নাটোর: নাটোরের বড় হরিসপুর চেয়ারম্যান রোড থেকে সোমবার রাতে আটক ৭ ব্যক্তি ‘কলেমা জামায়াত’ নামে একটি সংগঠনের সদস্য বলে জানা গেছে।
এ দলের প্রধান ভোলার চরফ্যাশনের অধ্যাপক আব্দুল মজিদ বলে জানা গেছে।
তবে আটক ব্যক্তিরা দাবি করেছেন, তাদেরকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে।
এদিকে নাটোর সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আপেল মাহমুদ বাংলানিউজকে জানান, আটক ৭ জনকে মঙ্গলবার দুপুরে পৃথক পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন, স্টেশনারি সামগ্রি ব্যবসার পাশাপাশি কলেমা জামায়াত সংগঠনের দাওয়াতের (প্রচারের) কাজ করেন তারা।
তাদের মতে ‘রাষ্ট্রের পরিস্থিতি ভালো না, দেশে অস্থির অবস্থা বিরাজ করছে। ’
আর তাই ‘ইসলামি শাসন ব্যবস্থা কায়েমের মাধ্যমেই দেশে শান্তি ফিরবে’ এই দাবি করে তারা সাধারণ মানুষকে দাওয়াত দিতেন বলে জানান এএসপি আপেল মাহমুদ।
থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আটক ৭ ব্যক্তির ৩ জন নাটোর শহরের বড়হরিশপুর চেয়ারম্যান রোডের আব্দুল আলিমের বাড়ির ভাড়াটিয়া। নাশকতার উদ্দেশ্যে ওই বাড়িতে গোপন বৈঠক চলছে জানিয়ে সোমবার রাতে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়।
এ সংবাদের ভিত্তিতে রাত পৌনে ১২টার দিকে নাটোর সদর থানার উপ-পরিদর্শক মখলেছুর রহমান ওই বাড়ি থেকে রাজশাহী সদরের কবির হোসেন (২৬) ও সালমান ইসলাম (১৫), রাজশাহী জেলার পুঠিয়ার মোস্তফা (৩২), রাসেল (২৬), আসাদুজ্জামান (২১) ও মনোয়ার আফসার এবং নাটোরের লালপুরের হাফেজ ইদ্রিস আলীকে (৩২) আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
মঙ্গলবার দুপুরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আব্দুল আলিমের বাড়ি থেকে হাফেজ ইদ্রিস আলীর স্ত্রী আকলিমা বেগম (২২) ও গোলাম মোস্তফার স্ত্রী রেবেকা সুলাতানাকে (২৩) আটক করে থানায় আনা হয়।
সহকারী পুলিশ সুপার আপেল মাহমুদ আরও জানান, দুপুরের পর আকলিমা বেগম ও রেবেকা সুলাতানাসহ ৯ জনকে ৫৪ ধারায় আদালতে সোপর্দ করার পর আদালত তাদের সবাইকে জেলহাজতে পাঠান।
এদিকে হরিশপুর চেয়ারম্যান রোডের বাসিন্দা রাবেয়া বেগম ও আব্দুস সাত্তার বাংলানিউজকে জানান, আটক ব্যক্তিরা বাড়িটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ রেখে ভেতরে থাকতেন। এলাকাবাসীর কাউকে ভিতরে যেত দিতেন না তারা।
রাবেয়া বেগম ও আব্দুস সাত্তার আরও জানান, এই বাড়িতে প্রায়ই অপরিচিত সন্দেহভাজন লোকজন আসত।
একই এলাকার স্কুলছাত্রী শিউলি জানায়, আটক ব্যক্তিরা তাকে ধর্মীয় শিা নিতে বরিশালে নিয়ে যেতে চেয়েছিল।
অপরদিকে আটক ব্যক্তিরা বাংলানিউজকে জানান, মিথ্যা অভিযোগে তাদের ফাঁসানো হচ্ছে। সোমবার রাতে এলাকার মোস্তফা ড্রাইভার মদ খেয়ে তাদের বাড়ির সামনে মাতলামি করছিল। এর প্রতিবাদ করায় তাদের পুলিশ দিয়ে আটক করানো হয়েছে।
বাংলানিউজের ভোলা প্রতিনিধি ছোটন সাহা জানান, নাটোরে আটক ব্যক্তিদের প্রধান অধ্যাপক আব্দুল মজিদ ভোলায় ইসলামি দাওয়াতের ব্যানারে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ১৭ আগস্টের দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামালার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন।
এদিকে নাটোর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল সিটি কলেজের অধ্য দেলোয়ার হোসেনকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘এদের সঙ্গে জামায়াতের কোনও সম্পর্ক নেই। আজই প্রথম আমি এই দলের নাম শুনলাম। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১০