ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

অবশেষে বিয়ের সানাই বাজলো শৈলীর বাড়িতে

জাহিদুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১০
অবশেষে বিয়ের সানাই বাজলো শৈলীর বাড়িতে

সাভার: শেষ পর্যন্ত নববধূর সাজে নতুন জীবন শুরু করলো বখাটেদের উৎপাতে বিপন্ন হয়ে পড়া সাভারের এক তরুণী। বখাটেদের হুমকিতে থেমে যাওয়া শায়রা শাওলিন শৈলীর বিয়ের সানাই মধুর সুরে ফের বেজে উঠে বিয়ে বাড়ির সবাইকে সবাইকে আনন্দে ভাসিয়েছে।



স্থানীয় সংসদ সদস্যের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় বিয়ে পড়ানো হয় তার। অন্যদিকে আটক করা হয় ফয়সাল, মাহমুদুল হাসান, মধু ও বক্কার নামে চার বখাটেকে।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার দুপুরে শৈলীর বিয়ের দিন ধার্য্য ছিল। সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই বিয়ের অনুষ্ঠানস্থল পৌর এলাকার পার্বতীনগর মহল্লায় কনের বাড়ির চারপাশে ২৫/৩০টি মোটরসাইকেল নিয়ে সদলবলে মহড়া দিতে শুরু করে এলাকার বখাটে যুবক সোহাগ।

পারিবারিক সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, একপর্যায়ে তারা দোতলার বাসা থেকে অপহরণের চেষ্টা করে শৈলীকে। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চার বখাটেকে আটক করলেও পালিয়ে যায় সোহাগ।

অপরদিকে বখাটে সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে বিয়ে ভেঙ্গে দেয় বরপক্ষ।

এ খবরে ভেঙ্গে পড়ে গোটা পরিবার। থমকে যায় সকল আয়োজন। দিশেহারা হয়ে পড়েন শৈলীর বাবা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ। অপরদিকে ঘটনার আকস্মিকতায় ও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশংকায় ভেঙ্গে পড়ে শৈলী।

এ খবর জানতে পেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় শৈলীর বাসায় আসেন স্থানীয় সাংসদ তালুকদার মোহাম্মদ তৌহিদ জং মুরাদ। তার অনুরোধে বরপক্ষ ফিরে আসে বিয়ের আসরে। বাড়িতে ফের বিয়ের বাজনা বেজে ওঠায় যেন প্রাণ ফিরে পায় কনের পরিবার ও উপস্থিত অতিথিরা। তিন লাখ টাকা দেন মোহরে অভিভাবক হিসেবে সাংসদ মুরাদ শৈলীকে তুলে দেন বর সাইফুল ইসলামের হাতে।

অপরদিকে এসব আয়োজনের মাঝেই পুলিশ আটক করে বখাটে সোহাগের বাবা মুজিবুর রহমানকে।

শৈলীর বাবা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ আবেগজড়িত কান্নায় বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি খুশী, খুব খুশী। ভেঙ্গে যাওয়া বিয়ে বাড়িতে আবার সানাইয়ের সুর বেজে উঠেছে। এর চাইতে বাবা হিসেবে আমার আর কিই বা চাওয়ার আছে!’

সাংসদ মুরাদ বলেন, ‘বিয়ে ভেঙ্গে যাবার খবর শোনা মাত্রই আমি ওই বাড়িতে ছুটে যাই। স্বাভাবিকভাবেই বরপক্ষ ছিলো আতংকিত। আমরা তাদেরকে তাদের আশ্বাস্ত করে বিয়ের আয়োজন সম্পন্ন করি। ’

বিয়ের উকিল-বাবা হন সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার।

সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বখাটেদের জন্য কোনও ছাড় নেই। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের সবাইকে গ্রেপ্তার করবো। ’

তিনি জানান, গ্রেপ্তার যুবকদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ না পাওয়ায় আপাতত কার্যবিধির ৫৪ ধারায় তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেবার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad