ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রূপগঞ্জে সংঘর্ষ: হয়রানির আশঙ্কায় হাসপাতাল থেকে পালিয়েছেন গুলিবিদ্ধরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১০

ঢাকা: রূপগঞ্জে শনিবারের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধরা প্রশাসনিক ‘হয়রানির আশংকায়’ হাসপাতাল থেকেও পালিয়ে গেছেন।

গুরুতর আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি হলেও অবস্থান করেননি।

অন্য হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে যাওয়ার কথা বলে সরকারি হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে গেছেন তারা।

আর যাদের জরুরি অপারেশনের জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি, তারা হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকেই পালিয়ে গেছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ‘গুলিবিদ্ধদের’ পালিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেছেন, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শরীর থেকে গুলি বের করার সময়ও পাননি চিকিৎসকরা।

গত শনিবার সেনা হাউজিং প্রকল্পের জমি কেনাকে কেন্দ্র করে রূপগঞ্জের ২৪ মৌজার অর্ধ শতাধিক গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশ ও র‌্যাবের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর বেপরোয়া গুলিবর্ষণের ঘটনায় আহতদের পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে।

সেদিন দুপুর আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত গুলিবিদ্ধ ১৯ জনকে জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর ছয়জনকে পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে রাত ৮টায় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও বক্ষব্যাধী হাসপাতালে পাঠানো হয় দু’জনকে।

গুলিবিদ্ধ চারজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩২ নম্বর ওয়ার্ড, দুইজনকে অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে (২৪) ভর্তি করে চিকিৎসা চলতে থাকে।    

হাসপাতালে ভর্তির পর বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের আনাগোনায় আহতরা হয়রানির আশংকা করতে থাকেন আহতরা। ফলে রোববার থেকেই পালাতে থাকেন তারা।

বুক ও কাঁধে একাধিক গুলিবিদ্ধ ট্রলার চালক মকবুল হোসেনকে তার স্বজনরা ক্লিনিকে ভর্তির কথা বলে নিয়ে যান। সোমবার সকালে পালিয়ে যান মাসুম (১৫), মোমেন হোসেন (২০) ও আনোয়ার মিয়া (৩২)।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. এইচ এ নাজমুল হাকিম শাহীন বাংলানিউজকে জানান, সোমবারের মধ্যেই চারজন গুলিবিদ্ধ হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছেন।

তিনি বলেন, গুলিবিদ্ধ হওয়ার কারণে তাদের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। চিকিৎসার অভাবে তাদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।  

পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর হওয়া আইয়ুব আলী (৩০), শওকত আলী (৪০), বাদশা মন্ডল (৩৭), আরিফ হোসেন (১৫), ইউনুস আলী (৫৫) ও মোহাম্মদ আলম (৪০) এর খোঁজও পাওয়া যায়নি। গ্রেপ্তার আশংকায় অন্যত্র চলে গেছেন।

বক্ষব্যাধি হাসপাতাল থেকেও রোববার রাতে পালিয়ে গেছেন আবু তাহের নামে আরেকজন।

আহত শওকত আলীর চাচাতো ভাই মসুর গ্রামের সামসুল আলম ও তাহের আলী জানিয়েছেন, জমি বিক্রি করতে না চাওয়ায় গুলি চালিয়ে আহত করা হলো। আবার মামলার আসামিও বানানো হলো গ্রামবাসীকে। গ্রেপ্তার-হয়রানির আশংকায় হাসপাতালের বাইরে নিয়ে যেতে হয়েছে আহতদের। চিকিৎসার পরিবর্তে তাদের এখন পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, ২৫ অক্টোবর, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।