বরগুনা: গাইবান্ধার পর এবার বরগুনার বেতাগীতে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির বিস্কুট খেয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। গুরুতর অসুস্থ ২৫ জনকে বেতাগী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রোববার দুপুর ১টার দিকে বেতাগী পৌর এলাকার বেতাগী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বেতাগী গালর্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংলগ্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির আওতায় ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে বিস্কুট বিতরণ করা হয়। এ বিস্কুট খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই দুটি বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে গুরুতর অবস্থায় ২০ জনকে বেতাগী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকীরা নিজম্ব ব্যবস্থাপনায় বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে অভিভাবকরা জানায়।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিার্থীরা হলো- মৃন্ধা, সনিয়া, মুন্না, খাদিজা, বাদন, মিতু, দিশা, মুসফিক, ইতি, সিয়াম, অনি, মিম, নয়ন, সিফাত, নাঈম, সাজিন, ইলা, আফরোজা, মারিয়া ও আবদুল্লাহ।
অসুস্থ ছাত্র-ছাত্রীদের ডাবের পানি এবং স্যালাইন দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে হাসপাতাল সূত্র জানায়। ঘটনার পর পরই আরও অসুস্থ হওয়ার আশংকায় বিদ্যালয় দু’টি ছুটি ঘোষণা করা হয়। বেতাগী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জেসমিন আক্তার জানান, বিস্কুট খাওয়ার পর পরই ছাত্র-ছাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. রুস্তম আলী বলেন, ‘এতগুলো শিশু একসঙ্গে কী কারণে অসুস্থ হয়েছে তার সঠিক কারণ বলা যাচ্ছে না তবে বিস্কুট খেয়ে অসুস্থ হতে পারে। ’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফিরোজ আহমেদ হাসপাতালে পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হয়েছে। কী কারণে এ ঘটনা ঘটছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখন থেকে উপজেলার সব বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের বিস্কুট খাওয়ানো বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছি। ’
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. হারুন অর রশিদ জানান, বিষয়টি তিনি সংশ্লিস্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
বিস্কুট বিতরণে দায়িত্ব থাকা সুশীলনের জেলা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমরা বিস্কুটে কোনো ত্র“টি পাইনি। তারপরও পরীক্ষার নিরীক্ষার জন্য বিস্কুট বিতরণ বন্ধ রাখা হয়েছে। ’
উল্লেখ্য, গতবছরও বরগুনা সদর উপজেলার প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী এ জাতীয় বিস্কুট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল।
যশোরের রেসকো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ফ্যাক্টরির উৎপাদিত ওইসব বিস্কুটের কার্টুনের গায়ে উৎপাদনের তারিখ লেখা রয়েছে ১৬ অক্টোবর ২০১০ এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার সময় দেওয়া হয়েছে ১৬ এপ্রিল ২০১১। কিন্তু বিস্কুটের প্যাকেটে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার কোনো সময় লেখা নেই। বেসরকারি সংস্থা সুশীলন বেতাগীতে বিস্কুট বিতরণের দায়িত্বে রয়েছে।
বাংলাদেশ সময় : ২২০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১০