ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সংসদ চত্বরে ফরিদ গাজীর দ্বিতীয় জানাজা, রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধা, শনিবার নেওয়া হবে সিলেটে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১০
সংসদ চত্বরে ফরিদ গাজীর দ্বিতীয় জানাজা, রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধা, শনিবার নেওয়া হবে সিলেটে

ঢাকা: সিলেট অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সংগঠক, বঙ্গবন্ধু মন্ত্রিসভার সদস্য, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, হবিগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ আলহাজ্ব দেওয়ান ফরিদ গাজীর দ্বিতীয় নামাজে জানাজা সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের এই অন্যতম সংগঠককে।



স্পিকার অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, মন্ত্রিসভার সদস্য, সাংসদ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। এর আগে প্রথম নামাজে জানাজা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সম্পন্ন হয়।

বিকেলে বাদ আছর সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজার সময় উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি স্পিকার কর্ণেল (অব.) শওকত আলী, সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, সরকারি দলের চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ, আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার, বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুক, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মণি প্রমুখ।

সংসদ ভবন চত্বরে জানাজা শেষে সেগুনবাগিচার বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয় মরদেহ। রাতে সেখানেই রাখা হবে। শনিবার ভোরে তার মরদেহ নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করা হবে বলে বাংলানিউজকে জানান তার পারিবারিক সূত্র।
 
এদিকে দুপুর ২টায় বাদজুমা প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় মসজিদে। জানাজা পড়ান মসজিদের খতিব মাওলানা মো. সালাহউদ্দিন। গণফোরাম নেতা ডক্টর কামাল হোসেনসহ মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য, সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতারা জানাজায় অংশ নেন।  

শুক্রবার ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে ইন্তেকাল করেন দেওয়ান ফরিদ গাজী।

তিনি পাঁচ ছেলে দুই মেয়ে ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিলো ৮৬ বছর।

আমাদের হবিগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, শনিবার সকাল ৯টায় হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলা কমপ্লেক্সে তৃতীয় জানাজা হবে।

এরপর দেওয়ান ফরিদ গাজীর নিজগ্রাম নবীগঞ্জের দেবপাড়ায় হবে ৪র্থ জানাজা। এছাড়া নবীগঞ্জ জে কে স্কুল মাঠে ৫ম জানাজা নামাজ শেষে তাকে সিলেটে নেওয়া হবে। দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের শেষ দেখার জন্য তার মরদেহ সিলেট স্টেডিয়ামে রাখা হবে। বিকালে শাহজালালের (রহঃ) মাজার এলাকায় সর্বশেষ জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেওয়ান ফরিদ গাজীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোকবার্তায় তিনি মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জানান ও তার বিদেহী আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনা করেন।

সকাল ৯টার দিকে দেওয়ান ফরিদ গাজীর মরদেহ সেগুনবাগিচায় তার বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ, কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, সুলতান মোহাম্মদ মনসুরসহ দলের নেতাকর্মীরা সেখানে যান।  
 
এর আগে দেওয়ান ফরিদ গাজীর ব্যক্তিগত সহকারী কাজী ওবায়দুল কাদের হেলাল বাংলানিউজকে জানান, প্রায় দীর্ঘ ২ মাস ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে দেওয়ান ফরিদ গাজী মারা যান।

গত ১৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে প্রবীণ এ সাংসদের শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাকে দ্রুত স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

গত ১১ নভেম্বর দুপুরের পর দেওয়ান ফরিদ গাজীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। ১২ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১১টায় তাকে সিসিইউ (করোনারি কেয়ার ইউনিট)তে রাখা হয়। সেখানে তিনি কিডনি বিশেষজ্ঞ ডাঃ আব্দুল ওয়াহাবের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

দেশের এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও সাংসদ দেওয়ান ফরিদ গাজী বার্ধক্যজনিত কারণ ছাড়াও ডায়বেটিস, ফুসফুস, হার্ট,কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন।

উল্লেখ্য, দেওয়ান ফরিদ গাজী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক সহযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তিনি শেখ মুজিব সরকারের বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। সর্বশেষ তিনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

বাংলাদেশ সময় ১৭৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।