ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ডিউটি ২৪ ঘণ্টা, বেতন ১৪শ’

উবায়দুল্লাহ বাদল | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০১০

ঢাকা: ২৪ ঘণ্টা ডিউটি। বেতন পাই ১৪ শ’ টাকা।

চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের (সদস্য) বাড়ি পাহারাসহ সব ধরনের ব্যক্তিগত কাজ করতে হয়। না করলেই বেতন বন্ধ।

এ কথাগুলো বলছিলেন বাংলাদেশ গ্রামপুলিশ কর্মচারী ইউনিয়নের অতিরিক্ত মহাসচিব এম এ নাছের।

জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, কর আদায়ে সহযোগিতা, গ্রাম আদালতের নোটিশ জারি, মাসে চারদিন থানায় হাজিরা, উপজেলা পরিষদ ও থানার যাবতীয় নোটিশ জারি, রাতে রাস্তায় ডিউটিসহ সব ধরনের কাজ করতে হয় এই গ্রামপুলিশদের।

দীর্ঘদিনের দাবির পর ১ জুলাই থেকে বেতনের সঙ্গে যোগ হচ্ছে ৫ শ’ টাকা।

তবুও যেন তাদের ভাগ্য পরিবর্তন হচ্ছে না।

‘বেতন বাড়লে কী হবে সব মিলিয়ে যা পাবো তা ১৯ শ’ টাকার মতো। এই টাকা দিয়ে ৫/৭ জনের পরিবার নিয়ে কীভাবে চলি’, অনেকটা কান্নাভেজা কন্ঠে বললেন নাছের।

‘রাত নাই, দিন নাই। চেয়ারম্যান-মেম্বাররা আমাদের চাকরের মতো খাটায়। ’

বাংলাদেশ গ্রামপুলিশ কর্মচারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বাংলানিউজকে জানান, ‘আমাদের দাবি চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর মর্যাদা। সে অনুযায়ী আমাদের বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা দিলেই হবে। ’

গত ২১ জুন রাজধানীর মুক্তাঙ্গনে সকাল-সন্ধ্যা অনশন কর্মসূচি পালনের বিষয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দিকে কেউ তাকায় না। অনেক টাকা-পয়সা খরচ করে কয়েক হাজার গ্রামপুলিশ অনশন করলাম কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কেউ আমাদের খোঁজ নিল না। অন্য কোনো পেশার লোকজন অনশন করলে মন্ত্রীরা ঠিকই অনশন ভাঙাতে আসতো। আসলে আমাদের কেউ মানুষ বলেই মনে করে না। ’

২০০৯ সালের ২৮ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে গ্রামপুলিশদের চতুর্থশ্রেণীর কর্মচারীর মর্যাদা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন বলে জানালেন মহাসচিব এম. আব্দুল আলিম।

পাশাপাশি পুলিশের মতো তাদেরও রেশনিং ব্যবস্থা চালু করারও আশ্বাস দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

আব্দুল আলিম বলেন, ‘মন্ত্রী-এমপিসহ সবার বেতন দ্বিগুণ হয়েছে। অথচ আমাদের বেতন বেড়েছে মাত্র ৫০০ টাকা। গ্রামের চোর-ডাকাত থেকে শুরু করে সন্ত্রাসীদের ধরতে পুলিশকে সহযোগিতা করি আমরা। অথচ বেতন পাই ১৪০০ টাকা। ’

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রামপুলিশের (দফাদার ও মহল্লাদার)  বেতন ৫০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ১ জুলাই থেকে গ্রামের একজন দফাদার ২১শ’ টাকা ও মহল্লাদার ১৯শ’ টাকা বেতন পাবেন।

বর্তমানে দফাদারদের বেতন ১৬শ’ টাকা এবং মহল্লাদার পান ১৪শ’ টাকা।

সারাদেশে মোট ৪৪ হাজার ৯৯০ জন গ্রামপুলিশ রয়েছেন। প্রতিটি ইউনিয়নে ১ জন দফাদার ও মহল্লাদার রয়েছেন ৯ জন করে।

স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রামপুলিশের উন্নয়নে পদপে নিলেও এরপর আর কোনো সরকার তাদের দাবি-দাওয়া আমলে নেয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।