ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আন্দোলনের নামে অস্থিরতা সৃষ্টি করলে সরকারও বসে থাকবে না: ব্রাসেলসে প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১০
আন্দোলনের নামে অস্থিরতা সৃষ্টি করলে সরকারও বসে থাকবে না: ব্রাসেলসে প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: আন্দোলন ও হরতালের নামে কেউ সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি এবং জনগণকে জিম্মি করতে চাইলে সরকারও বসে থাকবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপের কয়েকটি দেশের প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।



ব্রাসেলসের কনরাড হোটেলের অডিটোরিয়ামে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত আটটায় ‘অল ইউরোপ আওয়ামী লীগ’ ওই মতবিনিময় অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়।   সারাবিশ্বে সম্ভাবনাময় একটি রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। আমরা কাজ করে চলেছি বাংলাদেশকে মাঝারি ধরনের একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার লঙ্ঘে। ’

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সরকারের জনকল্যাণকর বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনগণের জানমাল রার্থে সরকার বদ্ধপরিকর। ’

বিরোধীদলের আন্দোলন কর্মসূচি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যত গর্জে তত বর্ষে না। কেউ যদি আন্দোলনের নামে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি এবং জনজীবনকে জিম্মি করতে চায় তাহলে সরকারও বসে থাকবে না। ’

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক বিধি ব্যবস্থা অনুযায়ী দেশ পরিচালিত হচ্ছে এবং বাংলাদেশ এখন আন্তর্জাতিকভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের নিরবচ্ছিন্ন এ উন্নয়নের ধারাকে সচল রাখতে প্রবাসীদের অকুন্ঠ সমর্থন অব্যাহত রাখতে হবে। ’

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে প্রবাসীদের আন্তরিক সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ হচ্ছে বর্তমান বিশ্বে বিনিয়োগের সবচেয়ে নিরাপদ একটি স্থান- এ বিষয়টি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অবহিত করতে প্রতিটি প্রবাসীকে রাষ্ট্রদূতের ভূমিকা পালন করতে হবে। ’

তিনি বলেন, বিদেশে বাংলাদেশের ইমেজ বিপন্ন হয় এমন অপতৎপরতায় কেউ যেন লিপ্ত হতে না পারে সেজন্য তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের সজাগ থাকার পরামর্শ দেন। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণকারীরা বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিকত্ব পাবেন এবং ভোটাধিকার প্রদানের ব্যবস্থা এরই মধ্যে হয়েছে। ’

বেলজিয়ামে বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিস স্থাপনে প্রবাসীদের একটি দাবি পূরণেরও আশ্বাস দেন শেখ হাসিনা।

ঢাকা থেকে অথবা লন্ডন থেকে ব্রাসেলস পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সার্ভিস পুনরায় চালুর আহবান জানানো হলে প্রধানমন্ত্রী তা ভেবে দেখার কথা বলেন।

মতবিনিময়কালে ভোটার আইডি তৈরির মত উত্তম একটি কাজ সুচারুরূপে সম্পন্ন করার জন্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। ভোটার আইডি কার্ড তৈরিতে ইইউর সহায়তার জন্য ইউরোপিয়ান কাউন্সিল ও কমিশনকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী সরকারের দারিদ্র্য বিমোচন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, জেন্ডার সমতা, পল্লীর জনগণের অর্থনৈতিক মতায়ন, অধিক উপার্জনের সুযোগ সৃষ্টি এবং কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচির কথা উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশের বর্তমান বিদ্যুৎ পরিস্থিতির বিষয় তুলে ধরে দেশব্যাপী নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং এ খাতে ইউরোপীয় দেশগুলোর অধিক সহায়তা পাওয়ারও আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রমুখ।

সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি অনীল দাসগুপ্তের সমন্বয় ও বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রশিদ বুলুর পরিচালনায় এ মতবিনিময় অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান সুলতান শরিফ, সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি এম এ  গণি, বেলজিয়াম আ’লীগ নেতা বেনজির আহমেদ সেলিম, এম এ  কাশেম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে অস্ট্রিয়া, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, নরওয়ে, ডেনমার্ক এবং বেলজিয়াম শাখার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

১২ দিনের সরকারি সফরের অংশ হিসেবে গত ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী ব্রাসেলস পৌঁছান। ২৭ নভেম্বর তিনি জাপানের উদ্দেশে রওয়ানা হবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ