অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, আমরা দীর্ঘকাল অপেক্ষা করেছি, আপনি যেন রাজনীতি ও আইন কাকে বলে তা বোঝেন। রাষ্ট্র সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড পিস স্টাডিজের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফরহাদ মজহার বলেন, সংবিধান, প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক এবং ভূরাজনৈতিক সম্পর্কের দ্বারা যে রাষ্ট্র আমাদের ওপর হাজির রয়েছে— এই রাষ্ট্র থেকে মুক্ত না হলে নির্বাচন নিয়ে কথা বলার কোনো অর্থ নেই। আপনি তো গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এসেছেন। কিন্তু, আপনি গণঅভ্যুত্থানের মহানায়ক নন। আপনি গণঅভ্যুত্থানের কেউ নন।
তিনি বলেন, ড. ইউনূসকে আমাদের গ্রহণ করার কারণ হলো, আন্তর্জাতিক এবং ভূরাজনৈতিক ক্ষেত্রে আমাদের দুর্বল রাষ্ট্রের যে দুর্বলতা, সেগুলো মোকাবিলা করতে পারব— এই বিশ্বাস। আমাদের মনের কথা বুঝবেন এবং গণঅভ্যুত্থানের অভিপ্রায়টুকু উপলব্ধি করবেন। কিন্তু তিনি (ড. ইউনূস) তা বোঝেননি।
প্রধান উপদেষ্টার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের প্রধান যে শর্ত ছিল, সেটি হলো ফ্যাসিস্ট সরকার ও ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে উৎখাত করে নতুন রাষ্ট্র প্রক্রিয়া শুরু করা। এই অভিপ্রায়কে বুকে ধারণ করে আবু সাঈদ, মুগ্ধরা জীবন দিয়েছে। এত বড় আত্মত্যাগের পরে আপনি (ড. ইউনূস) কিসের ভিত্তিতে নির্বাচনের উদ্যোগ নিলেন?
এই দার্শনিক আরও বলেন, আপনি (ড. ইউনূস) কোনো সংবিধান মেনে কাজ করছেন না। সংবিধানের কোথায় উপদেষ্টা সরকার আছে? আপনি নিজেই তো অবৈধ। আপনার প্রথম কাজ ছিল নিজের বৈধতা নিশ্চিত করা। আপনার বৈধতা দেওয়ার একমাত্র পথ ছিল গণঅভ্যুত্থান। গণঅভ্যুত্থান সংবিধান মেনে ঘটেনি। আপনার একমাত্র বৈধ রাজনৈতিক ও আইনি ভিত্তি হচ্ছে সাংগঠনিক ক্ষমতা। এই সাংগঠনিক ক্ষমতার বাইরে আপনার কোনো বৈধতা নেই। আপনি একটি অবৈধ সরকার।
তিনি আরও বলেন, আমরা অবশ্যই দিল্লি-বিরোধী। দিল্লির কাছ থেকে আমাদের হিস্যা আদায় করব। কিন্তু ভারত-বিরোধিতার নামে বাংলাদেশে প্রবেশের সবকিছু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দেওয়া হচ্ছে।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমানসহ অনেক নেতৃবৃন্দ।
ডিএইচবি/এমজে