ঢাকা: জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধন, হারিয়ে যাওয়া পরিচয়পত্রের বিকল্প কপি প্রদান ও পরিচয়পত্র বিতরণসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি দায়িত্ব থানা ও উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের হাতে ছেড়ে দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
এর ফলে ভোটাররা নিজের থানা ও উপজেলা থেকেই জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ও হারিয়ে যাওয়া পরিচয়পত্রের বিকল্প কপি (ডুপ্লিকেট কপি) সংগ্রহ করতে পারবেন।
সেইসঙ্গে ভোটার হয়েও যারা এখনও পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেননি তাদের পরিচয়পত্রও থানা ও উপজেলা অফিসে পাওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে ভুল সংশোধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য ভোটারদের ঢাকায় আসতে হয়।
সোমবার নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘সাধারণ মানুষের ভোগান্তি দূর করা এবং নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমকে বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসাবে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ’
তিনি বলেন, ‘এখন জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহের জন্য ভোটারদের ঢাকায় আসতে হয়। এতে সময় ও অর্থ অপচয়ের পাশাপাশি তারা নানা ধরনের ভোগান্তির শিকার হয়। ফলে নিজ নিজ থানাতেই যদি তারা এসব সুবিধা পায়, তবে একদিকে কমিশনের কাজের সুবিধা হবে অন্যদিকে ভোটারদেরও ভোগান্তি কমবে। ’
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘শহর এলাকায় মানুষ সাড়া দিলেও থানা ও উপজেলা পর্যায়ে মানুষ জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধন ও বিতরণে কেমন সাড়া দেয় সেটাও দেখার বিষয়। তাই প্রাথমিকভাবে পাইলট প্রকল্প হিসাবে উপজেলা পর্যায়ে কমিশনের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে।
পরে ভোটারদের সুবিধা অসুবিধা দেখে এটা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
সারা দেশের ৫শ’ ৯টি থানা ও উপজেলা কার্যালয়কে আরও সক্রিয় ও কার্যকর করার লক্ষ্যে এসব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে।
আগামী ১ ডিসেম্বর থেকেই ভুল সংশোধন, হারিয়ে যাওয়া কপি সংগ্রহের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন শুরু হবে বলে ইসি সূত্র জানায়।
এছাড়া এসব স্থানীয় কার্যালয়কে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে সব উপজেলায় সার্ভার স্থাপন করছে কমিশন। সার্ভার স্থাপনের কাজ শেষ হলে ভোটার তালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যার সমাধান আরও সহজে করা যাবে।
তবে কমিশনের অন্য একটি সূত্র জানায়, যদি থানা ও উপজেলা অফিস থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ কার্যক্রম সফল না হয় তবে তা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিতরণের ব্যবস্থা করা হবে।
এজন্য প্রস্তুতি হিসাবে পরিকল্পনা প্রণয়ন, লোকবল নিয়োগ ও বাজেট তৈরির কাজ চলছে। সারা দেশের কয়েক লাখ ভোটার জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ না করায় সেগুলো বর্তমানে কমিশনের কাছে রয়েছে।
থানা ও উপজেলা কার্যালয় থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধনের অংশ হিসাবে ভোটারের নাম, বাবা, মা ও স্বামীর নাম, জন্ম তারিখ, ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ, ছবি ও স্বাক্ষর পরিবর্তন করতে পারবে।
তবে এসব সংশোধন ও পরিবর্তনের জন্য প্রমাণ হিসাবে এসএসসি কিংবা সমমানের পরীক্ষার সার্টিফিকেট, জন্ম নিবন্ধন সনদ বা পাসপোর্টের ফটোকপি জমা দিতে হবে।
এছাড়া এক ভোটারের দায়ের করা মামলায় কমিশন হেরে যাওয়ায় ভোটার তালিকা স্থানান্তরের কাজও শুরু হবে বলে জানা গেছে।
কমিশন এতদিন স্থানান্তরের কাজ পরিপত্র জারি করে (ভোটারের নির্বাচনী এলাকা পরিবর্তন) বন্ধ রেখেছিল। কিন্তু মামলায় হেরে যাওয়ার পর পরিপত্রটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১০