ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পরিবারের দাবি, প্রতিপক্ষরা র‌্যাবকে দিয়ে হত্যা করিয়েছে

কক্সবাজারে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের ভাই নিহত

আনছার হোসেন, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১০
কক্সবাজারে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের ভাই নিহত

কক্সবাজার: কক্সবাজার জেলা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সংগঠনের যুগ্ম আহবায়ক ও সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের ছোট ভাই রাশেদ উদ্দিন চৌধুরী বাবর (৩২) র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুযুদ্ধে মারা গেছেন। বুধবার ভোররাতে সদর উপজেলা ঈদগাঁও মেহেরঘোনা কবরস্থানের কাছে এ ঘটনা ঘটে।



কক্সবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজাহান বাবরের নিহত হওয়ার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তবে পারিবারের দাবি, বাবরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা র‌্যাবকে প্রভাবিত করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলমগীর চৌধুরী হিরু বাংলানিউজকে জানান, তার ছোট ভাই রাশেদ উদ্দিন চৌধুরী বাবর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বার্ষিকীর অনুষ্ঠানের বিরোধের জের ধরে সৃষ্ট একটি মামলায় জামিন নিতে ঢাকায় গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার সকালে হাইকোর্ট এলাকা থেকে সাদা পোশাকধারী কিছু লোক তাকে ধরে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়।

তিনি জানান, ওই ঘটনার পর বুধবার ভোরে ঈদগাঁও ফরিদ আহমদ কলেজ থেকে প্রায় ৫০ গজ দক্ষিণে মেহেরঘোনা কবরস্থানের কাছে বাবরকে হত্যা করা হয়।

তিনি জেনেছেন ভোর রাত সাড়ে ৩টার দিকে ‘বন্দুকযুদ্ধের’র এই ঘটনা ঘটে।


মেহেরঘোনা গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ভোর হওয়ার পর অস্ত্রধারি কিছু লোক এলাকাবাসিদের ডেকে নিহত বাবরকে চেনেন কিনা জানতে চান। পরে তারা লাশটি গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যায় ।

কক্সবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজাহান বাংলানিউজকে জানান, র‌্যাব সদস্যরা বুধবার ভোরে বাবরের লাশ নিয়ে আসেন। পরে পুলিশসহ ওই লাশ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়।

জেলা সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা লাশটি হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

ওসি শাহজাহান আরও জানান, ঈদগাঁও থেকে কক্সবাজার আনার পথেই বাবরের মৃত্যু হয়। র‌্যাপিড এ্যাকশান ব্যাটালিয়ান র‌্যাব-৭ এর মেজর আশফাক র‌্যাবের ওই দলটির নেতৃত্বে ছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাবরের এক নিকটাত্মীয় জানান, গত ১৫ আগস্ট ঈদগাঁও পাহাড়িকা কমিউনিটি সেন্টারে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগ নেতা এরশাদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি সোহেল সরওয়ার জাহান চৌধুরীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। পরে বাবরের নেতৃত্বে যুবলীগ-ছাত্রলীগের একদল কর্মী অনুষ্ঠানে বাধার সৃষ্টি করলে সোহেল সরওয়ার অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে যান।
 
ওই নিকটাত্মীয় জানান, এ ঘটনার কয়েকদিন পর সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি ওসমান সরওয়ার আলম দীপু বাড়ি ফেরার পথে হামলার শিকার হন। দীপুর ওপর হামলার ঘটনায় অন্যদের সঙ্গে বাবরকেও আসামি করে মামলা করা হয়।

ওই মামলায় জামিন নিতেই সোমবার বাবর ঢাকায় গিয়েছিলেন।

সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলমগীর চৌধুরী হিরুও এ প্রসঙ্গের উল্লেখ করে বাংলানিউজের কাছে আক্ষেপ করে বলেন,  ‘বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমি একটি উপহার পেলাম। সেই উপহারটি হচ্ছে আমার ভাইয়ের লাশ!’

র‌্যাব-৭ এর মেজর আশফাক বাংলানিউজকে জানান, র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় সন্ত্রাসী বাবর মারা গেছে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে র‌্যাবের কেন্দ্রীয় মিডিয়া সেল বিস্তারিত জানাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।