ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাজধানীর কুড়িলে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ: ২০ পুলিশসহ আহত ১০০

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১০
রাজধানীর কুড়িলে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ: ২০ পুলিশসহ আহত ১০০

ঢাকা: সরকার ঘোষিত মজুরি কাঠামো অনুযায়ী বেতনের-ভাতার দাবিতে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড ও বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করায় পোশাক শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে ২০ পুলিশসহ অন্তত ১০০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশের গুলিতে এক শ্রমিক নিহত ও দুজন আহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লেও এর সত্যতা স্বীকার করেনি পুলিশ।



এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বিমানবন্দর সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়ে দুটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং সেনাবাহিনীর একটি প্রাইভেট কারসহ ইটপাটকেল ছুড়ে প্রায় শ’খানেক গাড়ি ভাঙচুর করে।

ঘটনা প্রসঙ্গে র‌্যাব-১-এর উপ-অধিনায়ক মেজর আইনুন মোর্শেদ খান পাঠান বাংলানিউজকে জানান, রোববার সকাল আনুমানিক ৯টায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল করে বিমানবন্দর সড়কে প্রতিবন্ধকা সৃষ্টি করেন। সরকার নির্ধারিত নতুন বেতন কাঠামো দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয় বলে জানান তিনি।

র‌্যাব-১ উপ-অধিনায়ক আরও জানান, এসময় বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে শ’খানেক গাড়িতে ইট-পাটকেল ছুড়ে ভাঙচুর চালায়। পুলিশ ও র‌্যাব ছাড়াও দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করে সকাল ১১টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য এ সময় কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয় বলে জানান তিনি।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৯টার দিকে জোয়ারসাহারা এলাকা থেকে প্রায় দুই হাজার শ্রমিক সরকার নির্ধারিত বেতন কাঠামোর দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল সহকারে বিমানবন্দর সড়কের কুড়িল রেলক্রসিং এলাকায় বসে পড়ে অবস্থান নেন। এ সময় ব্যস্ততম বিমানবন্দর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানায়, একপর্যায়ে দাঙ্গা পুলিশ শ্রমিকদের ধাওয়া দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। কিন্তু প্রথমে পুলিশের সংখ্যা কম হওয়ায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পুলিশকে ধাওয়া করলে কয়েকজন পুলিশ পানিতে নেমে আত্মরক্ষা করেন। এ সময় একজন পুলিশের ওয়্যারলেস সেট হারিয়ে যায়। পরে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা একটি ট্যাক্সিক্যাব ও একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং সেনাবাহিনীর একটি প্রাইভেট কারসহ ইটপাটকেল ছুড়ে প্রায় শ’খানেক গাড়ি ভাঙচুর করে।

সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের প্রায় ২০ সদস্য মারাত্মকভাবে আহত হন। এছাড়াও প্রায় ৮০ শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে।

কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় অবস্থানরত বাংলানিউজ-এর স্টাফ করেসপন্ডেন্ট মহিবুব জামান জানান, সংঘর্ষের সময় কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা গেলেও পুলিশ গুলিবর্ষণের কথা অস্বীকার করে। গুলিতে দুজন আহত এবং একজন নিহত হওয়ার খবরটিও স্বীকার করেনি পুলিশ।

খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসেন বাংলানিউজকে জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য প্রায় ৫০ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস এবং কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়। তবে কোনো ধরনের গুলি ছোড়া হয়নি।

বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে জানিয়ে গুলিতে আহত বা নিহত হওয়ার সংবাদটি পুরোপুরি গুজব বলে মন্তব্য করেন ওসি শামীম হোসেন।

এর আগে বাড্ডা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোশারেফ হোসেন ভুঁইয়া বাংলানিউজকে জানান, শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেছেন এবং পুলিশ মূল সড়ক থেকে শ্রমিকদের সরানোর চেষ্টা করছে।

বাংলাদেশ সময় ১৩০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।