ঢাকা: নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ করে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনে কর্মরত অস্থায়ী শ্রমিক-কর্মচারীরা।
সোমবার (২৫ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনী হলে ‘বিআইডব্লিউটিসির অস্থায়ী শ্রমিক-কর্মচারীদের’ ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের আহ্বায়ক বিআইডব্লিউটিসির স্টুয়ার্ড মো. আল মামুন বলেন, বিআইডব্লিউটিসিতে দীর্ঘ বছর (৫ থেকে ২০ বছর) ধরে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির বিভিন্ন পদে প্রায় ৬০০ শ্রমিক ও কর্মচারী নিরলস অস্থায়ীভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু ২০১১ সাল থেকে আমাদের স্থায়ীকরণ না করে বারবার পত্রপত্রিকাতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাপিয়ে স্থায়ীভাবে লোকবল নিযুক্ত করা হয়েছে। যেখানে ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক আদেশ জারি আছে, অভিজ্ঞ ও দীর্ঘ মেয়াদে চাকরিরতদের অগ্রাধিকার দিয়ে তারপর শূন্য (যদি থাকে) পদে বাইর থেকে লোকবল নিযুক্ত করা যাবে। সেই ভিত্তিতে ২০০৬ সালে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি পদে প্রায় ৪২৫ জনকে বোর্ড-বাই সার্কুলেশনের মাধ্যমে স্থায়ী করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের ভিন্ন ভিন্ন পদে বহু পদে শূন্য পদ থাকা সত্ত্বেও পত্রিকাতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে লোকবল নিযুক্তির মতো ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এটি বার বার করে আসছে শুধুমাত্র বিআইডব্লিউটিসির কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাদের নিজ নিজ স্বার্থ হাসিল করার জন্য। বর্তমানে আমাদের বিকাশের মাধ্যমে বেতন দেওয়া হয়। যেখানে আমাদের প্রতিমাসে বেতন পেতে মাসের প্রায় ১০ তারিখ থেকে ২০ তারিখ লেগে যায়।
আল মামুন বলেন, আমরা বর্তমানে দৈনিক মাত্র ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা হারে বেতনে পরিবার-পরিজন নিয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছি। বর্ধিত বাসা ভাড়া, বর্ধিত দ্রব্যমূল্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় মৌলিক চাহিদার সবকয়টি সেক্টরে মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমরা আমাদের পরিবারের মুখে দুবেলা ভাতের যোগানটুকু দিতে পারছি না। অন্যদিকে আমাদের স্থায়ী না করে নিজেদের পকেট ভারি করার জন্য জনপ্রতি ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছে। অস্থায়ী পদে নিযুক্তির সময়কালেও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এমতাবস্থায় আমাদের স্থায়ী না করে বরং এখন নতুন করে বিভিন্ন পদে স্থায়ীভাবে লোকবল নিযুক্তির মাধ্যমে আমাদের সমস্ত অস্থায়ীদের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে। আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে।
এ সময় তারা প্রকাশিত নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল ও নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ না করলে এবং সংস্থার অস্থায়ী তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারীদের পর্ষদ সভার মাধ্যমে চাকরি স্থায়ীকরণ করা না হলে ঈদুল ফিতরের পর বিক্ষোভ সমাবেশ, কর্মবিরতি ও আমরণ অনশনের মতো কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
অনুষ্ঠানে বিআইডব্লিউটিসির কম্পিউটার অপারেটর ও সংগঠনের মুখপাত্র ননী গোপাল দাস, অফিস সহকারী হুমায়ুন কবির, মো. রোকন গাজী, মো. কুদ্দুস মিয়া, সারোয়ার হোসেনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৪
এসসি/আরবি