ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

অন্য বাসকে পেছনে ফেলতে গিয়েই নদীতে পড়ে বৈশাখীর বাস

জাহিদুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১০
অন্য বাসকে পেছনে ফেলতে গিয়েই নদীতে পড়ে বৈশাখীর বাস

সাভার: সামনের চাকা ফেটে নয়, দ্রুতগতিতে অন্য একটি বাসকে অতিক্রম করতে গিয়েই সাভারে বৈশাখী পরিবহন দুর্ঘটনায় পড়ে।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে চাকা ফেটে যাওয়ার বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট (এআরআই)।

একইসাথে সালেহপুর সেতুকে ত্রুটিপূর্ণ ও সড়কের পার্শ্ববর্তী বিলবোর্ডকেও এ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করেছে সংস্থাটি।

উল্লেখ্য, গত ১০ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১১টার দিকে গুলশানের বাড্ডা থেকে সাভারের রেডিও কলোনির উদ্দেশে ছেড়ে আসা বৈশাখী পরিবহনের বাসটি (ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৪৪৮০) সেতুর কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গভীর খাদের পানিতে পড়ে যায়।

এতে ২ নারী যাত্রীসহ ১৪ জন মারা যান। এখনো অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন। সেনাবাহিনী, দমকলবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থার সহায়তায় দুর্ঘটনার ৩য় দিনে বাসটি টেনে তুরাগ পাড়ে তোলা হয়। সেখান থেকে চেন কপ্পারের সাহায্যে বাস কর্তৃপক্ষ সড়ক বরাবর উঠিয়েছে দুর্ঘটনা কবলিত বাসটিকে।

এদিকে, মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন বাসটি প্রত্যক্ষ করে দেখা গেছে, বাসটির সবকটি চাকাই অক্ষত। সামনের অংশ কিছুটা দুমড়ে যাওয়া ও বাসের কাচগুলো ভেঙে যাওয়া ছাড়া খুব বেশি ক্ষতি হয়নি বাসটির।

এর আগে প্রত্যক্ষদর্শী দাবিদার অনেকে গণমাধ্যমের কাছে বলেছিলেন, ‘বিকট শব্দে সামনের চাকা ফেটে গিয়ে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পানিতে পড়ে যায়। তবে দুর্ঘটনার পর বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট (এআরআই) অভিন্ন ধারণার কথা জানালে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে টায়ার  ফেটে যাওয়ার বিষয়টিই উঠে আসে আলোচনায়।

তবে বাসটি সড়কের পাশে উঠিয়ে আনার পর ওই অবস্থান থেকে সরে আসে দুর্ঘটনা গবেষণা ইন্সটিটিউট (এআরআই)।

এ ব্যাপারে দুর্ঘটনা গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক শাসছুল হক জানান, ‘বেপরোয়া গতির বামদিকের বাসটি অপর একটি বাসকে অতিক্রম করতে গিয়েই  দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ’ দুর্ঘটনার কারণ যান্ত্রিক কিংবা কারিগরি নয় বলেও জানান তিনি।

তিনি জানান, সরেজমিন প্রত্যক্ষদর্শী, আহত যাত্রী ও বাসটি পরীক্ষা ও সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এ বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন তারা। সেতুতে ওয়াকওয়ে অর্থাৎ পায়ে হাঁটার পথ ও সেতুতে ওঠার আগেই দু’প্রান্তে ২৫/৩০ ফুট স্টিলের নিরাপদ বেষ্টনী অর্থাৎ সেফটি বেরিয়ার না থাকাকে অন্যতম ত্রুটি বলেও চিহ্নিত করেন তিনি।

পাশাপাশি সড়কের পাশে স্থাপিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিলবোর্ডকেও তিনি দায়ী করেন।
উল্লেখ্য, সেতুর দু’দিকেই রয়েছে বেশ কয়েকটি বিলবোর্ড। বিলবোর্ডগুলো এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে, যার নজর এড়ানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

যে স্থানটিতে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে রয়েছে মুঠোফোন কোম্পানি টেলিটকের বিশাল বিলবোর্ড।

অধ্যাপক শাসছুল হক জানান, ‘দুর্ঘটনার কারণ উল্লেখ করে বেশ কিছু সুপারিশ সম্বলিত পূর্ণাঙ্গ একটি প্রতিবেদন শিগগির তারা সরকারের কাছে জমা দেবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫, অক্টোবর ১৯, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।