ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পৌরসভা নির্বাচন ১২ জানুয়ারি শুরু, প্রয়োজনে সেনা মোতায়েন: সিইসি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০১০
পৌরসভা নির্বাচন ১২ জানুয়ারি শুরু, প্রয়োজনে সেনা মোতায়েন: সিইসি

ঢাকা: সারাদেশে পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ১২ জানুয়ারি রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের পৌরসভাগুলোয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশের ২৬৯টি পৌরসভায় নির্বাচন শুরু করতে যাচ্ছে সরকার।



প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ড. এ টি এম শামসুল হুদা বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন সম্মেলনকক্ষে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেন। পাশাপাশি প্রয়োজন পড়লে এ নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হবে বলেও জানান তিনি।

এর আগে দুই ঘণ্টার বৈঠকে নির্বাচনী তফসিল চূড়ান্ত করা হয়। এবারে দেশের মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভাগুলোকে ৪টি অঞ্চলে ভাগ করে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। এগুলো হচ্ছে রংপুর-রাজশাহী, খুলনা- বরিশাল, চট্টগ্রাম-সিলেট ও ঢাকা। এ অঞ্চলগুলোয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ১২, ১৩, ১৭ ও ১৮ জানুয়ারি।
নির্ধারিত তারিখে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে।

রংপুর-রাজশাহী বিভাগের পৌরসভাগুলোর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৩ ডিসেম্বর, বাছাই ১৪-১৫ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৬ ডিসেম্বর।
খুলনা-বরিশাল বিভাগের পৌরসভাগুলোর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৫ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ১৮-১৯  ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৭ ডিসেম্বর।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম-সিলেট বিভাগের পৌরসভাগুলোর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৯ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ২২-২৩ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ০২ জানুয়ারি।

একইভাবে ঢাকা বিভাগের পৌরসভাগুলোর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৮ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের তারিখ ২০-২১ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ০১ জানুয়ারি।

উল্লেখ্য, এবারে একজন মেয়র পদপ্রার্থী সর্বনিম্ন দুই লাখ থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন। কাউন্সিলররা ৫০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে পারবেন।

তফসিল ঘোষণার সময় সিইসি বলেন, পৌরসভা নির্বাচনে প্রয়োজন পড়লে সশস্ত্র বাহিনীকে ডাকার বিধান রয়েছে। সুতরাং সে রকম প্রয়োজন দেখা দিলে সশস্ত্র বাহিনীর সাহায্য নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। এর আগ পর্যন্ত কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার চালানো যাবে না। সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামে সংশ্লিষ্ট এলাকায় যেসব ব্যানার-পোস্টার রয়েছে সেগুলো ডিসেম্বরের ৫ তারিখের মধ্যেই নামিয়ে ফেলতে হবে। এরপরে কোনো সম্ভাব্য প্রার্থীর নামে ব্যানার বা পোস্টার দেখা গেলে এবং তার নামে মনোনয়নপত্র জমা পড়লে সেটি বাতিলের সুপারিশ করা হবে।

তিনি আরো বলেন, মনোয়নপত্র দাখিলের আগে প্রার্থীকে যে কোন তফসিলী ব্যাংকে একটি নতুন অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে, যার নম্বর, ব্যাংক ও শাখার নাম মনোনয়নপত্রে উল্লেখ করতে হবে। নির্বাচনের সমুদয়ব্যয় এই অ্যাকাউন্ট থেকে করতে হবে। নির্র্বাচনের পর নির্বাচনীব্যয়ের যে রিটার্ন জমা দিতে হবে তার সঙ্গে উক্ত অ্যাকাউন্টের ব্যাংক বিবরণীও জমা দিতে হবে।

তিনি জানান, প্রার্থীকে জামানত হিসেবে পৌরসভার ভোটারের ভিত্তিতে মেয়রকে সর্বনিম্ন ১৫ হাজার টাকা ও সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা রিটার্নিং অফিসারের অনুকূলে জমা দিতে হবে। কাউন্সিলদের জামানত-ফি পাঁচ হাজার টাকা। এ টাকা পে-অর্ডার, ব্যাংক ড্রাফট, ট্রেজারি চালান অথবা পোস্টাল অর্ডারের মাধ্যমে দেওয়া যাবে।

সিইসি বলেন, মেয়র, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও সাধারণ কাউন্সিলর -এ তিনটি পদেরই মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সাতটি তথ্য সম্বলিত হলফনামা দাখিল করতে হবে। এ হলফনামা ১৫০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে নোটারি পাবলিক বা ম্যাজিস্ট্রেটের সই সম্বলিত হতে হবে।

তিনি আরো জানান, নির্বাচনের সময় পোলিং এজেন্টদের ব্যপারে লিখিত অভিযোগ ছাড়া আর কোন অভিযোগ আমলে নেওয়া হবে না। তাই পোলিং এজেন্টদের বিরুদ্ধে যে কোন অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিতভাবে করতে হবে।
তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে বাইরে কোন ব্যালট পেপার পাওয়া গেলে সেজন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

দেশে মোট পৌরসভার সংখ্যা ৩১০টি হলেও এবার ২৬৯ টি পৌরসভায় মেয়র, দুই হাজার ৫৩৪ জন কাউন্সিলর এবং ৮৭৪ জন সংরতি মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচিত হবেন। এ পৌরসভাগুলোয় মোট ভোট কেন্দ্র তিন হাজার ৪০৫টি। মোট ভোটার সংখ্যা ৭৫ লাখ ৬০ হাজার ১০১ জন।

বাকি ৪১টি পৌরসভার মধ্যে ১৭টিতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মেয়াদ এখনো শেষ হয়নি এবং ২৪টি পৌরসভায় মামলার কারণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এর আগে ২০০৪ সালের ৫ থেকে ১০ মে সর্বশেষ সারাদেশে পৌরসভা নির্বাচন হয়েছিলো। এছাড়া ২০০৮ সালে সিটি কর্পোরশন নির্বাচনের সময় মেয়াদোত্তীর্ণ নয়টি পৌরসভায় নির্বাচন হয়।

নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার সময় সিইসি’র সঙ্গে নির্বাচন কমিশনার মোঃ ছহুল হোসাইন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, কমিশন সচিব মো: সাদিকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।