ঢাকা, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৪
ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি

ঢাকা: আগামী ৪ মে থেকে রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহারের মাধ্যমে ১৫টি রুটে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (মার্কসবাদী)। পাশাপাশি এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারেরও দাবি জানিয়েছে দলটি।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানায় বাসদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সমন্বয়ক মাসুদ রানা।

বিবৃতিতে মাসুদ রানা বলেন, অসহনীয় মূল্যবৃদ্ধিতে যখন সীমিত আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে, সে সময় আওয়ামী লীগ সরকার ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিছুদিন আগেই বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ফলে সমস্ত জিনিসের দাম আরেক দফা বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানো জনগণের দুর্দশাকে আরও বাড়াবে। এতদিন পর্যন্ত ট্রেন যাত্রায় ১০০ কিলোমিটারের অধিক ভ্রমণে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ রেয়াত (ছাড়) দেওয়া হতো। এ রেয়াত সুবিধা প্রত্যাহার করায় প্রধান ১৫টি রুটে সুলভ, শোভন, শোভন চেয়ারে ট্রেনের ভাড়া ২০ শতাংশ ও প্রথম শ্রেণিতে ৩০ শতাংশ ভাড়া বাড়বে। বলা হচ্ছে, এর ফলে রাজস্ব আয় ৩০০ কোটি টাকা বাড়বে। ট্রেনের মেগা প্রকল্পগুলোতে যেখানে শত-হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি-অপচয় হচ্ছে, সেখানে মাত্র ৩০০ কোটি টাকার জন্য সীমিত আয়ের মানুষের ওপর বাড়তি ভাড়া চাপানোর কোনো প্রয়োজন নেই।  

তিনি আরও বলেন, বলা হচ্ছে রেলের লোকসান কমাতে ভাড়া বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই। অথচ একই যুক্তিতে এর আগে ২০১২ ও ২০১৬ সালে ভাড়া বাড়ানোর পরেও লোকসান কমেনি। ফলে যাত্রী ভাড়া বাড়িয়ে রেলের লোকসান কমানোর যুক্তি ধোপে টিকে না। বাস্তবে সরকার যে কথাটি আড়াল করতে চায় তাহলো রেলওয়ের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে এডিবি থেকে নেওয়া ঋণের শর্ত অনুযায়ী রেলের ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত রেলের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ঋণের ৭২ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও লোকসান কমেনি। আমাদের দলসহ বিশেষজ্ঞরা অনেক আগে থেকে বলে আসছিলেন, যাত্রী ভাড়া বাড়ানোর পরিবর্তে ট্রেনে বগি বাড়িয়ে, নতুন ইঞ্জিন যুক্ত করে ট্রেন প্রতি আয় বাড়ানো, মালামাল পরিবহনে গুরুত্ব দিয়ে আয় বাড়ানো, তিনটি রেলওয়ে কারখানা আধুনিকায়ন করে বিদেশ থেকে কোচ ও ইঞ্জিন আমদানিতে খরচ কমানো গেলে ট্রেনকে লোকসান থেকে লাভজনক খাতে পরিণত করা যায়।

মাসুদ রানা বলেন, মাথাভারী প্রশাসন কমানো, দক্ষ কর্মচারী ও কারিগর নিয়োগ, রেল কারখানার আধুনিকায়ন, দাতা সংস্থার অপচয়মূলক প্রকল্প বাদ দেওয়া হলে কোটি কোটি টাকা অপচয় কমবে। ২৩ মন্ত্রণালয় ও সংস্থার কাছে রেলের বকেয়া পাওনা ১২ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। রেলের ১২ হাজার ১০০ একর জমি অবৈধ দখলদারদের হাতে। এ বকেয়া পাওনা ও দখলকৃত জমি উদ্ধার করে রেলের উন্নয়নে ব্যয় করলে, রেল কর্মকর্তা-মন্ত্রণালয়-আমলাদের দুর্নীতি-লুটপাট রোধ করতে পারলে, দাতা সংস্থার কাছে হাত পাতার দরকার নেই, যাত্রী ভাড়া বাড়ানোরও প্রয়োজন নেই।  

বিবৃতিতে তিনি ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে জনগণকে জোরদার গণআন্দোলন গড়ে তোলারও আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৪
এসসি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।