ঢাকা: কাল ১ ডিসেম্বর। বিজয়ের মাস শুরু।
কাল সেই বিজয়ের পথ দেখানো ডিসেম্বরের প্রথম দিন। বাঙালির ত্যাগের, সংগ্রামের, অর্জনের, মহত্তম গৌরবের মাসের প্রথম সোনারোদ কাল আরও একবার দেশের মানুষকে ভাসিয়ে দেবে দেশাত্মবোধের আবেগে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শান দিয়ে দেশ গড়ার প্রত্যয় নবায়ন করবে জাতি। দারিদ্র, অনুন্নয়ন আর প্রতিদিনের শত সহস্র গ্লানি, কেশ, পরাজয় ঠেলে সরিয়ে এদশের মানুষ সংগ্রামী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হবে আবার, চিনে নেবে সংগ্রামের পথে বিজয়ের সম্ভাবনাকে।
পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠির সঙ্গে এদশের শোষিত মানুষের পক্ষে সমস্ত আলোচনা, দাবি, আন্দোলনের প্রান্তসীমায় দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭১ সালের ২৫ মার্চ সশস্ত্র সংগ্রামের ডাক দেন। সূচিত হয় বাঙালি জাতির ইতিহাসের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায়ের শেষ অঙ্ক- মুক্তিযুদ্ধ। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম হত্যাযজ্ঞে শহীদ হন ৩০ লাখ বাঙালি, অত্যাচারিত হন এদেশের ১০ লাখ নারী। ধ্বংসযজ্ঞ, লাশ আর রক্তস্রোতের জনপদে পরিণত হয় বাংলাদেশ।
কিন্তু তারই মাঝে বাংলার অসীম সাহসী আপামর জনসাধারণ রুখে দাঁড়ায় তাদের সর্বস্ব নিয়ে। গঠিত হয় মুক্তিবাহিনী। প্রতিবেশী ভারত এগিয়ে আসে আশ্রয়, অস্ত্র আর সেনা নিয়ে। বিশ্বের দেশে দেশে প্রবাসী বাঙালি, মানবতাবাদী বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, লেখকদের প্রচেষ্টায় বিশ্ব জনমত গড়ে ওঠে বাংলার মানুষের পক্ষে।
অবশেষে প্রায় নয়মাসের সংগ্রামে পাক হানাদার বাহিনী পিছু হটতে শুরু করে। একে একে স্বাধীন হতে শুরু করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। নাস্তানাবুদ পাকিস্তানি সেনাদের চূড়ান্ত পরাজয় হিসেবে ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে জেনারেল নিয়াজি ৯০,০০০ যুদ্ধবন্দী সৈনিকসহ আত্মসমর্পন করেন যৌথবাহিনীর কাছে।
‘জয় বাংলা’ শ্লোগানে প্রকম্পিত আকাশে বাতাসে পতপত করে উড়তে থাকে স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা। পৃথিবীর মানচিত্রে বদলে যায় কিছু রেখা, স্বতন্ত্রভাবে চিিহ্নত হয় একটি নতুন ভূখন্ড- বাংলাদেশ।
বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের সূচনালগ্নে বাংলানিউজের সশ্রদ্ধ সেলাম এই স্বাধীনতার জন্য বুকের সবটুকু তাজা রক্ত উৎসর্গ করা জানা-অজানা সহস্র শহীদকে। সেই সঙ্গে বাংলার মানুষের চিরন্তন সংগ্রামী চেতনাকেও।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১০