার্ড শোভা পায় এতে।

গণপূর্তমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খান ছাড়াও জাতীয় সংসদের হুইপ অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, সুকুমার রঞ্জন ঘোষ এমপি এতে অংশ নেন।

সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর এক টা পর্যন্ত চলে এই কর্মসূচী।
 
মানববন্ধণে ‘এয়ারপোর্ট বিক্রমপুরের আর্শিবাদ’, ‘বিক্রমপুরবাসী একজোট আড়িয়ালবিলে এয়ারপোর্ট’, ‘বিক্রমপুরবাসীর প্রাণের দাবী আয়িয়াল বিলে বঙ্গবন্ধু বিমান বন্দর চাই’, ‘এয়ারপোর্ট চাই. এয়ার পোর্ট চাই’, ‘আড়িয়াল বিলে বিমান বন্দর করার সিদ্ধান্ত নেয়ায় শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ’ এমন নানা স্লোগান লেখা ফেস্টুন শোভা পায়।
 
আড়িয়াল বিলের ২৫ হাজার একর জমিতে একবিংশ শতাব্দীর আধুনিক বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এতে একটি পক্ষ এর বিপে অবস্থান নিয়ে বিগত কয়েক দিন বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছিল।

“ এই কর্মসূচীতে এই অঞ্চলের ব্যাপক জনগোষ্ঠীর স্বঃতস্ফূর্ত অংশ গ্রহন বিমানবন্দরের পক্ষেই যে এই অঞ্চলের মানুষ সেটিই প্রমান হয়েছে। ”এমন উক্তি করে অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি এমপি বলেন এখানে এই বিমান বন্দর হচ্ছে এটি এই অঞ্চলের মানুষের সৌভাগ্য। বিমানবন্দরকে কেন্দ্র করে এখানে নদী, সড়ক, রেল ও আকাশ পথে  আধুনিক যোগাযোগের এক নতুন দ্বার উন্মোচন হবে বলেও মত দেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।