ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ছেলের দুশ্চিন্তায় সারারাত ঘুমাননি ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুবের মা 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৪
ছেলের দুশ্চিন্তায় সারারাত ঘুমাননি ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুবের মা  আইয়ুব খান

লক্ষ্মীপুর: সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি 'এমভি আব্দুল্লাহ' নামক জাহাজের ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খানের মা হুমায়ারা বেগম (৫৯) অপহরণের খবর পেয়ে দুশ্চিন্তায় গতকাল সারারাত ঘুমাতে পারেননি। ছেলে সুস্থ অবস্থায় তার বুকে ফিরে আসবে- এমনটাই প্রত্যাশা তার।

 

আইয়ুব খানের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের রাখালিয়া গ্রামের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। তার বাবা মৃত আজহার মিয়া। এক বছর আগে ইন্টার্নি করতে 'এমভি আব্দুল্লাহ' নামক জাহাজে ওঠেন আইয়ুব।  

আইয়ুব খানের মা হুমায়ারা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলে যে জাহাজে ছিল, সেটি অপহরণ করেছে দস্যুরা। সঙ্গে আমার ছেলেকেও জিম্মি করে রাখা হয়েছে। শুরুতে কেউ আমাকে জানায়নি। আমি গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে জানতে পেরেছি। এরপর ছেলের চিন্তায় সারারাত আমার ঘুম হয়নি। ছেলে কোথায় আছে, কি অবস্থায় আছে- সে টেনশনে আছি।  

ছেলের জন্য দোয়া চেয়ে তিনি বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে গত সোমবার (১১ মার্চ) বিকেলে কথা হয়েছে। বলেছে- ভালো আছে। গত মাসের ১০ ফেব্রুয়ারি তার বাবা মারা যায়। কিন্তু সে আসতে পারেনি, তখন জাহাজে ছিল। বাবার লাশ দেখতে পারেনি, মাটিও দিতে পারেনি। এ নিয়ে তার মধ্যে খুবই দুঃখ ছিল। বলছে- আমি আর সে মিলে তার বাবার জন্য কোরআন খতম করবো। তার বাবা মারা যাওয়ার ২০-২৫ দিন আগে সে বাড়িতে আসে। এরপর আবার জাহাজে চলে যায়।

তিনি বলেন, চার ভাইবোনের মধ্যে পরিবারের সবার ছোট আইয়ুব, তাই সবার আদরের। এক বছর হলো সে লেখাপড়া শেষ করে ইন্টার্নি করার জন্য জাহাজে যায়। মাত্র শুরু করেছে, শুরুতেই দস্যুর কবলে পড়েছে আমার ছেলেটা। আল্লাহ তায়ালা যেন তাকে সুস্থ অবস্থায় আমার কোলে ফিরিয়ে আনে- সেই দোয়া করি। দেশবাসীর কাছেও সেই দোয়া চাই।  

আইয়ুব খানের ভাতিজা তারেক হোসেন বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদে আমার চাচার অপহরণের বিষয়টি জানতে পারি। তাদের সবাই যেন সুস্থভাবে উদ্ধার করা যায়, সে কামনা করি।  

আইয়ুব খানের বন্ধু আবদুল্লা আল মারুফ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা একসঙ্গে লেখাপড়া করেছি। সে আমার বাল্যবন্ধু। মঙ্গলবার আইয়ুব তাদের জাহাজে জলদস্যুর হামলার ঘটনা জানিয়ে তার ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করেন। সেখান থেকেই বিষয়টি জানতে পারি। আমার বন্ধুসহ ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক সোমালিয়ার অস্ত্রধারী দস্যুদের হাতে জিম্মি হয়ে আছে। তাদের জাহাজটিও অপহরণ করা হয়েছে। আমরা চাই- সব জিম্মিকে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আরা হোক।  

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর ১টা থেকে ২টার মধ্যে এ জাহাজটি সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে। জাহাজে থাকা ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিককে জিম্মি করে রাখা হয়েছে। সমুদ্রগামী জাহাজটি কয়লা নিয়ে মোজাম্বিক থেকে দুবাই যাচ্ছিল। পথে এডেন উপসাগরে জাহাজটিতে হামলা চালিয়ে নিয়ন্ত্রণ নেয় অস্ত্রধারী জলদস্যুরা।

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।