ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আন্দোলন কর্মসূচিতে আন্তরিকতায় ভাটা চারদলীয় জোটে

মান্নান মারুফ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১০
আন্দোলন কর্মসূচিতে আন্তরিকতায় ভাটা চারদলীয় জোটে

ঢাকা: আন্তরিকতায় ভাটা পড়ছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ও সমমনা দলগুলোতে। তাদের অনেকেই বিএনপির সরকারবিরোধী কর্মসূচিকে ঘোষণা সর্বস্ব মনে করছেন।



এদিকে বিএনপি চারদলীয় জোটের পরিধি আরও বাড়ানোর কথা বললেও যোগাযোগে ভাটা পড়েছে জোটভুক্ত সব দলের সঙ্গেই। গত ২৫ নভেম্বর চারদলের বৈঠকে জামায়াতের নেতারা উপস্থিত ছিলেন না। পরে ২৭ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক হয় জামায়াত নেতাদের। তবে তারা বিএনপি ঘোষিত ৩০ নভেম্বরের হরতালে নীতিগত সমর্থন দিলেও একাত্মা প্রকাশ করেননি।

এদিকে গ্রেপ্তারের ভয়ে বিএনপির কর্মসূচিগুলোতে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি থাকছে কম। আর জামায়াত চেষ্টা করছে দলটি টিকিয়ে রাখতে ও গ্রেপ্তার হওয়া নেতাদের বাঁচাতে। সব মিলিয়ে জোটের বড় দুই দল নানা সমস্যায় জর্জরিত। এসব কারণেই বিএনপিসহ জোটের অন্যান্য শরিক দলের  নেতাকর্মীরা মাঠে থাকছেন না। এসব দলে সম্মন্বয়েরও অভাব রয়েছে।

চারদলীয় জোটের অন্যতম বন্ধু সমমনা দলগুলো মঞ্চে বড় বড় কথা বললেও মাঠে ময়দানে তাদের দেখা যচ্ছে না তেমন একটা। এসব দলের মধ্যে রয়েছে এনডিপি, বাংলাদেশ ন্যাপ, ন্যাপ, মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, জাগপা, ন্যাশনাল ইয়ুথ ফোরাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ, নেজামী ইসলামী পার্টি, এনপিপি, নাগরিক ফোরাম, বাংলাদেশ ইসালামী ফ্রন্ট ইত্যাদি। এসব সংগঠনের অধিকাংশের পুর্ণাঙ্গ কমিটি পর্যন্ত নেই।

বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতা বাংলানিউজকে বলেন, ‘দলের কিছু নেতা আছেন তারা কর্মসূচির ঘোষণা শুনেই দায় সারছেন। এরপর বাসায় ঘুমিয়েই দিন কাটাচ্ছেন। আর কিছু নেতা আছেন যারা মিছিল মিটিংয়ে না থাকলেও সাংবাদিক সম্মেলনে এসে সামনে বসে টিভিতে চেহারা দেখাচ্ছেন। ’

ওই নেতা আরো বলেন, ‘এভাবে একটি দল চলতে পারে না। কারণ এসব নেতা কর্মসূচি দেওয়ার জন্য পাগল হলেও পালন করার ব্যাপারে খুবই উদাসীন। ’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইমলাম আলমগীর বাংলানিউজকে বলেন, ‘সরকার হরতালে বাধা দিলেও জনগণই স্বতস্ফূর্তভাবে হরতাল পালন করেছে। ’

তিনি বলেন, ‘সারাদেশে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে পুলিশ। যাকে যেখানে পেয়েছে সেখানেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে একটা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দলটির বিভাগ, জেলা ও থানা পর্যায়ের অফিস মঙ্গলবার হরতাল চলাকালে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। ’

তিনি বলেন, ‘শরিক দলগুলোও হরতালের সর্মথনে রাস্তায় নেমেছিল। তবে পুলিশ কাউকেই রাস্তায় দাঁড়াতে দেয়নি। ’

ঢাকা মহানগর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর হামিদুর রহমান আযাদ এমপি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের দলের নেতাকর্মীরা ঢাকার মতিঝিল, যাত্রাবাড়ী ও বিজয় নগর এলাকায় মিছিল -পিকেটিং করেছে। ’

একই দাবি ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম বুলবুলেরও।

তবে মঙ্গলবার হরতাল চলাকালে নগরীর কোথাও জামায়াত নেতাকর্মীদের দেখা যায়নি।

হরতালে মাঠে আপনাদের উপস্থিতি না থাকার কারণ কি- এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা ছিলাম, তবে আমি ছিলাম না। আমাদের দলের অনেক নেতাকর্মী সকাল ৮টা থেকে পুরানা পল্টন কালভার্ট রোডে মিছিল বের করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু পুলিশ আমাদের মহানগর অফিস ঘেরাও করে রেখেছিল। এ কারণে নেতাকর্মীরা মাঠে নামতে পারেনি। ’

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি শফিউল আলম প্রধান বাংলানিউজকে বলেন, ‘জাগপার নেতাকর্মীরা পল্টন থেকে কাকরাইল সড়কে মিছিল করার চেষ্টা করেছে। তবে পুলিশের অত্যাচারে কোনো নেতাকর্মীই মূল রাস্তায় বের হতে পারেনি। ’

বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।