ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

১০ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে জেলেরা

ছোটন সাহা, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১০
১০ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে জেলেরা

ভোলা: ইলিশ প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরার উপর ১০ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ভোলার দুই লাখের বেশি জেলে সোমবার ফের নদীতে নেমেছে। দীর্ঘ অলস সময়ে কাটানোর পর হঠাৎ করেই যেন তাদের মাঝে ফিরে এসেছে প্রাণ চাঞ্চল্য।

একই সঙ্গে মৎস্য ঘাটগুলোও হয়ে ওঠেছে সরগরম।

গত ১৫ অক্টোবর থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যান্ত ভোলার ভেদুরিয়া থেকে পটুয়াখালীর চর রুস্তম ও ইলিশা থেকে চাঁদপুরের চর পিয়াল পর্যন্ত মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় এলাকায় সব ধরনের মাছ শিকার বন্ধ ছিল।

ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার স্লুইজ ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, ইলিশ প্রজনন মৌসুমে ১০ দিনের নিষেধাজ্ঞা সময়ে এ উপজেলার হাজার হাজার জেলে নদীতে মাছ ধরতে পারেনি। যার ফলে ওই সব জেলেরা ছিল বেকার। রোববার রাত ১২টায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা পার হয়ে গেলে সোমবার ভোর থেকেই জেলেরা জাল, নৌকা ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে নদীতে মাছ শিকারে নেমে পড়েছে।

ভোলার ইলিশা বিশ্বরোড ঘাটে সোমবার সকালে গিয়ে মৎস্যজীবীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, প্রতি বছরের জ্যেষ্ঠ থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত মূলত ইলিশের ভরা মৌসুম। কিন্তু ভরা মৌসুমের তিন মাস অতিবাহিত হলেও জেলেদের জালে তেমন মাছ পড়েনি। এর মধ্যে আবার রোজার ঈদের পর দিন থেকে নদীতে মাছ পড়া শুরু করে। কিন্তু কয়েক দিন পরেই আবার চলে আসে ১০ দিনের নিষেধাজ্ঞা সময়।

মৎস্যজীবীরা আরও জানান, সোমবার নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা শেষ হয়েছে। নদীতেও মাছ পড়ছে। তাদের জালে আটকাচ্ছে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ।

বিশ্বরোড এলাকার মৎস্যঘাট ব্যবসায়ী মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘নদীতে মাছ পড়ায় এ ঘাটে এখন জেলেদের মাঝে প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। সকালে শত শত খাড়ি মাছ বিকিবিনি হয়েছে এ ঘাট থেকে। ’
 
নদীতে মাছ ওঠাকে কেন্দ্র করে এখাকার মৎস্য ব্যবসায়ী ও আড়ৎদাররা তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছেন বলেও জানান তিনি।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ভোলার সাত উপজেলায় ছোট বড় মাছ ঘাট রয়েছে দেড়শো’টি। বড় ঘাটগুলোর মধ্যে ইলিশা চড়ার মাথা, বিশ্বরোড, তুলাতলী, মাঝের চর, হাকিমুদ্দিন, মির্জাকালু, ভবানীপুর, স্লুইজ ঘাট, কাটার ঘাল, বরিশালের ঘাট, পাইলট ঘাট, হুজুরের খাল, ঢালচর, বেতুয়া, চর ফয়েজউদ্দি, হাজির হাট, চৌমুহনি, নাজিরপুর, নাদের মিয়ার হাট, ও কাঠির মাথা। এ সব ঘাট থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার ঝুড়ি মাছ ঢাকা, চট্রগ্রাম, চাদপুর ও বরিশাল রপ্তানি হয়। সেখান থেকে আবার কিছু অংশ পাশ্বর্র্তী দেশ ভারতেও রপ্তানি হচ্ছে।

বিশ্বরোডের মাছ ঘাটের আড়ৎদার সমিতির সদস্য ইব্রাহিম বলেন, এ এলাকার ৪টি ঘাট থেকে প্রতিদিন ২৫/৩০ লাখ টাকার মাছ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি হয়। নিষেধাজ্ঞার সময় পার হওয়ার প্রথম দিন (সোমবার) ৫ লাখের বেশি টাকার লেনদেন হয়েছে।

এদিকে, ভোলার বিভিন্ন মাছ বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে স্থানীয় বাজারগুলোতে প্রচুর সংখ্যক মাছ উঠলেও দাম কিছুটা চওড়া। প্রতি হালি বড় সাইজের মাছ ১৫ শ’ থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ