ঢাকা: মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী জানিয়েছেন, দূরত্ব থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ও মেক্সিকো একই মূল্যবোধে বিশ্বাসী—বন্ধুত্ব, সংহতি ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য—যা আমাদের দুই জাতিকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসে। মেক্সিকোর বাংলাদেশ দূতাবাসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।
বুধবার (২৭ আগস্ট) মেক্সিকোর বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, মেক্সিকো সরকারের আমন্ত্রণে সফররত বাংলাদেশের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের (এনডিসি) একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল মেক্সিকোর বাংলাদেশ দূতাবাসে এক পরিচিতি অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর মধ্যে বিদ্যমান সুসম্পর্ক ও সহযোগিতা আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়।
রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী দূতাবাসে প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানান এবং দূতাবাসের চলমান কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা দেন। এ উপলক্ষে দূতাবাসে ‘বাংলাদেশ–মেক্সিকো দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক: পারস্পরিক উন্নয়নের অংশীদারিত্ব’ শীর্ষক একটি প্রেজেন্টেশন দেওয়া হয়। এটি পরিচালনা করেন হেড অব চ্যান্সেরি আব্দুল্লাহ আল ফরহাদ।
প্রেজেন্টেশনে গত পাঁচ দশকে দুই দেশের সহযোগিতার অগ্রগতি, বিভিন্ন সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা, কৃষি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, এয়ার সার্ভিস চুক্তি ও বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মে সম্ভাবনাময় অংশীদারিত্ব তুলে ধরা হয়। ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে মেক্সিকোতে রপ্তানি ৭১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছায়—যা গত ৬ মাস ৯০ মিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে। লাতিন আমেরিকায় মেক্সিকোকে বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে বলেন, দূরত্ব থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ও মেক্সিকো একই মূল্যবোধে বিশ্বাসী—বন্ধুত্ব, সংহতি ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য—যা আমাদের দুই জাতিকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে এই সফর পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়াবে এবং আমাদের দীর্ঘদিনের অংশীদারিত্বকে আরও মজবুত করবে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এনডিসি জাতীয় নিরাপত্তা, কৌশল ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্ব গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এর মূলমন্ত্র ‘জ্ঞানই নিরাপত্তা’ আমাদের ভবিষ্যৎ নেতাদের আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে আরও প্রস্তুত করে তুলছে।
প্রতিনিধিদলটির নেতৃত্ব দেন রিয়ার অ্যাডমিরাল এ কে এম জাকির হোসেন এবং এয়ার ভাইস মার্শাল এম মুস্তাফিজুর রহমান।
বাংলাদেশি সদস্যদের মধ্যে ছিলেন এয়ার কমডর মো. রফিউল হক, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ কায়সার রশিদ চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিরুল আজিম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রইসুল ইসলাম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ নওরোজ নিচোশিয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খোন্দকার শাহরিয়ার সাব্বির, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহজাদ পরিবেজ মোহিউদ্দিন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সোহেল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মহবুবুল আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শহীদ চৌধুরী, কমডর মোহাম্মদ ফজলার রহমান, কমডর মাসুদুল করিম সিদ্দিক, এয়ার কমডর রাহিম মাহমুদ, যুগ্ম সচিব শাহিদা সুলতানা, যুগ্ম সচিব এস এম নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সচিব লুবনা সিদ্দিক এবং ডিডিজি শাহ আহমেদ ফজলে রাব্বি।
আন্তর্জাতিক সদস্যদের মধ্যে ছিলেন কমডর প্রমোদ জর্জ থমাস (ভারত), এয়ার কমডর রাজেশ বর্মা (ভারত), কর্নেল হাসান মনাহী এম আলনাতিফি (জর্ডান), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মেশাল এম ই এম এ আলসালেহ (কুয়েত) এবং কর্নেল জেরি কানটিয়োক মাইগারি (নাইজেরিয়া)।
অনুষ্ঠানে মেক্সিকো ডিফেন্স এর প্রতিনিধি লেফট্যানেন্ট কর্নেল সেবাস্টিয়ান ব্যারিগেট উপস্থিত ছিলেন।
টিআর/আরআইএস