ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সাভারে হা-মীম গ্রুপে ২ দিনের ছুটি ঘোষণা

জাহিদুর রহমান,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১০
সাভারে হা-মীম গ্রুপে ২ দিনের ছুটি ঘোষণা

সাভার: সাভারের আশুলিয়ায় অগ্নিকাণ্ডে হা-মীম গ্রুপের ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাটিতে বুধবার ২ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কারখানাটির মালিক ও এফবিসিসিআই সভাপতি এ কে আজাদ অগ্নিকাণ্ডে আহতদের দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে এলে ঘোষণা দেন যে, কারখানাটি খোলা থাকবে।



ঘোষণা অনুযায়ী, কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক বুধবার সকালে কাজে যোগদান করতে আসেন। তবে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কারণে কাজের অনুকূল পরিবেশ না-থাকায় কারখানায় দুদিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়।

এ বিষয়ে কারখানাটির পরিচালক দেলোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায়  বুধবার বাদ আছর মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। ’

তিনি বলেন, ‘কারখানায় ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে গতরাতে ২টি লাশ উদ্ধারের পর নতুন আর কোনো লাশ পাওয়া যায়নি। ’

তিনি আরো বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে হতাহতের সংখ্যা বিভিন্ন রকমভাবে এসেছে। হতাহতের সংখ্যা যাই-ই হোক না কেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ এবং বিজিএমইএ-এর প্রতিশ্রুত ক্ষতিপূরণ তারা সবাই পাবেন। ’

পরিচালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘কারখানা কর্তৃপক্ষ এবং বিজিএমইএ নিহতদের প্রত্যেকের জন্য পৃথকভাবে ১ লাখ টাকা ও আহতদের জন্য প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ’

অপরদিকে, দমকলের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নায়েম শহিদুল্লাহ বাংলানিউজকে জানান, ‘উদ্ধার অভিযান সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। গতরাত ১০টার পর ২টি মরদেহ উদ্ধারের পর আর কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি। ’

এ বিষয়ে কারখানাটির পরিচালক (অপারেশন) সুনীল কুমার সরকার বাংলানিউজকে জানান, ‘অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনা ছাড়াও কারখানার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের চেষ্টা চলছে। ’

এদিকে, ঢাকা ফায়ার স্টেশনের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান লিটন বাংলানিউজকে জানান, ‘অগ্নিকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ’

তিনি বলেন, ‘দমকল বাহিনীর পক্ষ থেকেও কারণ নির্ণয়ের চেষ্টা করা হচ্ছে এবং সরকারের কাছে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

এদিকে, তৈরি পোশাক প্র¯ত্তত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)-এর সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেছেন, ‘দুর্ঘটনায় ঠিক কতজন নিহত হয়েছেন, তার সঠিক পরিসংখ্যান আমাদের হাতে নেই। তবে বিজিএমইএ থেকে এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। ’

এ প্রসঙ্গে সাভার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রাব্বী মিয়া জানান, ‘সরকার গঠিত তদন্ত কমিটি বুধবার থেকে কাজ শুরু করবে। কমিটির প্রধান স্বরাষ্ট্র  মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইকবাল খান চৌধুরীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের এ কমিটিতে দমকল বাহিনী, শ্রম মন্ত্রণালয়, বিজিএমইএ ও পুলিশের একজন প্রতিনিধি থাকবেন। ’

অন্যদিকে, কাজে যোগ দিতে কারখানায় আসা কয়েক হাজার শ্রমিক সমবেত হয়ে দুর্ঘটনার পেছনে কর্তৃপরে গাফলতির অভিযোগ এনে কারখানার সামনে বিােভ করেন। গণমাধ্যমে নিহতদের প্রকৃত সংখ্যা তুলে ধরা হয়নি অভিযোগ করে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন তারা। শ্রমিকদের পাশাপাশি সকাল থেকেই কারখানার সামনে জড়ো হন নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনেরা। তাদের ধারণা, ভেতরে আরও লাশ আছে। লাশ উদ্ধারের দাবিতে এ সময় স্লোগান দেন তারা। ।

উদ্ধার-পরবর্তী বিষয় পর্যবেণের জন্য সেনা ও দমকল বাহিনীর একটি অংশ এখনো অবস্থান করছে ঘটনাস্থলে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।