ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জরুরি অবস্থা মোকাবিলার শতভাগ প্রস্তুতি থাকলে তবেই জাহাজভাঙ্গার অনুমতি

এমএকে জিলানী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১০
জরুরি অবস্থা মোকাবিলার শতভাগ প্রস্তুতি থাকলে তবেই জাহাজভাঙ্গার অনুমতি

ঢাকা: জরুরি অবস্থা মোকাবিলার শতভাগ প্রস্তুতি না থাকলে জাহাজভাঙ্গার অনুমতি দেওয়া হবে না। এছাড়া ছয়মাস পর পর দুর্ঘটনা মোকাবিলার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মহড়ার আয়োজন করতে হবে সংশ্লিষ্ট শিল্প মালিকদের।



জাহাজভাঙ্গা শিল্পের খসড়া বিধিতে এ প্রস্তাব করা হয়েছে। আইনি দিক পর্যালোচনার জন্য খসড়াটি গত বৃহস্পতিবার আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।   চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এটি মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে উত্থাপন করা হবে।

খসড়া বিধির ৯-এর ১-এ বলা হয়েছে, ‘প্রত্যেক পরিচালনাকারী তার প্রত্যেক কার্যক্রমস্থলে জরুরি অবস্থা মোকাবিলার জন্য পরিকল্পনা কার্যক্রম চালু করার আগে তফসিল ৬ অনুযায়ী নির্দিষ্ট ছকে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে একটি প্রতিবেদন দাখিল করবেন। ’

ওই প্রতিবেদনে যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে সেগুলো হচ্ছে, পরিকল্পনা দাখিলকারীর নাম ও ঠিকানা; জরুরি অবস্থাকালে প্রতিষ্ঠানের অপরিহার্য কর্মীদের নাম, পদবি, দায়িত্ব ও যেসব প্রতিষ্ঠানের সহায়তা চাওয়া হতে পারে; কী ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, কী কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, কী কী বিপদ বা ক্ষতি হতে পারে ও সম্ভাব্য দুর্ঘটনা পরিহারকল্পে গৃহীত ব্যবস্থাদি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাদি সম্বলিত প্রাথমিক বিপদ বিশ্লেষণের তথ্য; বিপজ্জনক পদার্থের নাম, পরিমাণ, বিষাক্ততা সম্পর্কিত উপাত্ত ও অবস্থান এবং অপরিহার্য কর্মীদের সুনির্দিষ্ট কর্মস্থল ও জরুরি নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য সম্বলিত কার্যক্রম সংক্রান্ত তথ্যাবলী।

বিপজ্জনক পদার্থের কোনো প্রকার রূপান্তর ঘটার আশঙ্কা থাকলে তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও বিপজ্জনক পদার্থের বিশুদ্ধতা সম্পর্কিত বিবরণও জানাতে হবে ওই প্রতিবেদনে।

যোগাযোগ ব্যবস্থা ও যানবাহন সংক্রান্ত তথ্য, প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা, নিকটতম সরবারি অগ্নি নির্বাপন কেন্দ্রের অবস্থান, টেলিফোন নম্বর ও দূরত্ব, নিকটতম পানির উৎসের বিবরণ ও দূরত্ব, কার্যস্থলে সংরক্ষিত প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং নিকটবর্তী হাসপাতালের নাম, শয্যা সংখ্যা এবং দূরত্বও এতে উল্লেখ করতে হবে।

বিধি ৯-এর ২-এ বলা হয়েছে, ‘বিধিমালা প্রবর্তনের আগে যে প্রতিষ্ঠানে এই কার্যক্রম চালু করা হয়েছে তারা বিধিমালা কার্যকর হওয়ার তারিখ থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে উল্লেখিত পরিকল্পনা মহাপরিচালকের কাছে দাখিল করবেন। ’

৩-এ বলা হয়েছে, ‘জরুরি অবস্থা মোকাবিলার পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন করা হলে পরিবর্তনের তারিখ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে শভ বিস্তারিতভাবে মহাপরিচালককে জানাতে হবে। ’

৪-এ বলা হয়েছে, ‘উল্লেখিত পরিকল্পনায় কার কী দায়িত্ব ও কর্তব্য তা দ্ব্যর্থহীনভাবে উল্লেখ করতে হবে এবং তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অবগত করে রাখতে হবে। ’

৫-এ বলা হয়েছে, ‘জরুরি অবস্থা মোকাবিলার পরিকল্পনা দাখিল করার পর থেকে ছয় মাস পরপর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মহড়া অনুষ্ঠান করতে হবে। ’

৬-এ বলা হয়েছে, ‘মহড়া অনুষ্ঠানের তারিখ, সময় ও স্থান কমপক্ষে এক মাস আগে মহাপরিচালককে জানাতে হবে। মহাপরিচালক তার প্রতিনিধি দিয়ে ওই মহড়া পরিদর্শনের পদক্ষেপ নেবেন। ’

পরিবেশ ও বনসচিব ড. মিহির কান্তি মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, ‘জাহাজভাঙ্গা শিল্পের বিধিমালা প্রস্তুত করে ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ভেটিং শেষে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘বিধিমালা অনুমোদন হলে দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে। বিধি অনুযায়ী জরুরি অবস্থা মোকাবিলার প্রস্তুতি ছাড়া কেউ জাহাজ ভাঙ্গা কার্যক্রম শুরু করতে পারবে না। শুধু তাই নয়, জরুরি অবস্থা মোকাবিলার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শতভাগ প্রস্তুতি না থাকলে জাহাজ ভাঙ্গার অনুমোদনও দেওয়া হবে না। ’

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।