ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

দেশের অর্থনীতির ৫০ ভাগই ব্ল্যাক মানি- দুদক চেয়ারম্যান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১০
দেশের অর্থনীতির ৫০ ভাগই ব্ল্যাক মানি- দুদক চেয়ারম্যান

ঢাকা: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেছেন, দেশের অর্থনীতির শতকরা ৫০ ভাগই ব্ল্যাক মানি।

বৃহস্পতিবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশলাশের দুর্নীতি বিষয়ক জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।



দুদক চেয়ারম্যান বলেন, টিআইবি সেবাখাতের দুর্নীতির যে চিত্র তুলে ধরেছে তা দেশের সার্বিক চিত্র নয়। এটি দুর্নীতির আংশিক মাত্র। দুর্নীতির ব্যাপকতা এর চেয়েও অনেক বেশি।

তিনি বলেন, ‘টিআইবি’র জরিপে সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ঘটেছে। সার্বিক চিত্র দেখতে হলে উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি দেখতে হবে। ’

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিস মিলনায়তনে টিআইবি-র ‘সেবা খাতে দুর্নীতি: খানা জরিপ-২০১০’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন গোলাম রহমান।

দুদক অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে স্বাধীন ভাবে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুদকের কাজ কর্ম অতীতের মতো জন সম্মুখে প্রকাশ না পেলেও দুদক কাজ করে যাচ্ছে।
 
দুদক স্বাধীনভাবে কাজ করছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি রয়েছে। তারা অনেক মামলা প্রত্যাহারের জন্য দুদকের কাছে অনুরোধ করেছে। কিন্তু সুপারিশ করা একটি মামলাও প্রত্যাহার করা হয়নি। সুপারিশ করা মামলার মধ্যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর মামলাও রয়েছে। ’

গোলাম রহমান বলেন, ‘দুদক কোন অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করে পরে ব্যবস্থা নেয়। কারো সুপারিশ বিবেচ্য নয়। ’

দুদকের মামলার পরিসংখ্যান তুলে ধরে চেয়ারম্যান বলেন, দুদক মোট প্রায় ১৪০০টি মামলার অভযোগ পত্র দিয়েছে। তার মধ্যে বিচার হয়েছে ৩০২ টি মামলার। এর ২২০ টি মামলায় সাজা হয়েছে। আর বাকী মামলাগুলোর অভিযুক্তরা খালাস পেয়ে গেছেন।

তবে আইনী সীমাবদ্ধতা ও বিচার প্রক্রিয়ার জটিলতার কারণে শেষ পর্যন্ত সব অভিযুক্তরাই রেহাই পেয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে আইনী জটিলতা এবং বিচার বিভাগের দীর্ঘসূত্রীতা দূর করতে হবে। প্রতি বছর যদি মোট ১০০ দুর্নীতির মামলাও সাজা নিশ্চিত করা যায় তাহলে আগামী ৫ বছরে দুর্নীতি অর্ধেকে নেমে আসবে। আর বিচার প্রক্রিয়া যদি অভিযোগের দুই বছরের মধ্যে শেষ করা যায় তবেও ১৫ থেকে ২০ শতাংশ দুর্নীতি আগামী ৫ বছরে কমবে। ’

তিনি বলেন, নিয়োগ, পদোন্নতি এবং বদলিতে ঘুষের আদান প্রদান বন্ধ করতে না পারলে দুর্নীতি রোধের চেষ্টা অরেণ্যে রোদন এর মতো হবে।

টিআইবি-র তুলে ধরা চিত্র থেকে সবাইকে শিক্ষা নেয়া উচিত উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগ ২০০৭ সালে স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ এখানে এসে দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন। তারা বলছেন, বিচার বিভাগ সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি গ্রস্থ। এটা থেকে বিচার বিভাগকে শোধরানো উচিত। ’

কয়েকজন প্রাক্তন বিচারপতির সম্পদের হিসাব চাওয়া হয়েছিল। কারো কারো ক্ষেত্রে অভিযোগ এর প্রমাণও দুদক খুজে পেয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিআইবি-র চেয়ারম্যান এম হাফিজউদ্দিন খান, নিবার্হী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রমুখ।    

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১০।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।