ঢাকা: ‘... বাচ্চাদের পেটা। সাংবাদিক পেটালে কিচ্ছু হয় না।
আর তার আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেন কনস্টেবল রশিদ ও রায়হান।
মোটর সাইকেলের চাবি দিতে রাজি না হওয়ায় সার্জেন্ট মাহবুবের এ নির্দেশ দুই কনস্টেবলকে।
জনগণের বন্ধু দাবি করা পুলিশের এ অপ্রীতিকর ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শিকার হলেন দৈনিক কালের কণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার অমিতোষ পাল ও দৈনিক যায়যায়দিনের সিনিয়র রিপোর্টার নিখিল ভদ্র।
সকাল সোয়া ১১টায় আরও অন্যান্য গাড়ির মতো তারাও মোটর সাইকেল নিয়ে ফার্মগেটের একটি রাস্তা পার হতে যাচ্ছিলেন।
অমিতোষ পাল বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ ঘটনা আমাকে এতোটাই অবাক করেছে যে, পুলিশের এক কর্মকর্তা জোর করে মোটর সাইকেলের চাবি নিতে চায়!’
তিনি বলেন, ‘চাবি দিতে রাজি না হওয়ায় অকথ্য গালিগালাজ করতে থাকে মাহবুব। এক সময় তার নির্দেশ পেয়ে দুই কনস্টেবল আমাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। ’
পরে দায়িত্বরত পরিদর্শক রফিককে বিষয়টি অবগত করলে তিনি রশিদকে ডেকে আনেন। রশিদ ঘটনা শিকার করলে রফিক আমাদের লিখিত অভিযোগ করতে বলেন। এ সময় রায়হান রশিদকে বলতে থাকে, ‘অভিযোগ দেয় দিক। সাংবাদিক মারলে কারো চাকরি যায় না। তুই কোনো চিন্তা করিস না। ’
এদিকে, ঘটনার পরপরই ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ও বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে নেতারা সেগুনবাগিচাস্থ রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে জড়ো হয়েছেন। তারা এ ঘটনায় কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কর্মকর্তারা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
পুলিশের ডিসি ট্রাফিক (পশ্চিম) সেলিম মো. জাহাঙ্গীর বাংলানিউজকে জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। অভিযুক্ত সার্জেন্টকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পশ্চিম জোনের অতিরিক্ত কমিশনার ইলিয়াস শরিফকে প্রধান করে দু্ই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্য মিরপুর ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনার সাইদুর রহমান। কমিটিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া অভিযুক্ত তিন পুলিশ সদস্যকে ক্লোজ করা হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, ২৫ অক্টোবর ২০১০