ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

‘হাতিয়ায় ৩৮ জলদস্যুকে আটক করেও ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ’

শাহেদুল ইসলাম শফিক, হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১০

হাতিয়া : নোয়াখালীর হাতিয়ার বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল ক্যারিংচরের থানার বাজার থেকে ৩৮ জলদস্যুকে আটক করে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। এঅভিযোগ করেছেন চরের ভূমিহীনরা।

পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হয়েছেন চরের দুই শতাধিক ভূমিহীন।

রোববার গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটে।
 
প্রত্যদর্শী রফিক, আজাদ, জহির, শাহারাজ, বেলাল, ইব্রাহীম, কোব্বাতসহ অনেক ভূমিহীন জানান, রোববার দুপুরে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (এস আই) দুলালের সহযোগিতায় ২ শতাধিক জলদস্যু হাতিয়ার চরে সশস্ত্র অবস্থান নেয় জাহাইজ্জার চরে অবস্থানরত জলদস্যুসম্রাট মুন্সিয়া চোরাকে সহযোগিতার  জন্য। জানতে পেরে স্থানীয় ভূমিহীনরা তাদের প্রতিহত করার জন্য চরের থানার বাজারে একত্রিত হয়ে এসআই দুলাল মিয়া ও বনদস্যুদের বিরুদ্ধে বিােভ করে। দুলাল মিয়ার বিরুদ্ধে ভূমিহীনরা স্লোগান দেওয়ায় রাত ৮টা ৩০মিনিটের সময় তিনি প্তি হয়ে ভূমিহীনদের ওপর ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়েন এবং লাঠিচার্জ শুরু করেন। পুলিশের লঠিচার্জে আহত হয় অন্তত ২ শতাধিক ভূমিহীন।

এ ঘটনার পর ভূমিহীনরা দস্যুদের গ্রেফতারের জন্য স্থানীয় থানার হাট-বাজারের বিােভ প্রদর্শন করে পুলিশ ক্যাম্প ঘেরাও করে।

পরিস্থিতি পুলিশের নাগালের বাইরে চলে গেলে রাত ১টায় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুবুল হকের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আবারও ভূমিহীনদের ওপর লাঠিচার্জ করে। ভূমিহীনেরা এ সময় পুলিশ সুপারের কাছে দস্যুদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগ জানালে তিনি ৪১টি দেশীয় বগি দা ও ৬টি ঢালসহ ৩৮ জলদস্যুকে আটক করেন।

কিন্তু গ্রেফতারকৃত ওই দস্যুদের অস্ত্রসহ জেলা সদরে নেওয়ার পথে পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে বলে ভূমিহীনরা অভিযোগ করেন।

ওই দস্যুদের বিরুদ্ধে হাতিয়া মনপুরা, রামগতি ও সুবর্ণচর চরজব্বর থানা ও সিনিয়র বিচারিক হাকিমের আদালতে হত্যা, ধর্ষণ, ডাকাতি, অপহরণ, লুটসহ ২৫টি করে মামলা রয়েছে বলে সূত্রে জানা যায়।

কথিত জলদস্যুরা হলেন- মালেক ডাকাত, এমাল হক, মতিন কসাই, আফছার ডাকাত, হাতকাটা হারুন ডাকাত, অলি ডাকাত, অলি দালাল, বাহার কেরানি, কালাম, আজহার ডাকাত, বাবর কসাই, নছির, জাবের কমান্ডার, শামিম ডাকাত, শিরাজ ডাকাত, সুন্দরা হেলাল ডাকাত, আশ্রাফ বাহিনী, জাবের বাহিনী,  নুরুল ইসলাম মাঝি, গেসু ডাকাত, এমরান ডাকাত, ফরিদ ডাকাত, পিস্তল হারুন, মুন্নি বাহার, ইসমাইল ডাকাত, পান কামাল, জসিম ডাকাত, মানিকক ডাকাত, সন্দিপা বেলাল, সেকু ডাকাত, প্লাষ্টিক মিরাজ, তাজুল ডাকাত, মিলাদ বাহিনী, হানিফ ডাকাত, রহমান ডাকাত, নবীর মাঝি, হোসেন সেরাং বাহিনী ও জয়নাল স্পিকার।

এদের বিরদ্ধে হাতিয়া, মনপুরা, রামগতি ও সুবর্ণচর চরজব্বর থানায় রেপন হত্যা মামলা জিআর-৭২/১০, স্থানীয় এমপির ওপর হামলা মামলা জিআর ৮৬/১০, শিশু হত্যা মামলা বিচারকি ম্যাজিস্ট্রেট ৬০২/১০, বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৬১১/১০, ৬১৪/১০, ৬১৫/১০, জিআর ৭০/০৯, জিআর ৫৫/০৯, জিআর ০৩/০৯, জিআর ২২/০৯, জিআর ১০/০৯, জিআর ২৪/০৮, জিআর ৮১/০৩, জিআর ১৩১/০৪, জিআর ২২/০৯, জিআর ৮৫/০৬, পিটিশন মামলা ২০৭/০৯, ২০৮/০৯ ও মফিজ হত্যা মামলা মামলাসহ অন্তত ২৫টি মামলা রয়েছে।

জলদস্যুদের ব্যাপারে কোস্টগার্ডের দণিাঞ্চলীয় জোন স্টাফ অফিসার আপারেশন লে. জহুর বলেন, আমদের তিনটি টিম ঘটনাস্থলের আশপাশের নদীতে টহলে রয়েছে।

এ ব্যাপারে আতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুবুল হকে মোবাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, ‘অটককৃতরা দস্যু নয়। তাই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ’

বাংলঅদেশ সময় : ২১৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।