ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ডিসিসির কসাইখানা আছে, তবু নেই!

মান্নান মারুফ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০৩ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০১০

ঢাকা: যথাযথ পরিচর্যার অভাবে ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) পাঁচটি কসাইখানা এখন বেহাল। এক সময় এগুলো থেকে ভালো অঙ্কের রাজস্ব এলেও এখন তা কমতে কমতে শূন্যের কোটায় পৌঁছেছে।

তবে কাজ না করেই কাজ করার নামে ডাক্তার, কসাই, পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ অনেকেই নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন ।  

ডিসিসি’র সূত্র মতে, গত অর্থবছরে হাজারীবাগ কসাইখানা ইজারা ওেয়া হয়েছিল ৯ লাখ টাকায়। কাপ্তানবাজার কসাইখানার ইজারা ছিল ১৩ লাখ টাকা ও মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের ভেতরের কসাইখানা ইজারা দেওয়া হয়েছিল ১২ লাখ টাকায়। অবশ্য অব্যাহত লোকসানের মুখে শেষ পর্যন্ত ইজারাদাররা জামানতের টাকা রেখেই পাততাড়ি গুটিয়েছেন। এরপর ওই তিনটি কসাইখানার জন্য এ পর্যন্ত তিন তিনবার ইজারার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। লোকসানের আশঙ্কায় কেউই এগুলো ইজারা নিতে আগ্রহ দেখাননি। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে ডিসিসি’র সম্পত্তি (এস্টেট) বিভাগের নিয়ন্ত্রণে ইজারা কালেকশনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। মিরপুর বুদ্ধিজীবী মাজারের পাশে ও মিরপুর ১১ নম্বর কাঁচাবাজারের ভেতরের কসাইখানা দুটির অবস্থা আরও নাজুক।

ডিসিসি’র মাত্র পাঁচটি অঞ্চলে কসাইখানা রয়েছে। অথচ এর বাইরে আরো তিনটি অঞ্চলে বিভিন্ন পদে লোক নিয়োগ করে নিয়মিত বেতন-ভাতা দেওআ হচ্ছে। আটটি অঞ্চলেই অর্গানোগ্রামের শূন্যপদের বিপরীতে এরই মধ্যে তিনজন ভেটেরিনারি ডাক্তার, ১৮ জন কসাই, ১৮ জন সিলম্যান, ২০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং ১০টি আঞ্চলিক অফিসের জন্য ১৮ জন ভেটেরিনারি পরিদর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আরো পাঁচজন ভেটেরিনারি ডাক্তার নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, জবাইয়ের আগে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার নিয়ম থাকলেও এ নিয়ে কারোরই মাথাব্যথা নেই। ভেটেরিনারি ডাক্তারদের বসার কোনো ব্যবস্থা নেই, নিয়মিত পানি ও বিদ্যুৎ থাকে না। পশু রাখার পর্যাপ্ত জায়গাও নেই।

সূত্রমতে, ডিসিসিতে একমাত্র ভেটেরিনারি শাখার প্রধান ডা. আজমত আলী স্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত। বাকি তিন জন ডাক্তার প্রেষণে আসা বিসিএস ক্যাডার। তাদের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার বেতন স্কেলের বেতন-ভাতার সঙ্গে আরও ২০ ভাগ প্রেষণ ভাতা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তারা কোনো কাজ না করে বসে বসে মাস শেষে বেতন-ভাতা নিচ্ছেন। পরিতাপের বিষয়, গুলশান-১ নম্বর পার্কের পাশের কসাইখানাটি পাঁচ বছর আগে ডিসিসি কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ করে। অথচ ওই কসাইখানার নামেও লোক নিয়োগ দেখিয়ে বেতন-ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকা বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত  অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কারণ পদ থাকায় সরকার প্রেষণে লোক নিয়োগ দিয়ে পাঠায়। ’

আগামী অর্থবছরে কসাইখানাগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

সাদেক হোসেন খোকা বলেন, ‘বিষয়টির দেখাশুনা করে এস্টেট এবং প্রকৌশল বিভাগ। তাদের পক্ষ থেকে মেরামতের প্রস্তাব এলেই করা হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৪ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।