ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

হরতালকে ঘিরে সারা দেশে ব্যাপক ধরপাকড়

সাঈদুর রহমান রিমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১০
হরতালকে ঘিরে সারা দেশে ব্যাপক ধরপাকড়

ঢাকা: আগামী ৩০ নভেম্বর বিএনপি’র ডাকা হরতালকে কেন্দ্র করে গ্রেপ্তার আতঙ্ক চলছে রাজধানীসহ সারা দেশে। হরতাল মোকাবেলায় আগাম ব্যবস্থার নামে পুলিশ এ গ্রেপ্তার অভিযানে নেমেছে।



শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত শুধু রাজধানীতেই আটক করা হয়েছে ৫ শতাধিক ব্যক্তিকে। এর মধ্যে তিনশ’ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। এছাড়া শুক্রবার দিনগত রাত থেকে শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিএনপি’র অনেক নেতাকর্মীকে।

হরতাল সামনে রেখে রোববার সকালেও বিভিন্ন জেলা থেকে খবর আসে গ্রেপ্তারের।

চট্টগ্রাম নগরীতে শনিবার রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে আরও ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চট্টগ্রামে এ নিয়ে গত দু’ দিনে পুলিশ ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

সিএমপির বিভিন্ন থানা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, নগরীর খুলশী থানায় ৫ জন, ডবলমুরিং থানায় ৩ জন, বাকলিয়া থানায় ২ জন, চান্দগাঁও, বায়েজীদ বোস্তামী ও পাহাড়তলী থানায় ১ জন করে ৩জন এবং বন্দর ডিভিশনের অধীন আর পাঁচ থানায় ৬ জন সহ মোট ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর আগে শনিবার নগরীর বন্দর থানায় ৬ জন, কোতয়ালী থানায় ৫ জন, বায়েজীদ বোস্তামী, কর্ণফুলী ও খুলশী থানায় ৩ জন করে ৯ জন, ডবলমুরিং ও পাঁচলাইশ থানায় ২ জন করে ৪ জন এবং চান্দগাঁও ও বাকলিয়া থানায় ১ জন করে ২জন সহ মোট ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিএমপির কোতয়ালী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার শাহনেওয়াজ খালেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘হরতালের সময় নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে এমন আশংকায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ’

বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপরসনের উপদেষ্টা ও নগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

সিলেটেও চলছে গ্রেপ্তার অভিযান। শনিবার গভীর রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত সিলেটে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।

কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক নারায়ণ দত্ত বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘গ্রেপ্তরকৃতরা হরতালে পিকেটিংসহ বিভিন্ন বিশৃংখলা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছিল। ’

অভিযান এখনো অব্যাহত আছে বলে তিনি জানান।

সিলেট বিশ্বনাথ থানা পুলিশও অভিযান চালিয়ে উপজেলা বিএনপি’র সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোনাইম খান ও দৌলতপুর ইউনিয়নের যুবদলের ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক দাইমুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে।

বাংলানিউজের কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, ৩০ নভেম্বর বিরোধী দলের ডাকা হরতালে সহিংসতার আশঙ্কায় কুমিল্লা জেলায় ১৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
 
কুমিল্লার পুলিশ সুপার সফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, আগামী ৩০ নভেম্বর বিরোধী দলের ডাকা হরতালে সহিংসতার আশঙ্কায় শনিবার রাত ১২টা থেকে রোববার ভোর ৫টা পর্যন্ত কুমিল্লা জেলা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মোট ১৪ ব্যক্তিকে আটক করেছে।

কুমিল্লা কোতয়ালি থানায় ৬ জন, সদর দণি থানায় ৫ জন, মুরাদনগর থানায় ২ জন, দাউদকান্দিতে ১ জন ও বুড়িচঙে ১ জনকে আটক করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট থানার উপ-পরিদর্শকরা ১৪ জনকে আটকের খবর নিশ্চিত করেন।

বাংলানিউজের কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, হরতালে নাশকতা সৃষ্টির আশঙ্কায় বিএনপি নেতাকর্মী গ্রেপ্তারের নামে জেলায় গণগ্রেপ্তার শুরু করেছে পুলিশ। শনিবার রাত গভীর রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত বিএনপির ১৭ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো: মনিরুজ্জামান মিথুন, জেলা বিএনপির সদস্য ও ভৈরব উপজেলার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাদেক হোসেন, বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক তোফাজ্জল হোসেন বাদল, ভৈরব শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান কাপন, কিশোরগঞ্জ বিএনপি নেতা রবিউল করিম খান মুরাদ, রিয়াজ আহমেদ রনি, মাহবুবুল আলম, রফিকুল ইসলাম, মোঃ এহসান, রফিকুল ইসলাম বাবলু, মোঃ মানিক ভুইয়া, যুবদল নেতা মোঃ জুয়েল, বাজিতপুর দিলালপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোঃ হেলাল মিয়া, কটিয়াদী বিএনপি কর্মী কুতুব উদ্দিন, সুমন মিয়া, সদর উপজেলার বিন্নাটি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি বাবলু মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আবু তালেক ও বৌলাই ইউনিয়ন যুবদলের ৬নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো চলছে।

এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশাররফ হোসেন জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের নামে বিভিন্ন মামলা রয়েছে। এছাড়া গ্রেপ্তারকৃতরা হরতালের দিন জনমনে ভীতি সৃষ্টি ও আইনশৃংখলার অবনতি ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল।

এদিকে, বিএনপির সন্দেহভাজন নেতাকর্মীদের টার্গেট করে এ গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হলেও তা পরিণত হয়েছে গণগ্রেপ্তারে। এ কারণে পুলিশি হয়রানির মুখে পড়ে শনিবার রাতে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন রাজধানীর অনেক সাধারণ মানুষ।

পুলিশের বেপরোয়া গ্রেপ্তার অভিযানের কারণে রাত ১০টার পর থেকেই রাজধানীর বেশির ভাগ থানা এলাকা জনশূন্য হয়ে পড়ে। কর্মস্থল থেকে বাসা-বাড়ি ফেরার পথে মোড়ে মোড়ে পুলিশি হয়রানি ও আটকের শিকার হন লোকজন।

বিভিন্ন থানার সিভিল টিমের নামে সাদা পোশাকধারী পুলিশ সদস্যরা সামনে যাকে পায় তাকেই হেনস্তা করে গাড়িতে তুলে থানার দিকে নিয়ে যেতে থাকে। শনিবার রাতে রাজধানীর কয়েকটি থানা এলাকা ঘুরে হয়রানির নানাচিত্র লক্ষ্য করা গেছে। থানা হাজতে নিয়ে আটক করে রাখা ব্যক্তিদের ছাড়িয়ে নিতে মধ্যরাতে সবুজবাগ, যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, পল্টন, রমনা, রামপুরা ও খিলগাঁও থানার সামনে স্বজন-পরিজনদের ভিড় জমে উঠতে দেখা যায়।

রাত সোয়া ১০ টার দিকে সবুজবাগ থানার মুগদাপাড়া চাররাস্তা মোড়ে সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যরা আচমকা হাজির হয়েই উপস্থিত লোকজনকে ধরে ধরে গাড়িতে তুলতে থাকেন। সেখানে পথচারী মনির মেম্বার থেকে শুরু করে ডিম বিক্রি করতে থাকা রহিজউদ্দিন পর্যন্ত কেউ রেহাই পাননি। মাত্র ৮/১০ মিনিটের ঝটিকা অভিযানেই পুলিশ সেখান থেকে ১০/১২ জনকে আটক করে গাড়িতে তুলে সবুজবাগ থানায় নিয়ে যায়। ডিম বিক্রেতা রহিজউদ্দিনের (২৮) স্ত্রী আমেনা বেগম জানান, তার বিরুদ্ধে কোনো রকম মামলা নেই, কোনো রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত নন তিনি। রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত স্বামীকে ছাড়ানোর জন্য সবুজবাগ থানার সামনেই আমেনাকে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

সবুজবাগ থানার সামনে আশেপাশে অবস্থান করতে দেখা যায় মনির মেম্বারের ভাতিজা সালাহউদ্দিন, ভাই মহি মিয়া, বোন রিনা আক্তারসহ আরও কয়েকজন। তারা জানান, ব্যবসায়িক কাজ শেষে মোটর সাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে তাকে আটক করে থানা হাজতে রাখা হয়েছে। মনির মেম্বারসহ ৮/১০ জনকে কোনো কারণ ছাড়া আটক করলেও সংশ্লিষ্ট দারোগা জানিয়েছেন, ডিসেম্বরের ৩/৪ তারিখের আগে জামিন পাওয়া যাবে না। থানার আশপাশে ভিড় করা লোকজন টাকা-পয়সার বিনিময়ে হলেও আটককৃতদের ছাড়িয়ে নেওয়ার দেন-দরবারে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

রাত ১১টা থেকে রাত সাড়ে ১১টার মধ্যেই যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশের তিনটি পিকআপ ভরে অন্তত ১৬ জনকে আটক করে নেওয়া হয় হাজতে। লম্বা এক রশিতে কোমরে বাধা আটককৃতদের থানার সামনে গাড়ি থেকে নামানোর সময় রীতিমত গরু-ছাগলের মতো আচরণ করতে দেখা যায়। তাদেরকে টেনে হেচড়ে নেওয়ার সময় নাজমুল হক নামের একজন কনস্টেবল জানান, হরতালের কারণে তাদের আটক করা হয়েছে। রোববার সকালেই কোর্টে চালান দেওয়া হবে। তবে ওই পুলিশ ভ্যানে দায়িত্বরত উপপরিদর্শক গোলাম মোস্তোফা বাংলানিউজকে বলেন, আটককৃতদের মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে পেন্ডিং মামলা আছে। তারা এলাকায় নানারকম অপরাধ কাজে জড়িত। কিন্তু আটককৃত সাইফুল ইসলাম (২৬) ওই উপপরিদর্শকের সামনেই প্রতিবাদ করে জানান, তিনি সূত্রাপুরের একটি প্রেসের কর্মচারি। প্রেস থেকে ফেরার সময় হাতে টিফিন বাটি থাকা সত্তেও রিকসা থেকে নামিয়ে আটক করা হয়। তিনি কোনো রাজনীতি করেন না, কোনো জিডিও তার বিরুদ্ধে নেই বলে দাবি করেন সাইফুল।

রাত পৌনে ১২টার দিকে মুগদা স্টেডিয়াম গেটের উল্টোপাশের রাস্তায় সবুজবাগ থানার টহল টিমের গ্রেপ্তার বাণিজ্য ছিল অন্যরকম। সেখানে থানার অপারেশন অফিসার জামান নিজেই সিভিল টিম নিয়ে গ্রেপ্তার অভিযান চালান। মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যেই সিভিল টিমের পুলিশ সদস্যরা ৯ জনকে আটক করে গাড়িতে তুলে। তবে মাত্র তিনজনকে থানা হাজতে নিলেও বাকিদের টাকার বিনিময়ে পথিমধ্যেই ছেড়ে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

রাত ১২টা ১০ মিনিটে খিলগাঁও থানার সামনে ৮/১০ জন নারী ও থানা গেটের উল্টোপাশে আরও ১০/১২ জন লোককে অপেক্ষারত দেখতে পাওয়া যায়। তালতলা এলাকার বাসিন্দা মমতাজ বেগম (৩২) জানান, তার স্বামী আজগর মোল্লা (৪০) ও ছেলে শরীফ (১৪) কে রাত ১০ টার দিকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। বাসায় ঘুমন্ত অবস্থায় আটককৃত আজগর ও শরীফের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ সে বিষয়টি জানাতে পারেননি সংশ্লিষ্ট উপপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন। তিনি বাংলানিউজকে জানান, গত হরতালে খিলগাঁও খিদমাহ হোটেলের সামনে একটি প্রাইভেটকারে অগ্নিসংযোগ ঘটানো হয়। ওই মামলায় তারা জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জড়িত না থাকলে রাতেই ছেড়ে দেওয়া হবে। অন্যথায় হরতালের পর কোর্ট থেকে জামিনে বের করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।

রাজধানী জুড়ে শনিবার রাতে এভাবেই গ্রেপ্তার অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। রাত ২টার মধ্যে নগরীর বিভিন্ন থানায় পাঁচ শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। এরমধ্যে সবুজবাগ থানায় ২১ জন, খিলগাঁও থানায় ১৩ জন, বাড্ডা থানায় ১২ জন, রামপুরায় ৯ জন, যাত্রাবাড়ীতে ১৭ জন, গেণ্ডারিয়ায় ১২ জন, শ্যামপুরে ৯ জন, কদমতলীতে ৬ জন, ডেমরায় ৭ জন, সূত্রাপুরে ১৩ জন, কোতোয়ালীতে ১২ জন, মতিঝিলে ১৩ জন, পল্টনে ১২ জন, রমনায় ১২ জন, শাহবাগে ৫ জন, কলাবাগানে ৮ জন, ধানমণ্ডিতে ১৫ জন, মিরপুরে ৮ জন, শাহআলীতে ৪ জন, পল্লবীতে ১১ জন, দারুসসালামে ৭ জন, হাজারীবাগে ৬ জন, লালবাগে ১০ জন, চকবাজারে ৩ জন, কামরাঙ্গীর চরে ১২ জন, গুলশানে ১১, উত্তরায় ৮ জন, বিমানবন্দরে ৩ জন, তুরাগে ৬ জনসহ মোট তিন শতাধিক গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আগে দায়েরকৃত নানা অরাজকতা সৃষ্টি, পুলিশি কাজে বাধাদান, গাড়ি ভাঙচুর ও রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি সংক্রান্ত একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় বলে থানা সূত্রগুলো জানিয়েছে।  

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (দণি) উপকমিশনার মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিগত দুটি হরতালে গাড়ি ভাঙচুর, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় বিভিন্ন থানায় ৪১টি মামলা রুজু হয়। এসব মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি, তাদের সহযোগী এবং সন্দেহভাজনদের তালিকা নিয়েই পুলিশ কাজ করছে। গোয়েন্দা পুলিশের অপর উপকমিশনার (উত্তর) মাহবুবুর রহমান শনিবার রাত সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত অর্ধশতাধিক জনকে গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার করেছেন।

এদিকে, জয়পুর হাট থেকে বাংলানিউজের জেলা প্রতিনিধি জানান, ৩০ নভেম্বর হরতালে আইনশৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কায় জেলায় শনিবার রাতে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুলিশ কন্ট্রল রুম সূত্রে জানায়, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে জয়পুরহাট সদর উপজেলায় ২ জন পাঁচবিবি উপজেলায় ৩ জন, কালাই উপজেলায় ১ জন, আক্কেলপুর উপজেলায় ২ জন ও তেলাল উপজেলায় ২ জন।

বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা এমপি অভিযোগ করেন, হরতালকে বাধাগ্রস্ত করার জন্যই জেলায় অন্যায়ভাবে ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে

বাংলানিউজের মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, বিএনপির ডাকা হরতালকে সামনে রেখে মানিকগঞ্জে বিএনপির ৭ জন কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শনিবার রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিএনপিকর্মী যোবায়ের রহমান, আবুল কালাম, আব্দুস ছালাম, আব্দুল আলিম ,আব্দুল করিম, শফিকুল ইসলাম ও তাসিম মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মানিকগঞ্জ সদর থানার ৫ জন, সাটুরিয়া থানার ১ জন, ও ঘিওর থানার ১ জন।

মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ডিআই-১ মো:আফছার উদ্দিন জানান, বিএনপি কর্মী গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে, শনিবার সকালে কুড়িগ্রামে বিএনপির ১৭ নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ।

বাংলাদেশ সময় : ১১৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।