ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

সিটবেল্ট-হেলমেট ব্যবহারে সাড়া মিললেও পথচারীরা বেপরোয়া

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১০

ঢাকা: সিটবেল্ট ও হেলমেট ব্যবহারের বাধ্যবাধকতায় ব্যাপক সাড়া মিললেও নির্ধারিত স্থান দিয়ে রাস্তা পার হতে নগরবাসী এখনও অনীহ। তাদের সামলাতে ট্রাফিক পুলিশের ঘাম ছুটে যাচ্ছে।



সোমবার বেলা সাড়ে বারোটায় রাজধানীর ব্যস্ততম সোনারগাঁ মোড় ঘুরে সোমবার এ দৃশ্য চোখে পড়েছে।

দেখা গেছে, বিপজ্জনক গতিতে ছুটে যাচ্ছে বাস, প্রাইভেট কার, সিএনজি অটো রিক্সা, মোটর সাইকেলসহ নানা যানবাহন। তার চেয়েও দ্রুতগতিতে রাস্তা পার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। জীবনটাকে বাজি রেখে। যে কোনও মুহূর্তে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা সত্ত্বেও পাশে থাকা নিরাপদে সড়ক পারাপারের নির্ধারিত স্থানের ধার ধারছে না কেউ।

তবে ওই একই সড়কে দেখা গেল, প্রাইভেট কার চালকরা প্রত্যেকেই সিটবেল্ট বেঁধেই গাড়ি চালাচ্ছেন। মোটরসাইকেল চালকরাও পরে নিয়েছেন হেলমেট।

সম্প্রতি যানচালক ও পথচারীদের জন্য নির্ধারিত কয়েকটি আচরণ নিশ্চিত করতে সোমবার সকাল থেকে রাজধানীসহ সারা দেশে শুরু হয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিশেষ এ অভিযান।

পুলিশ, র‌্যাব, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপ (বিআরটিএ) ও দেশের সব জেলা প্রশাসন যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করছে।

সোনারগাঁও মোড়ে গিয়ে দেখা গেল একজন ট্রাফিক পরিদর্শক এবং একজন সার্জেন্ট সড়ক পারাপারে সাধারণ মানুষকে পাশের আন্ডারপাস বা জেব্রা ক্রসিং ব্যবহারে অনুরোধ করছেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা? তাদের কথায় পাত্তাই দিচ্ছেন না পথচারীরা।

রীতিমতো ধাক্কাধাক্কি করেই তারা চিরাচরিত নিয়মে রাস্তা পার হচ্ছেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।

বিশেষ অভিযান সম্পর্কে ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) মো. গোলাম কিবরিয়া বাংলানিউজকে জানান, সকাল থেকেই প্রতিটি গাড়ির চালক সিটবেল্ট বেঁধে গাড়ি চালাচ্ছেন।

তিনি বলেন, ‘মোটর সাইকেল চালক ও আরোহীরা আগে থেকেই হেলমেট ব্যবহার করতেন, আজ প্রায় সবাই হেলমেট ব্যবহার করছেন। ’

গাড়ি চালানো অবস্থায় মোবাইল ফোনে কাউকে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে না বলেও দাবি করেন তিনি।

তবে সকালে হেলমেট ব্যবহার না করার কারণে একজনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান গোলাম কিবরিয়া।

এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে নগরবাসী হেলমেট ও সিটবেল্ট সংক্রান্ত আইনকে শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. আশরাফ বাংলানিউজকে বলেন, ‘শুধুমাত্র চারটি আইনের প্রতি যদি রাজধানীর যানচালক ও পথচারীরা শ্রদ্ধাশীল হয়, তাহলে একদিকে যেমন সড়ক দুর্ঘটনা কমে যাবে তেমনি রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশেরও দরকার হবে না। ’

তিনি জানান, আইনগুলো হচ্ছে- লেন মেনে গাড়ি চালানো, অবৈধভাবে যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং না করা, যত্রতত্র যাত্রী ওঠানো ও নামানো থেকে বাস চালকদের বিরত থাকা এবং সিগন্যাল মেনে চলা।

তবে পথচারীদের ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পারাপারের বিষয়ে হতাশ নগরীর ট্রাফিক পুলিশ।

সার্জেন্ট আশরাফ বলেন, ‘বহু মানুষকে ওভারব্রিজ বা আন্ডারপাস ব্যবহারে বাধ্য করতে ট্রাফিক পুলিশের অবিরাম চেষ্টা থাকে। কিন্তু সাধারণ মানুষ ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পার হতে বেশি পছন্দ করে। ’

ফুটপাতে রেলিংঘেরা অংশে মানুষকে পাঠানো হলেও তারা রেলিং টপকে রাস্তায় নেমে আসে। এ অবস্থায় ট্রাফিকের কিছুই করার থাকে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

রাজধানীর বিজয় সরণি এবং মানিক মিয়া অ্যাভেনিউ’র দু’টি স্পটে ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি, ডিএমপি ট্রাফিক-পশ্চিম) সেলিম মো. জাহাঙ্গীর আজকের অভিযান নিয়ে সন্তুষ্ট।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রায় সব গাড়ির চালকই সিটবেল্ট ব্যবহার করছেন। গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনেও কথা বলছেন না। এতেই বুঝা যায় সাধারণ মানুষ নতুন আইনের বিষয়ে যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল। ’

সাধারণ মানুষের কাছে মিডিয়া নতুন আইনটি তুলে ধরার কারণেই এমন অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সেইসঙ্গে মিডিয়াকে ধন্যবাদও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।