ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

জামিনে বের হয়ে সেই চেয়ারম্যানের হুমকি, ‘৭ তারিখের পর প্রতিশোধ নেব’ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২৪
জামিনে বের হয়ে সেই চেয়ারম্যানের হুমকি, ‘৭ তারিখের পর প্রতিশোধ নেব’  তালতলীর জনসভায় বক্তব্য রাখছেন মতিউর রহমান রাজা। ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

বরগুনা: সরকার পতন আন্দোলনে নাশকতা চেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর জামিনে এসে নৌকা মার্কায় জনসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন সদর উপজেলার বদরখালি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান রাজা।

তিনি বলেছেন, ‘আমাকে তো দূরের কথা, কোনো সাধারণ মানুষকেও ভয় দেখালে ৭ তারিখের পরে আমি আমার নেতার নেতৃত্বে প্রতিশোধ নেব।

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় তালতলী উপজেলার তালতলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ নৌকার জনসভায় অংশ নিয়ে বক্তব্যে তিনি এ হুমকি দেন।  

এসময় মঞ্চে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু উপস্থিত ছিলেন।

মতিউর রহমান রাজা তার বক্তব্যে বলেন, আমি শম্ভু দার পক্ষ নিয়ে গৌরীচন্নার জনসভায় বক্তৃতা দেওয়ার কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী আমাকে গ্রেপ্তার করিয়েছে আমার বাড়ির সামনে থেকে। জানি না তার কতবড় হাত। আমার নেতা আমাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জামিন করিয়েছে। বলেছেন ‘তুমি ভয় পেও না, নির্বাচন চালিয়ে যাও। ’ 

এ চেয়ারম্যান বলেন, কে কি পারেন, কে কি পারেন না জানা আছে, গোলাম সরোয়ার টুকু সাহেব, খলিল ভাই, ফোরকান ভাই, তাদের সঙ্গে শম্ভু দার তুলনা নাই।

এরপর ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান স্বপন শরীফকে উদ্দেশ্য করে মতিউর রহমান রাজা বলেন, ‘আমি যখন একা ছিলাম চেয়ারম্যান হিসেবে তখন একা যুদ্ধ করেছি। তখন আপনারা বড় বড় নেতা নিয়াও আমার সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন। আজকে যখন আমার মাথার উপর একটি ছাদ (ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু)  দাঁড়িয়েছে, তখন আবার হুমকি দেওয়া শুরু করেছেন। আপনি তো জানেন না, এ হাত কত লম্বা, এ ছাদের হাত অনেক বড় লম্বা। ’ 

মতিউর রহমান রাজা সদর উপজেলার ১ নম্বর বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। গত ইউপি নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভ করেন। তিনি জেলা বিএনপির (নজরুল-হালিম কমিটি) সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন।  

ওই জনসভায় বক্তব্যে নৌকার প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু রাজা প্রসঙ্গে বক্তব্যে বলেন, সাত মাস আগে রাজা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। তবে বিষয়টি কাউকে তিনি জানাননি। গোপন রাখা হয়েছিল।

এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর সদর উপজেলার গৌরিচন্না ইউনিয়নে গৌরিচন্না মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে নৌকা প্রতীকের জনসভায় বক্তব্য দিয়ে ভোট চান এই ইউপি চেয়ারম্যান। পরদিন সোমবার এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে রাজাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।  

পরে মামলায় নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা এবং বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহারের অভিযোগে করা পৃথক দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।  

মঙ্গলবার বরগুনা-১ আসনের নৌকার প্রার্থী অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু নিজেই আদালতে জামিন আবেদন করে নিজের জিম্মায় পরবর্তী ধার্য তারিখ পর্যন্ত জামিনে আনেন।  

গত নভেম্বরে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা এবং বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহারের অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে সদর থানায় দুটি মামলা করে। নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টার মামলায় মতিউর রহমান রাজা এজাহারভুক্ত আসামি।

বক্তব্যে হুমকি দেওয়া প্রসঙ্গে মতিউর রহমান রাজার মোবাইলফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

রাজার বক্তব্য প্রসঙ্গে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, তিনি এখন আমাদের লোক। নাশকতা চেষ্টা মামলায় আসামি হওয়ার বিষয়টি আমরা জানতাম না। তাকে মামলা থেকে মুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২৪
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।