ঢাকা: মহাজোটগত পৌরসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে শেষ মুহূর্তে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির সমঝোতা হয়েছে। মহাজোটগত একক প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অংশ হিসেবে ১৯টি পৌরসভায় জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত দীর্ঘ বৈঠকে এ সমঝোতা হয়েছে বলে সূত্র জানায়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই ১৯টি আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন।
জানা গেছে, সোমবার বিকেলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠকে বসে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠকের পর এ সমঝোতা হয়।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহর বনানীর বাসায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে কাজী জাফরুল্লাহ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. আলাউদ্দিন আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আহমেদ হোসেন, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে, রুহুল আমিন হাওলাদার ছাড়াও জাতীয় পার্টির পে ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন, আতিকুর রহমান।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে সমঝোতার কথা স্বীকার করে রুহুল আমিন হাওলাদার বাংলানিউজকে বলেন, ‘মহাজোটগত নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ ১৯টি পৌরসভা থেকে তাদের প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতে সম্মত হয়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি আরও ৬টি পৌরসভা। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে তারা আমাদের জানাবেন বলে জানিয়েছে। ’
এদিকে, সমঝোতার কথা স্বীকার করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলানিউজকে বলেন, ‘জাতীয় পার্টির সঙ্গে মহাজোটগত নির্বাচনের সমঝোতা হয়েছে। ’ তবে কয়টিতে হয়েছে সেটা তিনি বলতে চাননি।
তবে তিনি বলেন, ‘যেসব পৌরসভায় তাদের (জাতীয় পার্টি) প্রার্থী বিজয়ী হয়ে আসতে পারবেন এরকম জায়গায়ই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ’
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে পাওয়া জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া ১৯ পৌরসভার প্রার্থী তালিকা হলো বাকেরগঞ্জ-মিজানুর রহমান, মুলাদী-শুক্কুর আলী মিয়া, রানীশংকৈল-মোহাম্মদ তোহা, বদরগঞ্জ-আসাদুজ্জামান, জলঢাকা-ইলিয়াস হোসেন বাবলু, কুড়িগ্রাম সদর-মজিদুল আলম, নাগেশ^রী-আব্দুর রহমান, সুন্দরগঞ্জ-আব্দুল মজিদ মণ্ডল, উলিপুর গোলাম মোস্তফা, গাবতলী-গোলাম রব্বানী বেলাল, তারাবো-মতিউর রহমান মতি, সিংগাইর-মোঃ শাহজাহান মীর, মুন্সিগঞ্জ সদর-অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান, মাধবদী-মোঃ শফিকউদ্দিন/বেগম শফিক উদ্দিন, চালনা- আব্দুল হামিদ, সাতীরা-আজহার আলী, সুনামগঞ্জ-সালেহা বেগম, পটিয়া-শামসুল আলম ও জকিগঞ্জ-আব্দুল খালেক।
এদিকে, জাসদের সঙ্গেও সমঝোতা হয়েছে বলে জানান আফম বাহাউদ্দিন নাছিম। অবশ্য জাসদকে কয়টি পৌরসবা ছেড়ে দেওয়া হবে সে ব্যাপারে তিনি কিছু জানাননি।
তবে আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, জাসদকে ২টি পৌর সভা ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।
বাহাউদ্দিন নাছিম আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গেও আলোচনা চলছে।
এ সম্পর্কে জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরিফ নুরুল আম্বিয়ার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে ৪টি পৌরসভার কথা বলেছি। এগুলো হলো নন্দীগ্রাম-মাহাবুবার রহমান, গাইবান্ধা-শরিফুল ইসলাম বাবলু, বেলকুচি-খালিদ মাহমুদ প্রিন্স, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-মনিরুজ্জামান মনির। ’
ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিকের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়নি। ’
বাংলাদেশ সময়: ২২৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১০