ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১০
প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ

ঢাকা: ঈদুল আযহার জামাতের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ ময়দান। মঙ্গলবার সকাল থেকেই ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার ও র‌্যাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার দফায় দফায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শন করেন।

সেখানে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঠে শামিয়ানা টানানোর কাজ শেষ হয়েছে। উঁচু-নিচু জায়গা বালু দিয়ে ভরাট করে সমতল করে বিছানো হয়েছে কার্পেট, মাদুর, সাদা কাপড়। বৃষ্টি প্রতিরোধের জন্য সোমবার রাতেই পুরো মাঠজুড়ে টানা হয়েছে হয়েছে তেরপল। মাঠের সার্বিক নিরাপত্তা রায় পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের ঘনঘন নজরদারি করতে দেখা গেছে। র‌্যাবের কর্মকর্তা ও সাধারণ সদস্যরা ছাড়াও বিশেষ ডগ স্কোয়াডের সার্বক্ষণিক উপস্থিতি দেখা গেছে।

শ্রমিকদের কাজ তদারক করতে আসা ডিসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফউদ্দিন  প্রস্তুতিপর্বের নানা দিক নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

তিনি জানান, ঈদগাহ মাঠের মোট আয়তন দুই লাখ ৫৭ হাজার ২০৭ বর্গফুট। এতে সর্বোচ্চ এক লাখ ২০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। এখানে ৩০ বর্গফুট স্থান ভিভিআইপিদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। নারীদের জন্য করা হয়েছে পৃথক ব্যবস্থা। সেখানে একযোগে ৫ হাজার নারী নামাজ আদায় করতে পারবেন।
 
মঙ্গলবার দুপুরে ডিসিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফউদ্দিন আরও জানান, ২ লাখ ৩২ হাজার ৮১২ বর্গফুট এলাকায় মুসল্লিদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে বৃষ্টি প্রতিরোধে তেরপলের ব্যবস্থা আছে আরও বেশি আয়তনের। বিশালাকার প্যান্ডেলে স্থাপন করা হয়েছে ৪০০টি সিলিং ফ্যান। স্ট্যান্ড ফ্যান থাকছে ৬৪টি। জাতীয় ঈদগাহ এলাকায় একটি মোবাইল টয়লেটও থাকছে।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনভূক্ত এলাকায় ডিসিসি’র তত্ত্বাবধানে মোট ৩৬২টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে ৫টি ঈদ-জামাত।

তিনি বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে সকাল ৮টা থেকেই ঈদ জামায়াত শুরু হবে। ’

এর আগে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজির আহমেদ জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের সার্বিক নিরাপত্তা-ব্যবস্থা পরিদর্শন করেন।

তিনি ঈদগাহ ময়দানে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে পুলিশ ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিñিদ্র করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ডিএমপি কমিশনার জানান, ঈদ উপলক্ষে রাজধানীতে প্রায় ১০ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তারা রাজধানীর ফাঁকা বাড়িঘরের প্রতি বিশেষ নজর রাখার পাশাপশি কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে চাঁদাবাজি প্রতিরোধে থাকবেন সক্রিয়।

ডিএমপি কমিশনার বেনজির আহমেদ বলেন, ঈদপূর্ব সময়টা রাজধানীবাসী স্বস্তিদায়ক নিরাপত্তার পরিবেশে কাটিয়েছেন। ঈদের পরও মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

দুপুর ১২টার দিকে র‌্যাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) লে. কর্নেল মো. রফিকুল ইসলাম জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে যান ও ঘুরেফিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন।

তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, জাতীয় ঈদগাহ ময়দান থেকে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ পর্যন্ত র‌্যাব পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের ভেতরেই ৩শ’ র‌্যাব সদস্য ও বায়তুল মোকাররম মসজিদ আঙ্গিনায় আরও একশ’ র‌্যাব সদস্যকে সার্বক্ষণিক মোতায়েন রাখা হয়েছে। এছাড়াও সংলগ্ন রাস্তা, গলি, ব্যস্ত মোড়ে মোড়ে র‌্যাবের টহল দল নিয়মিত টহল কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. রফিকুল ইসলাম আরও জানান, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত জাতীয় ঈদগাহ ময়দান এলাকায় র‌্যাবের ডগ স্কোয়াডের অবস্থান ও টহল কার্যক্রম থাকবে। তবে নামাজের পবিত্রতার কথা মাথায় রেখে বুধবার সকাল থেকে ঈদগাহ ময়দানে কোনো ডগ স্কোয়াডের কোনো সদস্য রাখা হবে না।

জাতীয় ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শন করে ডিএমপি কমিশনার, র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক ও ডিসিসি কর্মকর্তারা সন্তোষ প্রকাশ করে জানান, ঈদ জামাতে মুসল্লিদের কোনো রকম অসুবিধা হবে না। তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থাপনাকেও সন্তোষজনক বলে মন্তব্য করেছেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।