ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাজধানীটাই যেন পশুর হাট

সাইদ আরমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১০
রাজধানীটাই যেন পশুর হাট

ঢাকা: ‘খাসিটার দাম কতো?’ ‘কতো দিবেন আপা?’ ‘আপনি আগে দাম চান। ’ ‘তাইলে দশ হাজার দিয়েন?’ ‘কম কতো?’ ‘ছয় হাজার টাকা দেবো।



এটা রাজধানীর কোনো পশুর হাটের দৃশ্য নয়। কথাগুলো মঙ্গলবার ফার্মগেটের ইন্দিরা রোডে আসা ছাগল ক্রেতা-বিক্রেতার।

রাজধানীতে কোরবানির পশু যে শুধু সিটি করপোরেশন অনুমোদিত হাটেই বিক্রি হচ্ছে তা নয়।   ইন্দিরা রোডের মতো  অননুমোদিত স্থানেও বিক্রি হচ্ছে কোরবানির পশু, বিশেষ করে ছাগল। সেদিক থেকে মঙ্গলবার পুরো রাজধানীই যেন পরিণত হয়েছে পশুর হাটে।

সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, তেজকুনী পাড়া, মণিপুরি পাড়া, সংসদ ভবন এলাকা, আসাদগেট, ধানমন্ডির বিভিন্ন এলাকা, শুক্রাবাদ, পশ্চিম পান্থপথ, সেন্ট্রাল রোড, হাতিরপুল, কলাবাগান, কাঁটাবন, মালিবাগ, মগবজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বসেছে পশুর অননুমোদিত হাট।

তবে এসব হাটে শুধু ছাগল দেখা গেছে। গরু নেই। ক্রেতারাও আসছেন। বিক্রিও জমেছে।

ধানমন্ডি-২৭ এর সামনে মঙ্গলবার দুপুরে কথা হয় নরসিংদী থেকে আসা ছাগলের ব্যাপরী জমিরের সঙ্গে।

তিনি বলেন, আমি গত ঈদেও এখানে খাসি নিয়ে এসছিলাম। গত রাতে ৩৫টি খাসি নিয়ে এসেছি। দুপুর পর্যন্ত ১৪টি বিক্রি হয়ে গেছে।

তিনি আশা করেন, ‘যেগুলো বাকি আছে তারও প্রায় অর্ধেক বিকেলের মধ্যে বিক্রি হয়ে যাবে। এরপর যে কয়টা থাকবে সেগুলো নিয়ে সন্ধ্যার পর অন্য কোনো হাটে চলে যাবো। ’

কেন হাটে যাননি?- প্রশ্নের উত্তরে ইন্দিরা বোড়ে আসা ব্যাপারী শহিদ বলেন, ‘হাটের চেয়ে এসব এলাকায় প্রতিযোগিতা কম। তাই হাটে যাইনি। তবে দাম হাটের মতোই। বেশি নেওয়া যায় না। ’

শহিদ ব্যাপারী এসেছেন ভালুকা থেকে। তার ১৪টি খাসির মধ্যে ৬টি বিক্রি হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারাই মূলত এসব হাটের ক্রেতা বলে জানান ব্যাপারীরা।

এদিকে, শুক্রাবাদে কথা হয় ব্যাংকার মো. সাইদুল ইসলামেরর সঙ্গে। তিনি ধানমন্ডির বাসিন্দা।

হাটে না গিয়ে তিনি কেন এখানে জানতে চাইলে মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘হাটে ভিড় অনেক। পরিবেশও অনেক বেশি নোংরা। তাছাড়া খাসি কোরবানি দেবো। তাই আর ঝামেলার মধ্যে যেতে চাইনি। ’

ব্যাপারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দু’একটি এলাকায় স্থানীয় দু-একজন প্রভাবশালী তাদের কাছ থেকে চাদা নিয়েছেন।

ইন্দিরা রোডের ব্যাপারীরা জানান, কয়েকটি ছেলে প্রত্যেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। আবার কোনো এলাকায় পুলিশও চাঁদা নিয়েছে বলে জানা যায়।

সংসদ এলাকায় আসা একজন ব্যাপারী বলেন, ‘ কর্তব্যরত দুজন পুলিশ আমাদের সব ব্যাপারীর কাছ থেকে চাঁদা নিয়েছেন। চাঁদা দেওয়ার আগ পর্যন্ত তারা আমাদের দৌড়ানি দিতেন। চাঁদা দেওয়ার পর আর পুলিশ সমস্যা করছে না। ’

তবে এলকার বাসিন্দারা অনেকেই আবার এসব হাটের বিপক্ষে। তারা বলেন, ‘যত্রতত্র হাটের ফলে এলাকায় গন্ধ ছড়ায়। এলাকা নোংরা হয়। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad