ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘আগুন গিলে খেয়েছে ঘরের সব মালামাল ও নগদ টাকা’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৪
‘আগুন গিলে খেয়েছে ঘরের সব মালামাল ও নগদ টাকা’

ঢাকা: রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মোল্লাবাড়ি বস্তিতে আগুনের ঘটনায় মা-ছেলেসহ ৪ জন দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে একজনকে ভর্তি রাখা হয়েছে।

দগ্ধরা হলেন নাজমা বেগম (২৮), তার ছেলে নজরুল ইসলাম (৩৫), তার চাচা নুর মোহাম্মদ (২৮) ও লিয়ন (১২)।

শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ৩টার দিকে তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে নাজমা বেগমকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি রাখা হয়েছে।

নাজমার শ্বশুর আব্দুল মালেক জানান, তাদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার দাসপাড়া গ্রামে। বর্তমানে মোল্লাবাড়ি বস্তিতে আশরাফ মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তার ছেলে ওমর ফারুকের কিছুটা মানসিক সমস্যা রয়েছে। কারওয়ান বাজারের মাছ বাজারে কাজ করে সে। ওমরের স্ত্রী নাজমা শ্বশুরের ভাতের দোকানে কাজ করেন। তাদের দুই ছেলে নজরুল ইসলাম (৩৫) ও নাজমুল ইসলাম (১০)।

তিনি বলেন, নাজমুল মাদরাসায় পড়ে এবং সেখানেই থাকে। বাড়িতে পাশাপাশি দুটি রুমে ছিলেন তারা। মাঝ রাতে যখন আগুন লাগে এরপর মানুষের ডাক চিৎকারে তাদের ঘুম ভাঙে। ছেলে নজরুলকে রেখেই তার বাবা মা দুজনই বাইরে বের হন দেখতে, কোথায় আগুন লেগেছে। তবে বের হওয়ার পর দেখেন তাদের পাশের ঘর পর্যন্ত আগুন জ্বলছে। মুহূর্তেই তাদের ঘরেও আগুন ধরে যায়। তখন তাদের মনে পড়ে ঘরের ভেতর ছেলে ঘুমিয়ে আছে। ততক্ষণে দরজায় আগুন ধরে যাওয়ায় ঘরে ঢুকার কোনো রাস্তা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এমন সময় শিশু নজরুলের চাচা নুর মোহাম্মদ ওই ঘরের টিন ভেঙে ঘরে প্রবেশের জায়গা করেন। সেখান দিয়ে নাজমা ভেতরে প্রবেশ করে ছেলেকে নিয়ে বের হওয়ার সময় আগুনে ঝলসে যায় তার দুই হাত, মুখমণ্ডল, পিঠসহ শরীরের আরও কিছু জায়গা। পুড়ে যায় শিশুটির দুই হাত ও মুখমণ্ডল। দুই হাতে সামান্য দগ্ধ হয় নুর মোহাম্মদেরও।

আব্দুল মালেক বলেন, আগুন লাগার পরে ঘরের কোনো মালামাল সরাতে পারিনি। পরনের শার্ট আর লুঙ্গি ছাড়া সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘরে ৬০-৭০ হাজার টাকা ছিল। ভাতের দোকানের লাভ থেকে কিছু কিছু করে জমাচ্ছিলাম গ্রামের বাড়িতে একটা ঘর দেবো বলে। কিন্তু আগুনে সব পুড়ে গেছে। একটা টিভি ছিল, ফ্রিজ ছিল, সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বস্তিতে লাগা আগুন গিলে খেয়েছে ঘরের সব মালামাল ও নগদ টাকা

বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. তরিকুল ইসলাম জানান, মোল্লাবাড়ি বস্তির আগুনের ঘটনায় মা-ছেলেকে নিয়ে আসা হয়। মা নাজমার শরীরের ২৩ শতাংশ ও শিশুটির ৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। নাজমাকে ফিমেল হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে ভর্তি রাখা হয়েছে। তবে শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। নাজমার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুরাতন বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা জানান, বস্তিতে আগুনের ঘটনায় লিয়ন (১২) নামে একজনকে নিয়ে আসা হয়েছিলো। তার শরীরের ৭ শতাংশ দগ্ধ হওয়ায় তাকে ভর্তি রাখা হয়েছিল। তবে তারা নিজেরাই চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৪
এজেডএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।