বেনাপোল: ভারতীয় জেলে আত্মহননকারী নাদিয়া সুলতানা নদী (১৮) নামের এক বাংলাদেশি তরুণীর লাশ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পেট্রাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বেনাপোলে বাংলাদেশ কর্তৃপরে কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় পুলিশ।
এ সময় নদীর আত্মীয়স্বজনদের কান্নায় গোটা চেকপোস্টে শোকবিধূর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
লাশের সঙ্গে ভারত থেকে আসা বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার এবিএম মোহিত হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ফরিদপুরের মধুখালি উপজেলার মেছরদিয়া গ্রামের নাদিয়া সুলতানা ওরফে নদী (১৮) নামের ওই তরুণী গত ২৩ নভেম্বর অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের হাবড়া থানা পুলিশের হাতে আটক হন।
আদালতের নির্দেশে পরের দিন ২৪ নভেম্বর বিকালে তাকে দমদম জেলে পাঠানো হয়। তখন তাকে উদ্দেশ্য করে কেউ কেউ নানা কটূক্তি ও অপমানসূচক মন্তব্য করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে জেলে যাওয়ার পর থেকে খুব মনমরা হয়ে পড়ে নদী। এমনকি কারও সঙ্গে কথাও বলেনি।
২৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৬টার সময় নদী বাথরুমে যাওয়ার পর অনেকণ পরেও বেরিয়ে না এলে জেলকর্মীদের খবর দেয় বন্দীরা। জেলকর্মীরা এসে দরজা ভেঙ্গে দেখেন বাথরুমের জানালার রড থেকে ওড়না ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেছে নদী।
দমদম থানা ও জেল কর্তৃপ মিলে এ ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে নদীর ভাই উজ্জ্বল স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, তিন মাস আগে কিশোরগঞ্জের শুভ নামের এক ছেলের সঙ্গে নদীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই শুভ মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল। একপর্যায়ে ২৩ নভেম্বর শুভ তাকে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে নিয়ে যায়। পরিবারের দাবি, নদীকে ভারতে পাচার করে দেওয়ার সময়ই ভারতীয় পুলিশের হাতে আটক হয় নদী। ঘটনার পর থেকে শুভ গা ঢাকা দিয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে ভারতের জেলে মেয়ের আত্মহননের খবর পেয়ে তার লাশ ফেরত আনার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির কাছে আবেদন করা হয়। সমিতি উভয় দেশের সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করে নদীর লাশ ফেরত নিয়ে আসার ব্যবস্থা করে।
বেনাপোল চেকপোস্টে সন্ধ্যা ৬টার সময় ভারতীয় পুলিশ ও বিএসএফের কাছ থেকে লাশ গ্রহণ করেন মহিলা আইনজীবি সমিতির প্রোগ্রাম অফিসার দীপ্তি বল, মধুখালি মহিলা পরিষদের সভানেত্রী সুরাইয়া সালাম, মধুখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন আহমেদসহ পরিবারের সদস্যরা।
বাংলাদদেশ সময়: ১৯২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১০