ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাঘ রক্ষার ঘোষণাপত্রে ১৩ জাতির স্বাক্ষর

আহমেদ জুয়েল, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১০
বাঘ রক্ষার ঘোষণাপত্রে ১৩ জাতির স্বাক্ষর

সেন্ত পিতার্সবুর্গ: বাঘ রক্ষার ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছেন বাঘ-অঞ্চলের (টাইগার রেঞ্জ) ১৩টি দেশের প্রতিনিধিরা। রাশিয়ার সেন্ত পিতার্সবুর্গে অনুষ্ঠিত চারদিনব্যাপী বাঘ সম্মেলনের তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে তারা এই ‘বড় বিড়াল’ প্রজাতিকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচানোর অঙ্গীকারপত্রে স্বাক্ষর করেন।



সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত নতুন এই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরকারী প্রতিটি দেশ ২০২২ সালের মধ্যে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। বেআইনিভাবে বাঘ হত্যা বন্ধ করবে এবং বাঘের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও চামড়ার অবৈধ ব্যবসা বন্ধ করবে।

এক সময় পৃথিবীর ২৫টি দেশে এক লাখ বাঘের বিচরণ থাকলেও এখন মাত্র ১৩টি দেশে বাঘের অস্তিত্ব আছে। এছাড়া গত এক শতকে শতকরা ৯৭ ভাগ বাঘ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আর টিকে থাকা মাত্র সাড়ে তিন হাজার বাঘও রয়েছে বিপন্ন অবস্থায়। বাঘের নয়টি প্রজাতির মধ্যে ৩টি প্রজাতি এরই মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আরও একটি প্রজাতি বন্য পরিবেশে আর দেখা যায় না।

ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো হলো- বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, ভারত, রাশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া, চীন, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, নেপাল, থাইল্যান্ড এবং উত্তর কোরিয়া।

দেশগুলো বাঘের আবাসস্থল রক্ষা, বিচরণক্ষেত্র বাড়ানো এবং এসব কাজে স্থানীয় জনসাধারণকে সংশ্লিষ্ট করার ব্যাপারে একমত হয়েছে।

বাঘ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য কঠিন, কিন্তু অর্জন করা সম্ভব। ’

১৩ জাতির এই বাঘরক্ষা প্রকল্পে ১২ বছরের পরিকল্পনার মধ্যে প্রথম ৫ বছরের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ কোটি ডলার। বিভিন্ন খাত থেকে এই তহবিল গঠন করা হবে।

বাংলাদেশ, লাওস এবং নেপালের মতো দরিদ্র দেশগুলোকে বাঘরক্ষায় বাইরের আর্থিক সহায়তার ওপর নির্ভর করতে হবে। ঘোষণাপত্র অনুযায়ী বাঘরক্ষায় দেশগুলো উপযুক্ত দাতা খুঁজে বের করবে।

এ প্রসঙ্গে পুতিন বলেন, ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সমস্যার সমাধান করা এই দেশগুলোর পক্ষে কঠিন। ’

তিনি আরও বলেন, ‘রাশিয়া বাঘের সংখ্যা বাড়াতে প্রতিবেশী দেশ ইরান ও কাজাখস্তানকে সহায়তা করবে। প্রতিটি দেশেই যখন প্রতিদিন বাঘের সংখ্যা কমছে তখন টাইগার রেঞ্জের ১৩টি দেশের মধ্যে রাশিয়াই একমাত্র দেশ যেখানে গত ৫০ বছরে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪০০টি। এর আগে সেখানে এই সংখ্যা ছিল মাত্র পঞ্চাশ থেকে এক শ’। ’

রাশিয়ার প্রিমোরস্কি প্রদেশের একজন বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘সাইবেরিয়ান বাঘের সংখ্যা বাড়লেও তা বিপন্ন অবস্থায় আছে। এগুলোর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং মাংস চীনের ঐতিহ্যবাহী ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। আর এ কারণে প্রতি বছর চোরাকারবারীরা এক শ’ বাঘ হত্যা করে চীনে পাচার করে। ’

রাশিয়ার সেন্ত পিতার্সবুর্গে এই বাঘ সম্মেলন শুরু হয়েছে ২১ নভেম্বর। চলবে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত। রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ভøাদিমির পুতিনের উদ্যোগে বিশ্বব্যাংক ও ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ ফান্ড এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে।

সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার তিনি সম্মেলনের মূল অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি পরিবেশের স্বার্থে বাঘ সংরক্ষণে সমন্বিত ব্যাবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ সময় : ০২২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।