ঢাকা : ‘আমার বাসা শনির আখড়ায়, অফিস আগারগাঁওয়ে। যানবাহনের স্বল্পতা, যানজট পার হয়ে প্রতিদিন বাসা থেকে অফিসে আসতে কমপক্ষে দু’ঘণ্টা সময় নষ্ট হয় আমার।
মঙ্গলবার হরতালের দিন সকাল পৌনে দশটায় আগারগাঁও মোড়ের টং দোকানে বসে আয়েশ করে চা পান করছিলেন সরকারি অফিসের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী মো. সোলায়মান। বাংলানিউজকে কথাগুলো তিনিই বললেন।
রাজধানী ঢাকার শহরতলী বলে পরিচিত শনির আখড়া-রায়েরবাগ এবং জুরাইন-পোস্তগোলার বাসিন্দাদের সাধারণ দিনগুলোতে গুলিস্তান ও মতিঝিল এলাকায় আসতে কমপক্ষে দেড়ঘণ্টা লাগে।
এছাড়া মিরপুর-উত্তরা-গুলশান রুটে যেতে এসব এলাকার মানুষের লাগে আরও দেড়ঘণ্টা। এই দূরত্বের মাঝামাঝি স্থানে আসতে সব মিলিয়ে মোটামুটি দুই ঘণ্টা সময় লাগবেই।
গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো রয়েছে গুলিস্তান ফাইওভার নির্মাণকাজ। এখানেও বেশ কিছু সময় লেগে যায়।
যানজটে অতিষ্ঠ ঢাকাবাসী তাই হরতাল-ঈদের সময়ের মতো ফাঁকা ঢাকার প্রতীক্ষায় থাকেন।
‘আগের দুইখান আর আইজ, মোট তিনখান হরতালে খুব মজা পাইছি। ঈদের সময় তো টিভিতে খালি ঢাকা শহরের ছবি দেহি, এই তিন দিনে বুঝছি ফাঁকা ঢাকাত ঘুরতে কী মজা!’
নারায়ণগঞ্জ টু গুলিস্তান রুটের বোরাক পরিবহনে নতুন চাকরি পাওয়া চালক মো. বারেক মিয়া হরতালে গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে এ মন্তব্য করেন।
তবে রাজধানী ঘুরে কাউন্টার সার্ভিস বাসের চেয়ে লোকাল বাসই বেশি দেখা গেছে। এসব বাসে যাতায়াতকারী যাত্রীদের অভিযোগ হরতালের দিন রাস্তায় কাউন্টার না বসলেও বাসগুলো নেমেছে ঠিকই। তবে এ সুযোগে বাসচালক ও হেলপাররা দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছেন।
যাত্রীদের এমন অভিযোগ সম্পর্কে চালক-হেলপারদের তৈরি জবাবটিই দিলেন মিরপুর টু যাত্রাবাড়ী রুটের স্বকল্প পরিবহনের হেলপার মিলন, ‘হরতালের দিন তো আমাগো লিগা বোনাস। ’
মিলন জানান, হরতালের দিন মালিক কখনই রাস্তায় গাড়ি নামাতে চান না। গাড়ির ক্ষতি হলে এর ক্ষতিপূরণ চালক-হেল্পার দিতে রাজি হলেই কেবল গাড়ি ছাড়েন মালিক। তার ওপর জমার টাকা তো আছেই।
মিলন বলেন, ‘তাইলে, আপনেই কন, অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া ছাড়া উপায় কি?’
বাংলাদেশ সময় : ১৪০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১০