কুমিল্লা: কোনো পুত্র সন্তান না হওয়া, ছয়টি মেয়ে সন্তান জন্ম দেওয়া এবং দাবি অনুযায়ী যৌতুক না এনে দেওয়ায় দাম্পত্যজীবনের ৪০ বছর পর স্ত্রীকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছেন স্বামী আবদুল লতিফ। প্রতিবাদে আদালতে মামলা করেছেন স্ত্রী আমেনা বেগম।
ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার হোসেনপুর গ্রামে।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ১৯৭০ সালে একই উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের বাদশা মিয়ার মেয়ে আমেনা বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় হোসেনপুর গ্রামের আবদুল ওহাবের ছেলে বরুড়ার মহেশপুর ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার আবদুল লতিফের। এরপর ওই দম্পতির ঘরে একে একে ৬টি মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়। ছেলে সন্তান না হওয়ায় আবদুল লতিফ ১৯৯৫ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে আমেনা বেগমের ওপর নেমে আসে নির্যাতন। তাকে চাপ দেওয়া হতে থাকে যৌতুকের জন্য। আমেনা বেগম বৃদ্ধ বয়সেও সংসারের শান্তি এবং স্বামীর বাড়িতেই জীবনের শেষ দিনগুলো কাটিয়ে দেওয়ার প্রত্যাশায় কয়েকবার বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক এনে দেন। এতেও দমে যাননি আবদুল লতিফ। অব্যাহত থাকে নির্যাতন।
আমেনা বেগমকে নির্যাতনের বিষয়ে কয়েকবার স্থানীয়ভাবে সালিশ ডাকা হলেও আবদুল লতিফ তা অমান্য করেন। সর্বশেষ তিনি চলতি বছরের ১৩ মার্চ স্ত্রীকে মায়ের সম্পত্তি বিক্রি করে ২ লাখ টাকা এনে দেওয়ার কথা বললে তাতে রাজি হননি আমেনা বেগম। এতে তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন আবদুল লতিফ।
আবদুল লতিফের ৩য় মেয়ে বকুল বেগম বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাবার আচরণে আমরা লজ্জিত। এ নিয়ে স্বামীর বাড়িতে মুখ দেখাতে পারি না। আমার মা আমেনা বেগমকে তার স্বামীর বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়াসহ তার প্রাপ্য অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। ’
বাংলাদেশ সময়: ২০১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১০