ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নাশকতার পর দেশি-বিদেশি নাম্বারে ভিডিও পাঠাতেন মাসুম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২৩
নাশকতার পর দেশি-বিদেশি নাম্বারে ভিডিও পাঠাতেন মাসুম

ঢাকা: ২৮ অক্টোবর ঢাকায় ও পরবর্তী সময়ে অবরোধে গাড়ি পোড়ানোসহ নানা সহিংসতার দায়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি আবু তালেব মাসুমকে (৩৭) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। তিনি বিভিন্ন স্থানে একাধিক গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর চালান।

পরে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাঠান।

মাসুমের দাবি, দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের নির্দেশেই এসব সহিংসতা চালিয়েছেন তিনি। যাদের নির্দেশে এসব নাশকতা করেছেন, তাদের কাছেই এসব ভিডিও পাঠিয়েছেন। তিনি যে নেতাদের নাম বলেছেন, তাদের বিষয়ে যাচাই-বাছাই করছে র‌্যাব।

শনিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে নিজেদের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

মইন বলেন, সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জসহ বিভিন্ন মহাসড়কে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও নাশকতা চালানো হয়। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে নাশকতার অন্যতম মূলহোতা ও প্রায় ১৫টি নাশকতার মামলার আসামি নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি আবু তালেব মাসুমকে (৩৭) সনাক্ত করা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) রাতে কক্সবাজারের একটি হোটেল থেকে মাসুম ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী নারায়ণগঞ্জ জেলা জিয়া মঞ্চের সভাপতি জজ মিয়াকে (৩৯) গ্রেপ্তার করা হয়।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তাররা তাদের দলীয় শীর্ষ নেতাদের নির্দেশনায় মাসুমের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় সহিংসতা ও নাশকতা চালায়। মাসুম গত ২৮ অক্টোবর পল্টন এলাকায় সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের নিয়ে ঢাকায় আসে। পরে তারা পল্টন ও এর আশপাশের এলাকায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে পরিস্থিতির অবনতির অপচেষ্টা চালায়। এ সময় তারা আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মীদের ওপরও হামলা চালায়।

পরে তারা নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফিরে ছাত্রদল নেতা মাসুম শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে রূপগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন মহাসড়কে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে নাশকতা ও সহিংসতার চালায়।

মাসুম যানবাহনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের পর ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার করে তাদের সমমনা অন্যান্য অনুসারীদের প্ররোচিত করতো। তাদের দলের কাছে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি ও দলের প্রতি নিজেদের আস্থার প্রতিদান দিতে তারা সহিংসতার ভিডিও দলের নেতাদের পাঠাতো।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, মাসুম ও অনুসারীদের এ সকল নাশকতা ও সহিংসতার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশিত হলে তিনি প্রথমে রাজধানীর বাড্ডা, খিলক্ষেত, যাত্রাবাড়ীর বিভিন্ন এলাকায় এবং সর্বশেষ কক্সবাজারে আত্মগোপন করে। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। যাদের নির্দেশে মাসুম এ সহিংসতা চালিয়েছেন, যাদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যোগাযোগ ছিল এবং যাদের কাছে ভিডিও পাঠিয়েছেন তাদের বিষয়ে আমাদের গোয়েন্দারা কাজ করছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে সব দেশি-বিদেশি নাম্বার পেয়েছি, যাদের কাছে মাসুম ভিডিও পাঠাতেন। তাদের বিষয়ে মাসুম বলেছেন, শীর্ষ নেতাদের পাঠাতেন। এগুলো পর্যালোচনা করে শনাক্ত করতে আমরা কাজ করছি। তিনি যাদের নাম বলেছেন তারা সত্যিই সেই ব্যক্তি কিনা, এ নিয়ে আমরা কাজ করছি।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা সহিংসতাকারী তাদের অন্য কোনো পরিচয় নেই। যারাই বিভিন্নস্থানে অস্ত্র প্রদর্শন করেছে, অস্ত্র যাদের কাছে পেয়েছি তাদেরকে আইনের আওতায় এনেছি। কেউ আইন বহির্ভূত কাজ করলে অবশ্যই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২৩
পি-এম/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।