ঢাকা: সরকারঘোষিত নতুন মজুরি কাঠামো অনুযায়ী গ্রেডিং পদ্ধতি সংশোধনের দাবিতে ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে বিনিয়োগকারী একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানসহ পাঁচটি তৈরি পোশাক কারখানার ছড়িয়ে পড়েছে শ্রমিক অসন্তোষ।
ভাংচুর ও সম্ভাব্য অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকায় একদিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন দুটি প্রতিষ্ঠানে।
তবে পুলিশ, র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়া কারখানা চারটি হচ্ছে- ডিইপিজেড এলাকার পুরনো জোনের হংকং ভিত্তিক সুইডেনের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হপলুন বিডি লিমিটেড এবং নতুন জোনের আলফা প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড, নরসিংহপুর এলাকার মেডলার অ্যাপারেলস লিমিটেড এবং জামগড়া এলাকার স্টারলিংক ক্রিয়েশন ও স্টারলিংক অ্যাপারেলস।
রোববার সকাল থেকেই এসব কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করে। প্রত্যদর্শীরা বলেছেন, ডিইপিজেডে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হপলুন বিডি লিমিটেডের চার হাজার সাত শ’ শ্রমিক কাজ বন্ধ রেখে গ্রেড সংশোধনের দাবিতে আন্দোলনে নামেন।
কর্মকর্তারা এ সময় শ্রমিকদের নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
হপলুন বিডির ব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ) আবদুল্লাহ আল আমিন খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘বেপজা কর্তৃপক্ষের দেওয়া সার্কুলার অনুযায়ী নতুন মজুরি কাঠামোর নোটিশ দেওয়ার পর বিভিন্ন ফোরে শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো নিয়ে অসন্তোষ দেখা দেয়। ’
তিনি বলেন, ‘ওই মজুরি কাঠামো অনুযায়ী হেলপারের বেতন ২১ শ’ থেকে বাড়িয়ে সাতাশ শ’, জুনিয়র অপারেটরের বেতন ২৪ শ’ ৫০ থেকে বাড়িয়ে ৩৩ শ’ ৫০, অপারেটরের বেতন ৩১ শ’ ৫০ থেকে ৪২ শ’ ৬৩, সিনিয়র অপারেটরের বেতন ৩৫ শ’ থেকে ৪৭ শ’ ২০ ও বেশি দক্ষ শ্রমিকের বেতন একধাপে ৪ হাজার ৬০ থেকে বাড়িয়ে ৭৬ শ’ করা হয়।
সকল গ্রেডেই বেতন বাড়লেও সবচাইতে কম বেতন বাড়ানো হয় সিনিয়র অপারেটর গ্রেডে। আর সেখান থেকেই সূচনা হয় ক্ষোভের।
হপলুন বিডির প্রশাসন কনসালট্যান্ট লে. কর্নেল (অব.) ওয়াহেদউজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, নতুন মজুরি কাঠামো অনুযায়ী প্রতি মাসে তাদের বাড়তি ৬০ থেকে ৬৫ লাখ টাকা বেশি ব্যয় করতে হবে। তার ওপর গ্রেড সংশোধনের দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে প্রতিদিন কোটি টাকার মতো ক্ষতি হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ডিইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আশরাফুল কবির শ্রমিকদের কর্মবিরতি ও আন্দোলনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখার জন্যে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
আশা করি স্বল্প সময়ের ব্যবধানে এ সমস্যা কেটে যাবে। ’
আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘পরিস্থিতি মোকাবেলায় পাঁচটি কারখানার সামনে শিল্পপুলিশের পাশাপাশি অতিরিক্ত র্যাব ও পুলিশ মোতায়েন আছে। পাশাপাশি পুলিশের জলকামান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ’
বাংলাদেশ সময় : ১৬৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১০