ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সভায় পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলা-ভাঙচুর, সভাপতি আহত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৩
সভায় পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলা-ভাঙচুর, সভাপতি আহত

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের বর্ধিত সভায় পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে।  

এতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

১৪ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে।  

এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দলীয় কার্যালয়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

পাবনা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেনের ছেলে  ও পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য মুস্তাকিন মুহিব ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শীষ হাসানের নেতৃত্বে একদল যুবক এ হামলা করেছে বলে অভিযোগ জেলা ছাত্রলীগ নেতাদের।  

প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রলীগ নেতারা জানান, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে রেখে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের বিজয়ী করতে কর্মীদের নির্দেশনা দিতে দলীয় কার্যালয়ে বর্ধিত সভা আহ্বান করে জেলা ছাত্রলীগ। সভার শুরুতেই শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে নিরবতা পালনের সময় হঠাৎ করেই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মুস্তাকিন মুহিব ও শীষ হাসানের নেতৃত্বে একদল যুবক দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে।  

এসময় সভা আয়োজনে তাদের পরামর্শ নেওয়া হয়নি অভিযোগে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক মীর রাব্বিউল ইসলাম সীমান্তকে ধমকাতে শুরু করেন।  

আর আগতদের বসতে বললে ওই যুবকেরা চেয়ার ছুড়ে ভাঙচুর শুরু করেন ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। আকস্মিক হামলায় নেতাকর্মীরা ছুটাছুটি শুরু করলে সভাপতি সবুজ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।  

এ সময় বিক্ষুব্ধ সাবেক নেতারা চেয়ার তুলে আঘাত করলে আহত হন সবুজ। ভাঙচুরের পর আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করে সভাস্থল ত্যাগ করেন হামলাকারীরা।  

পরে জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে আবারও সভা শুরু করেন।

পাবনা জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মীর রাব্বিউল ইসলাম সীমান্ত বলেন, কতিপয় চিহ্নিত যুবক প্রকাশ্যে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা ছাত্রলীগের কেউ না। পরিকল্পিতভাবে তারা আক্রমণ ও সভা পণ্ডের চেষ্টা করেছে। আমরা এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে ব্যবস্থা নেব।

আহত পাবনা জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেনের ছেলে মুহিব ছাত্রলীগে সক্রিয় নয়। তারা কোনো কারণ ছাড়াই সন্ত্রাসী হামলা করেছে। আমরা তাদের বিরদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

তবে, ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত মুস্তাকিন মুহিব বলেন, আমরা ছাত্রলীগের সঙ্গে দীর্ঘদিন জড়িত। এই সভাপতি ও সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার প্রায় দুই বছর পেরিয়ে গেলেও তারা এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেনি। নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন দলীয় কার্যক্রম তারা স্বৈরাচারী প্রক্রিয়ায় পরিচালনা করছে। সম্প্রতি ১৩২ জনের নাম দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি করা হয়েছে। সেখানে ছাত্রলীগের কয়জন নেতাকে রাখা হয়েছে। অছাত্র, বিবাহিত, সভাপতি সম্পাদকের পছন্দের মানুষ দিয়ে এই কমিটি করা হয়েছে। নির্বাচনী কমিটিগুলোতে কেন আমাদের রাখা হচ্ছে না সেটাই জানতে আমরা গিয়েছিলাম সেখানে।  

তিনি আরও বলেন, এ সময় সভাপতিকে কমিটি করার বিষয়ে জানতে চাইলে সভাপতি আমাদের ওপরে চড়াও হন। সে সময় সেখানে একটি হট্টগোল হয়েছে। আমি ও আমার সঙ্গে পদবঞ্চিত ছাত্র নেতাদের ওপরে হামলা করে তারা। সেখানে আমরা আত্মরক্ষা করে চলে এসেছি। আমরা এই অবৈধ ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলসহ সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করার দাবি করছি। ষড়যন্ত্র করে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের বঞ্চিত করছে তারা।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী বলেন, পাবনা জেলা ছাত্রলীগের বর্ধিত সভাকে ঘিরে একটা ঝামেলা হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এখনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। দলীয় কার্যালয়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।