ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

হরতালকে সামনে রেখে পুলিশের ব্যাপক প্রস্তুতি, চলছে ধরপাকড়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১০

ঢাকা: বিএনপি’র ডাকা ৩০ নভেম্বরের হরতালকে সামনে রেখে রাজধানীসহ সারাদেশে শুরু হয়েছে ব্যাপক ধরপাকড়। তবে হরতালের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই বলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।



জানা গেছে, শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর উত্তর খান, গুলশান, রমনা, মিরপুর, মতিঝিল থানা পুলিশ ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ২০ জনকে।

বিভিন্ন থানায় তদন্তাধীন ও তদন্ত স্থগিত করে রাখা (পেন্ডিং) ছিনতাই, চাঁদাবাজি, বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলা, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া, গাড়ি ভাংচুর, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ এবং টেন্ডারবাজির মামলায় এদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উত্তরখান থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সুজন আহমেদ, কাফরুলে ৯৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি আফজালুর রহমান ও জামায়াতের স্থানীয় নেতা সাহাবুদ্দিন, মিরপুরে বিএনপিকর্মী নুরুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান, মতিঝিলে বিএনপি কর্মী শাহিনসহ ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এদিকে অনেক নিরীহ ব্যক্তি ও পথচারী পুলিশ ও গোয়েন্দাদের এই ধরপাকড়ের শিকার হচ্ছেন বলে জানা গেছে। পাশাপাশি পুলিশ গ্রেপ্তার বাণিজ্য শুরু করেছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা গ্রেপ্তার বাণিজ্যের কথা অস্বীকার করেছেন।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) উপ-কমিশনার মনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, বিএনপির ডাকা বিগত দু’টি হরতালে গাড়ি ভাংচুর, গাড়িতে আগুন এবং পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় বিভিন্ন থানায় ৪১টি মামলা হয়। ওইসব মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি, সহযোগী এবং সন্দেহভাজনদের তালিকা নিয়েই পুলিশ কাজ করছে।

গ্রেপ্তার আতঙ্কে বিএনপি, জামায়াত, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) ও তাদের অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মীই এখন ঘরছাড়া। এসব নেতাকর্মীদের পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি হয়রানিমূলক এবং উদ্বেগজনক বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার বেনজীর আহমেদ বলেছেন, হরতালে পুলিশ কোনো রাজনৈতিক অবস্থানে যাবেনা। হরতালের সময় যারা নাশকতামূলক কর্মকান্ড ঘটাতে চেষ্টা করবে, গাড়ী ভাংচুর ও জানমালের ক্ষতিসাধন করবে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।

শনিবার রাজধানীর বিআরটিএ কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ মন্তব্য করেন ডিএমপি কমিশনার।

এ সময় মঙ্গলবারের হরতালকে সামনে রেখে যে গ্রেপ্তার চলছে সে ব্যাপারে জানতে চাইলে ‘অপরাধী ছাড়া কোনো রাজনৈতিক কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন বেনজীর আহমেদ।

এদিকে হরতালকে সামনে রেখে মহানগর পুলিশের করণীয় প্রসঙ্গে শনিবার রাজারবাগ পুলিশ লাইন অডিটোরিয়ামে পুলিশ কর্মকর্তাদের ব্রিফিং করা হয়েছে।  

বিকেল সাড়ে চারটার দিকে শুরু হওয়া এ ব্রিফিং এ ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমেদ হরতাল মোকাবেলায় পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

ব্রিফিং-এ মহানগর পুলিশের সকল যুগ্ম কমিশনার, উপ-কমিশনার, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার, সহকারী কমিশার, থানার ওসি, সকল পরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনার পরপরই রাজধানীজুড়ে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান শুরু হবে।

মহানগর পুলিশের জনসংযোগ শাখা সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকাল দশটায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হরতালে নাশকতা প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।