ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বিডিআর বিদ্রোহ: ‘আদালতে দুই সাক্ষীর সঙ্গে আসামিদের ঝগড়া’

মহিউদ্দীন জুয়েল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১০
বিডিআর বিদ্রোহ: ‘আদালতে দুই সাক্ষীর সঙ্গে আসামিদের ঝগড়া’

ঢাকা: ‘আপনারা থামুন। ঝগড়া করবেন না।

এটা ঝগড়া করার জায়গা নয়’- কথাগুলো বলেই আসামি আর সাক্ষীকে শান্ত করার চেষ্টা করলেন বিশেষ আদালতের সভাপতি কর্নেল হাবিবুল করিম। তবে তার এ চেষ্টা তাদের শান্ত করতে পারেনি।

মঙ্গলবার পিলখানা দরবার হলে বিডিআর বিদ্রোহের বিচার চলাকালে দুইজন সাক্ষীর সঙ্গে রেকর্ড উইং শাখার আসামিদের এভাবেই তুমুল হট্টগোলে মেতে ওঠার ঘটনা ঘটে।  

আসামিদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত হন সাক্ষী নায়েক সহকারী মো. হাবিবুর রহমান ও নজরুল ইসলাম খান।

আদালতে তারা আসামিদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কখনো হন বিব্রত, কখনো উত্তেজিত। একপর্যায়ে তারা ঝগড়ায় লিপ্ত হন। তাদের এই ঝগড়া বিবাদ থামাতে আদালতের সভাপতি হস্তক্ষেপ করেও ব্যর্থ হন।

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রেকর্ড উইং শাখার ১১১ জন সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে একাত্মতা ঘোষণা করা, সশস্ত্র অবস্থায় বিদ্রোহ সংঘটন, বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণে কোনো ভূমিকা না রাখা, মুখে কাপড় বেঁধে বিদ্রোহে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

বর্তমানে বিশেষ আদালত-৯ এ এসব আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। আসামিরাও সাক্ষীদের জেরা করার সুযোগ পাচ্ছেন।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে এগারোটায় আদালতে স্বাক্ষ্য দিতে আসেন নায়েক সহকারী মো. হাবিবুর রহমান। তিনি সাক্ষ্য দেওয়ার পর তাকে সিপাহী গোলাম মোস্তফা জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি আমাকে ঘটনার দিন কোন অবস্থায় দেখেছিলেন?’

এ প্রশ্নের জবাবে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ কোন অবস্থায় দেখেছিলাম খুব বেশি মনে নেই। তবে আপনি দরবার হল ত্যাগ করেছিলেন। এটুকু মনে আছে। ’ এরপর আসামি বললেন, ‘শুধু একটু দেখার মাধ্যমে আপনি কিভাবে নিশ্চিত হলেন আমি ঘটনার সঙ্গে জড়িত?। ’  

অপর আসামি সিপাহী মো. মিজানুর রহমান নায়েক সহকারী হাবিবুর রহমানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ঘটনার দিন আপনি কাছের লোককে চিনলেন না। দূরের লোকজনকে কিভাবে চিনলেন?’

আসামি সোলাইমান উদ্দিন ও নায়েক সহকারী সোহেল রানা আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, এই সাক্ষীর সঙ্গে আমাদের কখনো পূর্ব পরিচয় ঘটেনি। আমরা নিদোর্ষ। নিজে বাঁচতে তিনি মিথ্যা কথা বলছেন। ’

বেলা সোয়া ১২ টায় আদালতে সাক্ষ্য দিতে হাজির হন নায়েক নজরুল ইসলাম খান। তাকে জেরা করার একপর্যায়ে আসামি নায়েক সহকারী মোজ্জাম্মেল হক বলেন, ‘মাননীয় আদালত, এই লোক আমাকে পথে বসানোর জন্য সাক্ষ্য দিচ্ছে। ’

অপর আসামি সিপাহী সহকারী মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ তাকে বলেন,‘আপনি তো মুখস্থ কথা বলছেন। সব আসামিকেই আপনি একই কথা বলছেন। সবাই তো অপরাধী না। ’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দুই সাক্ষী হাবিবুর রহমান ও নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালতে আমরা যা বলেছি সবই সত্যি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ঘটনার সঙ্গে জড়িত যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। পর্যায়ক্রমে এগুলো সবই উপস্থাপন করা হবে। ’ তারা এর বেশি আর কিছু বলতে রাজী হননি।

অপরদিকে আসামিদের সঙ্গে এই ব্যাপারে কথা বলার কোন সুযোগ না থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad