ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আত্মগোপনে গিয়ে অপহরণ নাটক, দেড় বছর পর ধরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪
আত্মগোপনে গিয়ে অপহরণ নাটক, দেড় বছর পর ধরা

নোয়াখালী: আত্মগোপনে গিয়ে অপহরণের নাটক সাজিয়ে পাওনাদারের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়ার প্রতারণার অভিযোগে শেরআলী (৩২) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে নোয়াখালী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।  

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে নোয়াখালী গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

 

এর আগে, রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে কক্সবাজার জেলার পৌর বাস টার্মিনালের মারছা বাস কাউন্টারের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।   
 
গ্রেপ্তারকৃত কথিত ভিকটিমের শেরআলী জেলার কবিরহাট উপজেলার নলুয়া গ্রামের সামছুদ্দিনের ছেলে।

জানা যায়, অপহরণের নাটক সাজিয়ে ভিকটিম নিজেই আত্মগোপন থাকেন। এরপর ভিকটিম তার চাচাকে দিয়ে অপহরণ মামলা দায়ের করান।  
 
পুলিশ জানায়, জেলার হাতিয়া বাজার এলাকার মোবারকের (৩২) সাথে চট্টগ্রাম হালিশহর এলাকায় একইসঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালানোর সুবাদে শেরআলীর সাথে ওস্তাদ সাগরেদের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০২২ সালের ২২ জুলাই মোবারক মোটরসাইকেল কিনতে শেরআলীকে নিয়ে চট্টগ্রাম কাপ্তাই রাস্তার থানাধীন মৌলভীবাজার মোটরসাইকেল শো-রুমে যায়। মোবারক লুঙ্গি পরে যায় এবং কথিত ভিকটিম শেরআলী প্যান্ট পরে যাওয়ায় তিনি মোবারককে মোটরসাইকেল কেনার টাকা তার নিকট রাখার জন্য বললে মোবারক মোটরসাইকেল কেনার এক লাখ ২০ হাজার টাকা ও ১টি মোবাইল সেট শেরআলীর কাছে রাখতে দেয়।  


পুলিশ আরও জানায়, মোবারক মোটরসাইকেল শো-রুমে ঢুকে মোটরসাইকেল দরদাম করে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার জন্য ছবি ও ভোটার আইডি কার্ড প্রিন্ট করার জন্য অন্য দোকানে গেলে এ সুযোগে শেরআলী মোবারকের টাকা ও মোবাইল সেট নিয়ে পালিয়ে নিজ এলাকায় চলে আসে। ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর মোবারক ও তার বন্ধু ইউসুফ নলুয়া জনতা বাজারে এসে উক্ত বিষয়ে স্থানীয় লোকজনকে জানালে সেখানে সালিশ বৈঠক হয়।

সালিশে বিষয়টি অমীমাংসিত থাকায় স্থানীয় লোকজন বিষয়টি সমাধানের জন্য হাতিয়ার হরণী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আক্তার হোসেনের শরণাপন্ন হয়। একই দিন মোবারক ও শেরআলী হরণী ইউনিয়নের বয়ারচর বাজারে যায়। সেখানে মোবারক শের আলীকে একটি দোতলা বিল্ডিং ঘরে রেখে চেয়ারম্যানকে আনার জন্য গেলে শের আলী কৌশলে পালিয়ে যায়।  

ভুক্তভোগীরা জানান, পরবর্তীতে তার চাচা দেলোয়ার হোসেন বিটু ভাতিজা শের আলী ও তার ছেলে মারুফ অপহরণ হয়েছে দাবি করে তার সঙ্গে জায়গা-জমি নিয়ে পূর্ব বিরোধ থাকা শামছুল হক মাঝিসহ ওই এলাকার আরও নয়জনসহ মোবারক ও তার বন্ধু ইউসুফের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ১২ জুলাই আদালতে অপহরণ মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে কবিরহাট থানায় এই বিষয়ে নিয়মিত মামলা রুজু হয়। মামলাটি রুজু হওয়ার পর কবিরহাট থানা পুলিশ তদন্ত করে। পরবর্তীতে মামলার তদন্তভার ডিবি নোয়াখালীতে ন্যস্ত হয়।  

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন আহমেদ আরও জানান, কথিত ভিকটিম শেরআলী পেশায় একজন ড্রাইভার। তিনি খুবই ধূর্ত প্রকৃতির। তিনি ঘন ঘন মোবাইল সিম পরিবর্তন করায় তার সঠিক অবস্থান নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ে। তার মোবাইল নম্বরের কললিস্ট পর্যালোচনায় দেখা যায় তিনি কক্সবাজার, বান্দরবন, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জসহ একেক সময় একেক স্থানে অবস্থান করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কথিত ভিকটিম শেরআলীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪
এএটি      

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।