ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আবার এশিয়া এনার্জি, এবার উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তোলার প্রস্তাব!

হাসান আজাদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১০
আবার এশিয়া এনার্জি, এবার উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তোলার প্রস্তাব!

ঢাকা: নতুন নামে বড়পুকুরিয়ায় উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের প্রস্তাব দিয়েছে এশিয়া এনার্জি। এশিয়া এনার্জির মুল প্রতিষ্ঠান ‘জিসিএম রিসোর্স’ এর নামে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।



বির্তকিত এই কোম্পানিটির প্রস্তাব খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত দেয়ার জন্য এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠানো হয়েছে বলে জ্বালানি বিভাগের উর্ব্ধতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

ফুলবাড়ী ও বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুটির মধ্যে যে কোন একটিতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের মাধ্যমে চলমান বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলা করতে সরকার এখনই সিদ্ধান্ত নেবে এমনটা আশা করা হয়েছে এ প্রস্তাবে।

গত ১৯ অক্টোবর এ মর্মে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীকে চিঠি দিয়েছেন জিসিএম রিসোর্স এর প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা স্টিভ বাইওয়াটার।

ওই চিঠিতে তিনি সরকারের সঙ্গে ‘নতুন ভাবে’ কাজ করারও আগ্রহ প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন অ্যাসোসিয়েশন- জাইকা বিদ্যুৎ খাতের একটি মহাপরিকল্পনা করেছে। সেই পরিকল্পনা অনুসারে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ২০৩০ সালে স্থানীয় কয়লা দিয়ে ৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। এজন্য প্রতি বছর ২৬ মিলিয়ন টন কয়লা প্রয়োজন হবে। আর স্থানীয়ভাবে এই পরিমাণ কয়লার সংস্থান করতে হলে দুটি উন্মুক্ত পদ্ধতির কয়লাখনি দরকার।

এদিকে এশিয়া এনার্জির উর্দ্ধতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই মুহুর্তে বড়পুকুরিয়া উন্মুক্ত পদ্ধতিকে কয়লা উত্তোলনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এই কারণে আমরা সেখানে উন্নয়ন কাজ করতে চাই।

উপদেষ্টাকে জিসিএম রিসোর্সের প্রধান কর্মকর্তার দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ বলা হয, ফুলবাড়ী কয়লা প্রকল্প এরই মধ্যে কয়লা উত্তোলনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। আমরা আশা করছি সরকার আমাদের প্রস্তাব বিবেচনা করবে এবং তড়িৎ সিদ্ধান্ত নেবে। এ বিষয়ে চলতি বছরের ১২ জানুযারি জ্বালানি উপদেষ্টাকে প্রথম চিঠি দেওয়া হয়েছিল বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি বিষয়ে ওই চিঠিতে বলা হয়, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করলে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও শিল্পকারখানা জন্য তা হবে সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য। দ্বিতীয়ত এর মাধ্যমে কয়লার সব্বোর্চ্চ উত্তালন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। ফলে সরকার অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান হবে।

এ বিষয়ে গত বছরের অক্টোবর মাসে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে নতুন চিঠিতে বলা হয়, ‘জিসিএম রিসোর্স বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির উত্তরে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করতে চায়। ’

একই সঙ্গে বড়পুকুরিয়ায় এরইমধ্যে বড়পুকুরিয়ায় ভূতাত্ত্বিক জরিপ শেষ করেছে উল্লেখ করে জিসিএম রিসোর্সের প্রধান নির্বাহী তার চিঠিতে বলেন, ‘সরকার অনুমতি দিলে বড়পুকুরিয়া এবং ফুলবাড়ির  কয়লার সর্Ÿোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। ’

এর আগে গত মাসে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি নিয়ে এক বৈঠক হয়। বৈঠকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে পুনর্বাসন কাজ শেষ করা এবং একই সঙ্গে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লাখনি উন্নয়ন করার সিদ্ধান্ত হয়।

প্রাথমিকভাবে ১৮০০ একর জমিতে এই উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন হবে।

বর্তমানে বড়পুকুরিয়ায় ভূগর্ভস্থ পদ্ধতিতে বছরে ১০ লাখ টনের কিছুটা কম কয়লা উত্তোলন হয়। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে হলে বছরে ৬০ লাখ টন কয়লা উত্তোলন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশ সময় : ১৯১৮, ১৫ নভেম্বর, ২০১০।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।